বাংলাহান্ট ডেস্ক : সোনাগাছি (Sonagachi), উত্তর কলকাতার এই এলাকাটির নাম শুনলে অনেকেই জিভ কাটেন। তবে এশিয়ার বৃহত্তম যৌনপল্লী সোনাগাছি নিয়ে মানুষের মধ্যে কৌতূহল কম নেই। বিভিন্ন সংবাদপত্র, ব্লগের প্রতিবেদনের বিষয় হিসাবে বারবার উঠে এসেছে সোনাগাছির নাম। এই সোনাগাছির অন্দরে কান পাতলেও শোনা যায় অদ্ভুত সব গল্প।
সোনাগাছির (Sonagachi) ইতিকথা
মূলত ব্রিটিশ আমলেই বৃহত্তর রূপ পেয়েছিল এই যৌনপল্লী (Red Light Area)। স্বাধীন ভারতেও ক্রমশ ব্যাপ্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে এই রেড লাইট এলাকার। আমাদের দেশে যৌন পেশা আইনত নিষিদ্ধ হলেও সোনাগাছি নিয়ে কিন্তু প্রশাসন খুব একটা টানাহেঁচড়া করে না। সোনাগাছির যৌন ব্যবসা যেন শহরের অন্যতম বড় ‘ওপেন সিক্রেট।’
তবে সোনাগাছিতে (Sonagachi) যৌনকর্মীদের গল্প অনেক সময় আমাদের স্তম্ভিত করে দেয়। মীরা দেবীর যখন মাত্র ১২ বছর বয়স, যখন ৩৭ বছর বয়সী এক পুরুষের সাথে তাকে জোরপূর্বক বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। তারপর স্বামীর হাতে নির্যাতিত মীরা দুই সন্তানকে নিয়ে চলে আসেন বাপের বাড়ি। কিন্তু বাপের বাড়িতে আর্থিক অনটন তাকে বাধ্য করে এই পেশায় আসতে।
আরোও পড়ুন : নভেম্বরেও ‘ঠাণ্ডা’ নেই! আজও বাংলার ৬ জেলায় বৃষ্টি! শীত নিয়ে বড় আপডেট হাওয়া অফিসের
৩৯ বছরের মীরা দাস (নাম পরিবর্তিত) দীর্ঘদিন ধরে সোনাগাছিতে (Sonagachi) দেহ ব্যবসার সাথে যুক্ত। প্রথম দিকে সমস্যা হলেও, এখন তিনি নিজেকে যৌনকর্মী (Prostitute) হিসাবে আখ্যায়িত করতে গর্ববোধ করেন। মীরা দেবী বলেন, ‘আমি একজন যৌনকর্মী। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার এবং বৈমানিকদের মতো আমার পেশা হল যৌন তৃপ্তি দেওয়া।’
মীরা বলেন, ‘এখানে আসার ফলে আমার জীবন নিরাপদ ও নিশ্চিত হয়। আমার দুই সন্তানই এখন তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করেছে এবং তারা কাজ করছে। আমি যদি বাড়িতে থাকতাম তাহলে কি তাদের পড়ালেখার খরচ যোগাতে পারতাম? সমাজের উচিত আগে তাদের নিজেদের দিকে তাকানো, আমাদের দিকে আঙ্গুল তোলার আগে। কেউ কি আমাদের চাকরি দিয়েছিল?’
আরোও পড়ুন : একটানা ১ মাস ছুটি! স্কুল পড়ুয়াদের জন্য বড় খবর! শিক্ষা দফতরের নয়া সিদ্ধান্তে ধন্য ধন্য করছে সকলে
তবে পেশার পাশাপাশি অনেকে নেশার টানেও আসেন এখানে। এক যৌনকর্মীর কথায়, ‘বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে যৌনতা আমার কাছে অনেক উত্তেজনাকর। ওরা আমাকে ভাসমান যৌনকর্মী বলে কারণ আমি কাজ শেষে বাড়ি চলে যাই, সোনাগাছিতে থাকি না। আমার একমাত্র ভয় হল আমার সন্তান যদি কখনও আমার কাজ সম্পর্কে জেনে যায়। আমার এক বন্ধুর সন্তান তার মায়ের এই কাজ সম্পর্কে জেনে গিয়েছিল। আর এটাই আমার অনেক ভয়ের কারণে। আমি দুটো জীবন যাপন করি এবং এটা আমাকে করতেই হবে।’