বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে ভারত (India) সরকার যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নের নানারকম উদ্যোগ নিচ্ছে। সে রেলপথ হোক কিংবা সড়কপথ যেকোনো পথেই পরিবর্তন আনতে কোটি কোটি টাকা খরচ করছেন। বিশেষ করে সড়ক ব্যবসায় যুগান্তকারী পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। টোল প্লাজা থেকে শুরু করে, উন্নত মানের ব্রিজ, জাতীয় সড়ক বিভিন্ন রকমের সুবিধা পাচ্ছেন গোটা ভারতবাসী। আর এই আবহেই শোনা গেল বিরাট খবর। এবার ভারতে তৈরি হতে চলেছে সাউন্ডপ্রুফ এক্সপ্রেসওয়ে। এই প্রথমবার ভারতে এমন কোনো সড়ক ব্যবস্থা তৈরি হবে। এই রাস্তার বিশেষত্ব জানলে হবেন অবাক।
ভারতে (India) তৈরি হবে সাউন্ডপ্রুফ এক্সপ্রেসওয়ে:
প্রায় সময়, যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত করার তাগিদে সরকার যাত্রীদের জন্য বিভিন্ন রকমের সুবিধা নিয়ে আসছেন। আর এবার যাত্রীদের সুবিধার্থে অভিনব উদ্যোগ। আর এই সুবিধা পেতে চলেছে দিল্লি-দেরাদুন থেকে যাতায়াতকারী যাত্রীরা। আসলে বিষয়টি হচ্ছে, জনসাধারণের জন্য দিল্লি-দেরাদুন এক্সপ্রেসওয়ে এই বছর খুলে দেওয়া হবে। ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করবে গাড়ি। আর এই রাস্তাটি ভারতের (India) প্রথম সাউন্ডপ্রুফ এক্সপ্রেসওয়ে হতে চলেছে। এই এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলা যানবাহনের আলো কিংবা শব্দ কোন কিছুই পৌঁছাতে পারবেনা বন পর্যন্ত এমনটাই জানা গিয়েছে ।
এক্সপ্রেসওয়ের কাজ প্রায় শেষের পথে: জানা গিয়েছে, ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার অধীনে নির্মিত দিল্লি-দেরাদুন এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের পথে। আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই ভারতের (India) এই এক্সপ্রেসওয়ের কাজ সম্পন্ন হবে। এই আবহেই জানা গেছে, দিল্লির অক্ষরধাম থেকে দেরাদুন পর্যন্ত নির্মিত নতুন এক্সপ্রেসওয়ে সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হবে, তাও আবার ২০২৫-এর জানুয়ারি মাসের মধ্যে।
আরও পড়ুনঃ “বাংলার মৎস্যজীবীদের নির্যাতন করেছে বাংলাদেশ”, মমতার অভিযোগে ফুঁসে উঠল ঢাকা, স্পষ্ট জানাল….
সাউন্ডপ্রুফ এক্সপ্রেসওয়ের বিশেষত্ব কি: ভারতে (India) তৈরি এই এক্সপ্রেসওয়ের রাস্তা এতটাই মসৃণ যে, এখানে ঘন্টায় প্রায় ১২০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালানো যাবে। এছাড়াও, মাত্র আড়াই ঘণ্টার মধ্যে দিল্লি থেকে দেরাদুনে পৌঁছানো যাবে। এই এক্সপ্রেসওয়ের সবচেয়ে বড় বিশেষত্বটি হচ্ছে, এখানে একটি ১২ কিলোমিটার এলিভেটেড ওয়াইল্ডলাইফ করিডোর তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে রাজাজি জাতীয় উদ্যানের উপর দিয়ে যাওয়া যাবে। অর্থাৎ নিজের গন্তব্যে পৌঁছানোর পাশাপাশি জঙ্গল ঘোরাও হয়ে যাবে। এছাড়াও এই রাস্তাকে সাউন্ডপ্রুফ হিসেবেই নির্মাণ করা হয়েছে। আর এই সাউন্ডপ্রুফ সড়ক তৈরির মূল লক্ষ্যই হচ্ছে প্রাণীরা যাতে যানবাহনের শব্দে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। মূলত, ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার বিজ্ঞানীরা এই অভিনব চিন্তা-ভাবনাকে বাস্তবায়িত করেছেন।
যাত্রীরা এই এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে কি কি সুবিধা পাবে: যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেও এই সড়কপথ তৈরি করা হয়েছে। দুর্ঘটনা রোধ করার জন্য দুই পাশে বড় বড় রেলিং বসিয়ে নিরাপত্তা রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, জরুরি সময়ের জন্য ট্রমা সেন্টারের পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্স, দমকল এবং অন্যান্য জরুরি পরিষেবাগুলিও এক্সপ্রেসওয়ের খুব কাছেই রয়েছে। এখন থেকে সাউন্ডপ্রুফ এক্সপ্রেসওয়ের উপরে যত বড় যান চলাচল করুক না কেন, তার আওয়াজ নীচের জঙ্গল পর্যন্ত পৌঁছাবে না। এমনকি কোন আলো রাস্তা ভেদ করে বনের মধ্যেও প্রবেশ করবে না। অর্থাৎ সবমিলিয়ে ভারতের (India) এই সড়ক পথ এক নতুন সুবিধা আনতে চলেছে।