বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিয়ের এক মাসও হয়নি। এরই মধ্যে ছেলে হারা রিঙ্কু মজুমদার। সদ্য বিয়ে করেছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) ও রিঙ্কু মজুমদার (Rinku Majumdar)। মঙ্গলবার রিঙ্কুর আগের পক্ষের ছেলের রহস্যমৃত্যু। নিউটাউনে রিঙ্কুর শাপুরজি আবাসন থেকে উদ্ধার হয় একমাত্র ছেলে সৃঞ্জয় মজুমদারের ওরফে প্রীতমের নিথর দেহ। গোটা পরিবারে এখন বিষাদের ছায়া।
রিঙ্কু পুত্রের মৃত্যুতে রহস্য | Rinku Majumdar
সল্টলেকের একটি তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার কর্মী ছিলেন সৃঞ্জয়। বয়স ছাব্বিশের মতো। তরুণের অকাল মৃত্যুতে জোর চাপানউতোর নাগরিক মহল থেকে রাজনৈতিক মহলে। গতকাল রিঙ্কু জানান, এক বছর আগে নিউরোর সমস্যা ছিল সৃঞ্জয়ের। ওষুধও চলছিল। তবে সেই অসুখেই কী মৃত্যু ঘনিয়ে এল? রিঙ্কু-পুত্রের মৃত্যু নিয়ে ক্রমশ ঘনাচ্ছে রহস্য। এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরক পোস্ট।
বুধবার সোশাল মিডিয়ায় বিস্ফোরক দাবি করলেন রিঙ্কু মজুমদারের এক বান্ধবী। গতকাল দিনভর তিনি রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গেই ছিলেন। ফেসবুক পোস্টে ‘আমি ঝুমা’ বলে মহিলার দাবি, মৃত সৃঞ্জয়ের প্রেমিকা নাকি তাঁর উপর রীতিমতো অত্যাচার চালাত। টাকা নিত জোর করে। সেই পোস্টটি শেয়ার করেছেন তৃণমূলের কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
‘আমি ঝুমা’র পোস্টে লেখা, ‘মহিলার বাড়ী নেতাজিনগর, গাছতলা
, নিউটাউন আই টি সেক্টরে চাকরী করে, এই টুকু রাস্তা নিজের টাকা ভাড়া দিয়ে ফেরেনি।
ঢুকে গিয়েছিল সৃঞ্জয় এর ফ্ল্যাটে। যদি সৃঞ্জয় বলতো বাড়ী যেতে, তাহলে মেয়েটিকে 300 থেকে 400 টাকা দিতে হতো, ক্যাব ভাড়া ।। সবসময় এরকম ভাবেই টাকা নিত। উল্টে রিংকু কে মেসেজ করে জানাতো তার ছেলে নাকি ওর থেকে টাকা ধার নিয়েছে। যা বলতো মহিলা, সব টাকা রিংকু ওই মহিলা কে দিয়ে দিত।
রিংকু মহিলা কে যখন ই বিয়ের কথা বলত, সে না বলে দিত, বলতো 2 বছর পর ভাববো। সে রিংকুর ছেলেকে নানা ভাবে অত্যাচার করত, সে কথা জানায় সৃঞ্জয় দিলীপ ঘোষ ও রিংকু কে কিছুদিন আগেই।
আরও পড়ুন: নোটবন্দি থেকে নির্বাচনী বন্ড! একাধিক মামলায় গুরুত্বপূর্ণ রায়! দেশের নতুন CJI-কে চেনেন?
রিংকু তারপর ওনাকে ফ্ল্যাটে ঢুকতে বারণ করে। তারপর ঐ মহিলা কোন উদ্দেশ্যে কাল ফ্ল্যাটে জোর করে ঢোকে?
গোলাপী জামা পরা মহিলা ba diker’।
সেই পোস্ট শেয়ার করে কুণালবাবু লিখেছেন, ‘পুত্রশোকে কাতর রিঙ্কু মজুমদারকে আন্তরিক সমবেদনা জানাই। দিলীপ ঘোষকেও জানাই সমবেদনা। রাজনৈতিক মতপার্থক্য আলাদা। এটা এক পরিচিত হিসেবে মানবিক কর্তব্য। সৃঞ্জয়ের মৃত্যু কীভাবে, নানা সূত্রে খবর আসছে। তাতে আর যাই হোক দিলীপবাবু বা রিঙ্কুদেবীর কিছু করার ছিল না। কিন্তু সোশাল মিডিয়ায় কিছু জানোয়ার যেভাবে এনিয়ে পুত্রহারা রিঙ্কুকে আক্রমণ করল, তাতে স্পষ্ট, হাতে আধুনিক ফোন থাকলেই সমাজের সবাই সভ্য হয় না।’
ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/live/d-iyaf2OqE4?si=uQL68plRTWSevaJs
কুণাল আরও লেখেন, ‘আমি আমার এই পোস্টের সঙ্গে ‘আমি ঝুমা’ প্রোফাইলের স্ক্রিনশট দিলাম। আমি সরাসরি এঁকে চিনি না। কিন্তু পোস্ট দেখে বুঝি ইনি দিলীপবাবু-রিঙ্কুর শুভানুধ্যায়ী, বিয়ে কিংবা গতকালের শ্মশান, সর্বত্র সঙ্গে থাকেন। তাঁর পোস্টে কিছু ইঙ্গিতবাহী ক্ষোভ আছে। সেই গুরুত্ব থেকে আমি এটি দিলাম।’
এদিকে পুত্র শোকে কাতর দিলীপ ঘোষ গতকাল বলেছেন, “ড্রাগের সমস্যা ওর আগে থেকেই ছিল। ওর কাউন্সেলিং চলছিল। ওর অফিসের ডাক্তার দেখত।” এদিন মর্নিং ওয়াকে এসে দিলীপ বলেন, ‘আজকের যুবসমাজের মধ্যে নেশার যে কি প্রভাব, তার এটা একটা নমুনা। ঠিক কি হয়েছিল বলার আগেই তো ছেলেটা শেষ হয়ে গেল। আমাদের সবার কাছে এটা একটা বড় শিক্ষা।’
শতর্ক করে দিলীপ বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েরা কোথায় যাচ্ছে কি করছে? তাকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করে দিলেই দায়িত্ব শেষ হয়না। তারপরেও এতবড় রিস্ক থেকে যায়। এটাই চিন্তার বিষয়।”