বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে দেশের সবথেকে আলোচিত ট্রেন হল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস (Vande Bharat Express)। শুধু তাই নয়, প্রায় প্রতিদিনই খবরের শিরোনামে উঠে আসে এই ট্রেনের প্রসঙ্গ। তবে, এবার দেখতে দেখতে চার বছর পূর্ণ করে ফেলল এই ট্রেন। মূলত, ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি চালু হয়েছিল বন্দে ভারত। ইতিমধ্যেই এই প্রসঙ্গে “মেক ইন ইন্ডিয়া” বন্দে ভারতের অত্যাধুনিক বৈশিষ্ট্যগুলি উপস্থাপিত করে একটি ভিডিও শেয়ার করেছে ভারতীয় রেল (Indian Railways)।
ট্রেন ১৮: জানিয়ে রাখি যে, বন্দে ভারতের প্রথম প্রোটোটাইপ রেক যে বছর তৈরি হয়েছিল তার ভিত্তিতে এটিকে “ট্রেন ১৮”-ও বলা হয় থাকে। পাশাপাশি, প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই ট্রেনটি নয়াদিল্লি-বারাণসী রুটে চলাচল করে।
বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের রুট: বর্তমানে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ভারতীয় রেলের ১০ টি রুটে চলাচল করে। সেগুলি হল: দিল্লি-কাটরা, দিল্লি-বারাণসী, গান্ধীনগর-মুম্বাই, আম্ব-আন্দাউরা-দিল্লি, মহীশূর-চেন্নাই, নাগপুর-বিলাসপুর, হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি, সেকেন্দ্রাবাদ-বিশাখাপত্তনম, মুম্বাই-সাইনগর শিরডি ও মুম্বাই-সোলাপুর।
এই ট্রেনের গতি: বন্দে ভারত এক্সপ্রেস হল একটি সেমি-হাইস্পিড ট্রেন। যেটি ১৬০ কিলোমিটার বেগে চলতে সক্ষম। পাশাপাশি, এই ট্রেন মাত্র ৫২ সেকেন্ডে ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিবেগ তুলতে পারে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, এই ট্রেনে সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কার পরিষেবা উপলব্ধ থাকে। পাশাপাশি, প্রযুক্তিগত দিক এবং যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের দিক থেকে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস শতাব্দী এক্সপ্রেসের থেকেও অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে।
সেলফ প্রোপেল্ড ট্রেন সেট: নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস হল একটি সেলফ প্রোপেল্ড ট্রেন সেট। এই ট্রেনের উভয়প্রান্তে বুলেট ট্রেনের মত শঙ্কু আকৃতির ড্রাইভার কেবিন থাকে। উল্লেখ্য যে, শক্তি সাশ্রয়ী বন্দে ভারত এক্সপ্রেস রিজেনারেটিভ ব্রেকিংয়ের ব্যবহার করে।
৭৫ টি বন্দে ভারত: মূলত, ২০২৩ সালের আগস্টের মধ্যে ৭৫ টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করার লক্ষ্য নিয়েছে ভারতীয় রেল। এই ট্রেনগুলি বর্তমানে চেন্নাইয়ের ICF-এ তৈরি করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন যে, খুব শীঘ্রই রেলের রায়বেরিলি, লাতুর এবং সোনিপত কোচ কারখানায় বন্দে ভারত ট্রেন তৈরি করা হবে।
বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা: এই সেমি হাইস্পিড ট্রেনে যাত্রীরা রীতিমতো বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা পান। এমনকি, ট্রেনে চেপেই বিমানসফরের উপলব্ধিও পান তাঁরা। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের এক্সিকিউটিভ চেয়ার কারে ঘূর্ণায়মান আসন রয়েছে। এছাড়াও, এক্সিকিউটিভ চেয়ার কার এবং সাধারণ চেয়ার কারের সিটে রয়েছে “রিক্লাইনিং ফ্যাসিলিটি”।
রয়েছে দুর্দান্ত ফিচার্স: এর পাশাপাশি এই ট্রেনে রয়েছে বিমানের মত পার্সোনালাইজড রিডিং লাইট, ডিফিউজড LED লাইটিং, অটোমেটিক ইন্টারকানেক্টিং ডোরস এবং ইন্টেলিজেন্ট এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমের মত সুবিধা। এছাড়াও, ট্রেনগুলিতে রয়েছে ৩২ ইঞ্চির প্যাসেঞ্জার ইনফোটেনমেন্ট স্ক্রিন, টাচ-ফ্রি ফিটিংস সহ বায়ো-ভ্যাকুয়াম টয়লেট, প্রতিটি সিটের সাথে চার্জিং পয়েন্ট, অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং মিনি প্যান্ট্রির মত সুবিধা। উল্লেখ্য যে, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসেই রেলের তরফে প্রথম দেওয়া হয়েছে “কবচ” (Kavach) সুরক্ষা। যেটি হল অ্যান্টি-ট্রেন কলিশন সিস্টেম।
বন্দে ভারতের স্লিপার সংস্করণ আসছে শীঘ্রই: উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে বন্দে ভারত ট্রেনের ২০০ টি স্লিপার সংস্করণ তৈরির জন্য টেন্ডার ডাকবে রেল। মূলত, এই ট্রেনগুলি রাজধানী এক্সপ্রেসের আপগ্রেড ভার্সান হিসেবে বিবেচিত হবে।