বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কিছুদিন আগেই পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি তুলেছিলেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বারলা। তার মতে, উত্তরবঙ্গ চিরকাল বঞ্চিতই থেকে এসেছে দক্ষিণবঙ্গের কাছে। এমনকি নেপাল এবং আসাম সীমান্তজুড়ে জাতীয় সড়ক বরাবর এলাকা দখল করে নিচ্ছে বাংলাদেশী রোহিঙ্গারা। তাদের ভোটার কার্ড হচ্ছে তারা রেশন পাচ্ছেন অথচ বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের মানুষ। সেই সূত্র ধরেই করোনা কাল মিটলে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি জানাবেন তিনি। ইতিমধ্যেই তার এই বয়ানের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেছে রাজ্য বিজেপি। সায়ন্তন বসু এও বলেছেন, আমরা কোথাও একথা বলিনি যে ভোটে জিতলে বাংলা ভাগ হবে। একদিকে যখন শাসক দল তৃণমূলের কটাক্ষ এবং নিজের দলের কাছে দূরত্বের শিকার হচ্ছেন জন বারলা, তখনই এক প্রকার তাকে সমর্থন জানিয়ে পৃথক রাঢ়বঙ্গের দাবিতে সরব হলেন বিজেপির বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।
এবার তার এই মন্তব্য ঘিরেও যথেষ্ট অস্বস্তিতে পরল বিজেপি। এদিন বিজেপির এই বর্ষীয়ান সাংসদ স্পষ্ট ভাষায় জানান, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তাই পশ্চিমবঙ্গকে ভেঙে আলাদা বাংলা দেশ তৈরির চেষ্টা করছেন উনি। তাহলে আমরও রাঢ়বঙ্গকে নিয়ে আলাদা রাজ্য গঠনের দাবি জানাব।” সাথে সাথে তিনি এও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে একইভাবে বঞ্চিত হয়েছে উত্তরবঙ্গ এবং রাঢ়বঙ্গ। কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী ৫০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ২৩ জন রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছেন, অথচ বঞ্চিত থেকে গিয়েছে উত্তরবঙ্গ এবং রাঢ় বঙ্গীয় এলাকা। আর তাই বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, জঙ্গলমহল এবং রাঢ়বঙ্গ নিয়ে নতুন রাজ্যের দাবি জানালেন সৌমিত্র।
যদিও তার এই মন্তব্য ঘিরে এখনই বয়ান দিতে রাজি হননি কোন বিজেপি নেতা। গত কয়েকদিন ধরেই বিজেপির বঙ্গভঙ্গের নীতির বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, কোনোভাবেই তিনি বঙ্গভঙ্গ হতে দেবেন না। এমতাবস্থায় বিজেপি নেতার এই মন্তব্য করেছে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজ্য বিজেপি তা বলাই বাহুল্য। তৃণমূল নেতা তথা সাংসদ তাপস রায় এর তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “বাংলা সম্পর্কে তারা মনে মনে যে ক্ষোভ পুষে রেখেছেন, এটা তারই বহিঃপ্রকাশ।” সাথে সাথে তিনি এও জানান বিজেপি বাংলার ইতিহাস-ভূগোল এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে কিছুই জানেনা।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতেও, বিজেপি নেতাদের এই ধরনের বয়ান আগামী দিনে বাংলায় তাদের শক্তিকে আরও দুর্বল করে দিতে পারে। এমতাবস্থায় রাজ্য বিজেপি কি ভূমিকা নেয় সেদিকেই তাকিয়ে থাকবে সকলে।
ফিরহাদ হাকিমের কুমন্তব্যে তোলপাড় রাজ্য! কুণাল বললেন ‘ওই বিপ অংশ…’