বাংলা হান্ট ডেস্কঃ চন্দ্রযান-২ এর জন্য আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA) ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো (ISRO) থেকে কোটি কোটি টাকা কামাতে চাইছিল, কিন্তু ইসরো মাত্র ১২ লক্ষ টাকায় সেই কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলে। চন্দ্রযান – ২ কে চাঁদের পাঠানোর আগে ইসরো চাঁদে সফট ল্যান্ডিয়ের জন্য অনেকবার পরীক্ষা নিরীক্ষা চালায়। ইসরোর বিজ্ঞানীদের লুনার সারফেস নিয়ে গবেষণা করার জন্য চাঁদের মাটি অথবা চাঁদের মাটির মতো কিছু প্রয়োজন ছিল। এছাড়াও প্রয়োজন ছিল কম মধ্যাকর্ষণ এলাকা, চাঁদে পড়া চমকদার আলো এর মতো পরিস্থিতি।
আর এর একমাত্র উপায় ছিল, আমেরিকা থেকে সিমুলেটেড লুনার সয়েল (চাঁদের মতো মাটি) আনা। যার দাম প্রতি কেজি ১০,৭৫২ টাকা। আমাদের এইরকম ৭০ টনের মাটির দরকার ছিল। এর দাম অনেক, তাই বিজ্ঞানীরা ঠিক করেছিল যে, কিছুটা মাটি আমেরিকার থেকে কেনা হবে আর সেটির পরীক্ষা করে এরকম মাটি খোঁজা হবে। এরপর খবর পাওয়া যায় যে, তামিলনাড়ু অ্যান্থ্রোসাইট নামের পাথরে এইরকম মাটি পাওয়া যায়।
যেই মাটি কেনার জন্য আমাদের ৭২ কোটি টাকা লাগত, সেটা বিনামূল্যে পেয়ে গেলো ইসরো। পরে ওই মাটিকে ভালো মতো পরীক্ষা করে চাঁদের মতো মাটি বানানো হয়। এরপর সেই মাটি ইসরোর ব্যাঙ্গালুরুর কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। আর শেখা দুই মিটারের মোটা মাটির চাদর বসানো হয়। সেখানে চাঁদের মতই আলোর ব্যাবস্থা করা হয়। সেখানে ২০১৫ থেকে এক হাজার বার ল্যান্ডিং করানো হয়েছে। চাঁদের মধ্যাকর্ষণ শক্তি পৃথিবীর থেকে ছয় গুণ কম, আর সেটির জন্য হিলিয়াম গ্যাসের ব্যাবহার করা হয়েছে।
ইসরো ল্যান্ডার বিক্রম আর রোভার প্রজ্ঞানকে সফলতাপূর্বক চাঁদের মাটিতে নামানোর জন্য পাহাড়ের মতো মাটিকে আকার দিয়ে কৃত্রিম ভাবে লুনার সারফেস তৈরি করেছিল। ইসরো তামিলনাড়ু থেকে পাওয়া ওই মাটির ব্যাবহার অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চাঁদের মাটির মতো বানিয়েছিল। আর সেই মাটি তৈরি করতে আনুমানিক ১২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল। ইসরোর এর অসাধারণ কাজের ফলে ভারত থেকে কোটি কোটি টাকা কামাই করার নাসার স্বপ্ন বিফলে গেলো।