বাবার প্রাণ বাঁচানোর জন্য অটো ড্রাইভার কাজ বেছে নিয়েছিলেন এই মহিলা, এখন হচ্ছেন পুরস্কৃত

বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাবা অসুস্থ, এদিকে সাতজনের সংসারে যথেষ্ট পরিমাণে টাকার যোগান নেই। তাই মেয়েই হাল ধরল।

অটো চালিয়ে বাবার চিকিৎসার টাকা তো বটেই, গোটা সংসারটারই অর্থের যোগান দেয় সে। এটা কোনও ছবির গল্প নয়, এ কাহিনি বাস্তবের।

অঙ্কিতা শাহ, গুজরাটের পালিতানার নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে অঙ্কিতা। সাতজনের সংসারে সে বড় মেয়ে, একাই রোজগেরে। বাবা ক্ষুদ্রান্ত্রের ক্যান্সারে আক্রান্ত। তাই সে অটো চালিয়ে রোজগারের দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছে।

কিন্তু এই সবকিছু এতটা সহজ ছিল না। অঙ্কিতা বিশেষ ভাবে সক্ষম। ছোট থেকেই তাঁর একটি পা পোলিও আক্রান্ত। অঙ্কিতার কথায়, “পালিতানায় একটি স্কুলে ক্লার্কের কাজ পেয়েছিলাম। ওরা বলেছিল তিন মাস কাজ করার পর আমায় বেতন দেওয়া হবে। কিন্তু দশ মাস টানা কাজ করেও একটা কানাকড়ি অবধি পাইনি।”শুধু তাই নয়। রোজগারের আশায় আহমেদাবাদ আসার পর কল সেন্টার, রিয়াল এস্টেট, শেয়ার মার্কেট সহ বহু জায়গায় কাজ করেছেন অঙ্কিতা। কিন্তু অনেক জায়গাতেই তাঁকে কম বেতন দেওয়া হত শুধুমাত্র তিনি বিশেষভাবে সক্ষম বলে। একই কারনে অনেক জায়গাতেই কাজও পাননি তিনি।
হাল প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন অঙ্কিতা।

Untitled design 77

এমন সময়ে ফের ভাগ‍্যের ফের। ২০১৯ এর জুনে ক‍্যান্সার ধরা পড়ে তাঁর বাবার। কল সেন্টারের বেতনে হাসপাতালের খরচ চালানো সম্ভব ছিল না। এরপরেও বেশ কিছু জায়গায় প্রত‍্যাখ‍্যাত হন অঙ্কিতা। ঠিক তখনই অটো চালানোর কথা মাথায় আসে তাঁর। পরিবারের অনিচ্ছা সত্ত্বেও অটো চালানো শিখে অটো কেনেন তিনি। তাঁকে সাহায‍্য করেন তাঁরই মতো বিশেষ ভাবে সক্ষম এক অটোচালক। অঙ্কিতা বলেন, “ছয় মাসের বেশি হয়ে গিয়েছে আমি অটো চালাচ্ছি। সকাল ১১:৩০ থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অটো চালাই। মাসে ২৫০০০ টাকা রোজগার হয় যা ডেস্কের কাজের প্রায় দ্বিগুন।”

কিন্তু এখনও পর্যন্ত সমাজের কটু মন্তব‍্য, বক্রোক্তি থেকে রেহাই পাননি অঙ্কিতা। এখনও বহু ব‍্যঙ্গ তামাশার মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে। তবে সেসবে কান না দিয়ে নিজের কাজেই মনোযোগ দেন বলে জানান অঙ্কিতা। তাঁর পাশাপাশি এখন তাঁর দুই ভাইও রোজগার শুরু করেছে ও বাবার চিকিৎসায় সাহায‍্যও করছে। কিন্তু এখনও অঙ্কিতা আশা করেন কোনও শুভানুধ‍্যায়ী তাঁর লড়াইয়ে তাঁকে সাহায‍্য করবেন।


Niranjana Nag

সম্পর্কিত খবর