বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে যত দিন এগোচ্ছে ততই বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির ওপর ভর করে একের পর এক অসাধ্য সাধন করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা (Scientists)। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার আরও এক বিষ্ময়কর তথ্য সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, এবার মহাকাশে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সৌরশক্তি আহরণ করে সেটিকে “মাইক্রোওয়েভ বিমের” মাধ্যমে পৃথিবীতে সরবরাহের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। হ্যাঁ, শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এবার ঠিক এইরকমই কর্মকান্ড শুরু হতে চলেছে।
এমনকি, আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। এমতাবস্থায়, সফলভাবে এই কাজ শেষ হলে তা পৃথিবীতে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির অ্যারোস্পেস প্রস্তুতকারী সংস্থা Airbus এবং স্যাটেলাইট প্রস্তুতকারী সংস্থা SSTL, যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস এনার্জি ইনিশিয়েটিভের এই উদ্যোগে যৌথভাবে অংশগ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন স্পেস এনার্জি ইনিশিয়েটিভের কো-চেয়ারম্যান মার্টিন সোলটাও।
মূলত, ওই সংস্থা CASSIOPeiA (for Constant Aperture, Solid-State, Integrated, Orbital Phased Array) নামের একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। যার অধীনে মহাকাশে “সোলার ফার্ম” স্যাটেলাইটের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে চায় সংস্থাটি। এর ফলে মহাকাশ থেকেই সৌরশক্তি আহরণ করবে স্যাটেলাইটগুলি। যা সরাসরি পৃথিবীতে সরবরাহ করা হবে।
এই প্রসঙ্গে প্রযুক্তিবিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ফ্রেজার-ন্যাশ এই প্রকল্পের কার্যক্ষমতা যাচাই করে সবুজ সংকেত দেওয়ার পর চলতি বছরের শুরুতেই মহাকাশের সৌরশক্তি প্রকল্পের জন্য ৩০ লক্ষ পাউন্ড অনুদানের ঘোষণা করেছে ব্রিটিশ সরকার। জানা গিয়েছে, এই স্যাটেলাইটের জন্য কয়েক হাজার ছোট ছোট মডিউল বানানো হবে পৃথিবীতে। যদিও, এই মডিউলগুলিকে মহাকাশে একে অন্যের সুঙ্গে জুড়ে দেওয়ার কাজটি করবে স্বয়ংক্রিয় রোবট। শুধু তাই নয়, স্যাটেলাইট মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজও করবে ওই রোবট।
এদিকে, “মাইক্রোওয়েভ বিম” নিয়ে পৃথিবীতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা জানিয়েছেন, মানুষ ও বন্যপ্রাণী উভয়ের জন্যই এটি নিরাপদ। এই প্রসঙ্গে মার্টিন সোলটাও বিবিসিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে, “মাইক্রোওয়েভ বিম হল অনেকটা ওয়াই-ফাই সিগনালের মত। পাশাপাশি, এর তীব্রতাও কম। দুপুরবেলা সূর্য মাঝ আকাশে যতটা তীব্র থাকে তার এক চতুর্থাংশ এটি।”
পাশাপাশি, তিনি আরও জানিয়েছেন, “এই প্রকল্প সঠিকভাবে এগোলে এটি ২০৫০ সালের মধ্যে পুরো বিশ্বের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে পারবে। কক্ষপথে সৌরশক্তি নির্ভর স্যাটেলাইটের জন্য যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। পাশাপাশি, সূর্যের শক্তি সরবরাহের ক্ষমতাও বিশাল। এমতাবস্থায়, ২০৫০ সাল নাগাদ পুরো মানবসভ্যতার যে পরিমান বিদ্যুৎ শক্তি প্রয়োজন হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে বিষুবরেখা বরাবর মহাকাশের একটি সরু জায়গাতেই এক বছরে তার একশ গুণ সৌরশক্তি পাওয়া যাবে।”