বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আবারও একবার প্রকাশ্যে তৃণমূল বনাম তৃণমূল দ্বন্দ্ব! একেই একের পর এক দুর্নীতি ইস্যুতে কোণঠাসা পরিস্থিতি আর তার ওপর গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব ক্রমাগত অসস্তি বাড়িয়ে চলেছে শাসকদলের। এই পরিস্থিতিতে এবার সম্মুখ সমরে উপস্থিত তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) সাংসদ সৌগত রায় (Sougata Roy) এবং ব্যারাকপুরের (Barrackpore) সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh)। সম্প্রতি দুজনেই একে অপরের বিরুদ্ধে যেভাবে বাকযুদ্ধে নেমেছেন, তাতে আশঙ্কায় তৃণমূল শিবির।
একদিকে দমদম, তো আবার অপরদিকে ব্যারাকপুর! বাংলার দুই প্রান্তের সাংসদদের পরস্পর বিরোধী বক্তব্যে উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি। যদিও এই প্রসঙ্গে এখনো পর্যন্ত বিশেষ কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা যায়নি তৃণমূল নেতৃত্বকে।
সম্প্রতি, ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, “২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের মাঝে ক্ষোভের আগুন জ্বলে, সেই কারণেই আমি জয়লাভ করি।” তাঁর সেই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা তথা দমদমের সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর দাবি, “অর্জুন সিংয়ের মধ্যে কোনরকম ক্যারিশমা নেই। গতবার নরেন্দ্র মোদী সমর্থন করেছিলেন বলে জয় লাভ করেন আর এবার জিতলে তাও তৃণমূলের সমর্থনে জিতবেন।”
পাশাপাশি তিনি বলেন, “২০১৯-এর লোকসভা ভোটে হিন্দিভাষী মানুষ সমর্থন করেছিল অর্জুন সিংকে। ওর নিজের মধ্যে কোনরকম ক্যারিশমা নেই।” প্রসঙ্গত, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে তৃণমূল কংগ্রেসে থাকলেও পরবর্তীতে লোকসভা ভোটের টিকিট না মেলায় ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগদান করেন অর্জুন সিং। যদিও সেই মোহ কাটতে বেশিদিন সময় নেয় নি। সম্প্রতি বিজেপি ছেড়ে পুনরায় একবার নিজের পুরনো দলে প্রত্যাবর্তন করেন ব্যারাকপুরের সাংসদ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যারাকপুর এলাকায় অর্জুনের প্রভাব যথেষ্ট। এক্ষেত্রে ২০০৯ সালে বাম আমলে তাদের নেতাকে পরাজিত করে দীনেশ ত্রিবেদীকে জয়লাভ করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন অর্জুন। পরবর্তীতে ২০১৪ লোকসভা ভোটেও একই ফল চোখে পড়ে। পরবর্তীতে অর্থাৎ গত লোকসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে লড়েও জিততে অসুবিধা হয়নি অর্জুনের। ফলে এক্ষেত্রে ব্যারাকপুর এলাকায় লোকসভা নির্বাচনে জয়লাভের জন্য অর্জুনের ব্যক্তিগত ক্যারিশমা যে যথেষ্ট, তা মনে করেন অনেকেই।
এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সৌগতবাবুর মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিতে ছাড়েননি অর্জুন সিং। একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি বলেন, “কেউ কেউ অনেক রকম কথা বলছে। এই জায়গায় (ব্যারাকপুর) রাজনীতি করা মানুষদের জনগণ পছন্দ করেনি। সেই কারণেই গত লোকসভা ভোটে আমাকে জিতিয়েছিল এলাকাবাসীরা।” ফলে একদিকে যখন দুর্নীতি ইস্যুতে কোণঠাসা তৃণমূল সরকার, সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে সৌগত বনাম অর্জুন দ্বন্দ্ব দলকে অস্বস্তিতে ফেলবে বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।