বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি থেকে শুরু করে গরু এবং কয়লা পাচার মামলায় তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee), অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal), মানিক ভট্টাচার্যর (Manik Bhattacharya) পাশাপাশি অন্যান্য একাধিক তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতা মন্ত্রীরা হেফাজতে। এই পরিস্থিতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দলের সমস্ত পদ থেকে বহিষ্কার করলেও অনুব্রত কিংবা মানিক ইস্যুতে কোনরকম কড়া পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি তৃণমূল কংগ্রেসকে। এক্ষেত্রে সকলের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠল এহেন ভেদাভেদ কেন, সে বিষয় জোর জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে আর এবার উক্ত প্রসঙ্গে অবশেষে মুখ খুললেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় (Sougata Roy)।
সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক দুর্নীতি ইস্যুতে কোণঠাসা তৃণমূল কংগ্রেস। একদিকে যখন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা আন্দোলন করে চলেছে, আবার অপরদিকে সিবিআই এবং ইডি তদন্ত মাঝে গ্রেফতার হয়েছেন একাধিক তৃণমূল নেতা মন্ত্রীরা। এই পরিস্থিতিতে দলের ভেতর গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব থেকে শুরু করে একের পর এক নেতা নেত্রীরা বেফাঁস মন্তব্য করে চলেছেন। এর মাঝেই পার্থ-অনুব্রত এবং মানিক ইস্যুতে সৌগত রায়ের বক্তব্য ইতিমধ্যেই আলোড়নের সৃষ্টি করেছে।
সম্প্রতি নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে পার্থের ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি নগদ অর্থ এবং একাধিক সোনা গয়না উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। পরবর্তীতে পার্থ-অর্পিতার নামে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মেলে তদন্তকারী সংস্থার হাতে। তবে শুধু পার্থই নন, এক্ষেত্রে গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল এবং সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন মানিক ভট্টাচার্য।
উল্লেখযোগ্য বিষয়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতার হওয়ার পর দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির বৈঠকে তৃণমূলের সকল পদ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তদন্ত যতদিন না শেষ হচ্ছে, ততদিন দল থেকে সাসপেন্ড পার্থ চট্টোপাধ্যায়। উনি যদি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে তাঁকে দলে নেওয়ার কথা ভাবা হতে পারে।”
যদিও পরবর্তীতে অনুব্রত এবং মানিকের গ্রেফতার হওয়ার পর দলের সেই কড়া পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। এমনকি, অনুব্রত গ্রেফতারি মাঝে তৃণমূল নেতার প্রশংসা করতেও শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। ফলে একই যাত্রায় পৃথক ফল কেন, সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে একাধিক মহল থেকে।
এদিন সেই প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে সৌগতবাবু বলেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার করা হয়। কিন্তু অনুব্রত কিংবা মানিকের ক্ষেত্রে তা হয়নি। পার্থ সহযোগীর কাছ থেকে যে টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, তা গোটা বাংলা দেখেছে। এরপর দল কড়া পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রে দেখতে গেলে সিবিআই এবং ইডি কয়েকটি নথির কথা বললেও তা কখনোই প্রমাণ হয়নি।”