বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সোমবার এসএসসির নিয়োগ দুর্নীতি মামলার (SSC Scam) ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। একজোটে বাতিল হয়েছে ২৫৭৫৩ চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগ। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court ) বিচারপতি বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন (Justice Debangshu Basak) বেঞ্চের এই রায়ের পরই শোরগোল বেঁধে যায় গোটা রাজ্যে।
SSC মামলার শুনানিতে দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, স্কুলে সার্ভিস কমিশন তদন্তে সহযোগিতা করে নি। এসএসসি-র বিরুদ্ধে অসহযোগিতার যে অভিযোগ তুলে হাইকোর্ট জানায়, ফাঁকা ওএমআর শিট জমা দিয়েও বহু পরীক্ষার্থী অনেক বেশি নম্বর পেয়েছেন। এই বিষয়ে তদন্তে এসএসসির বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলা হয়। কত জন বেআইনি ভাবে চাকরি পেয়েছেন তা এসএসসি-র অসহযোগিতার জন্যই চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি বলেও জানায় হাইকোর্ট।
আদালত জানায়, তদন্তে যা তথ্য সামনে এসেছে তাতে তাতে শুধু গ্রুপ-ডি পদেই ৪৮ শতাংশ ব্যক্তিকে অবৈধ ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। SSC-র নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, গ্ৰুপ সি, গ্ৰুপ ডি সবক্ষেত্রেই দুর্নীতি সামনে আসে। এই পরিস্থিতিতে আর কোনও রাস্তা না পেয়ে ২০১৬ সালের সব নিয়োগ বাতিল করে নতুন ভাবে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
ওদিকে ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। শীর্ষ আদালতে পৃথক ভাবে মামলা করেছে রাজ্যের শিক্ষা দফতর, মধ্যশিক্ষা পর্ষদও। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে এই নিয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠকও করেন এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমজার। সেখানেই হাইকোর্টের আনা অভিযোগ খণ্ডন করার চেষ্টা করেন এসএসসির চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছিল। এসএসসির চেয়ারম্যানের দাবি, ”১৩ ডিসেম্বর হলফনামা জমা দিয়েছিলাম। হলফনামায় আদালত সন্তুষ্ট হয়নি। এরপর ১৮ ডিসেম্বর ফের হলফনামা জমা দেওয়া হয়। ২০ ডিসেম্বর পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছিল।” প্রসঙ্গত, এর আগেও এসএসসির তরফে দাবি করা হয়েছিল, তারা যোগ্য এবং অযোগ্যদের তালিকা আদালতে জমা দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ৩ নম্বর বিয়ে করেই বিপদ? ‘মহিলারা রিঅ্যাক্ট করছে’, বলে MLA কাঞ্চনকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিলেন কল্যাণ
তিনি বলেন, ” ৫৩০০ জনের নাম দেওয়া হয়েছিল। যারা ‘অযোগ্য’ বা বিতর্কিত। এর মধ্যে অযোগ্যদের সংখ্যাটাই বেশি। আদালতকে সম্মান করেছি। কিন্তু অনেকে যে বলছে এসএসসি কোনও তথ্য দেয়নি, সেটা ঠিক নয়। তথ্য দেওয়া হয়েছে।” প্রায় ২৬০০০ চাকরি বাতিল নিয়ে প্রশ্ন তুলে চেয়ারম্যান আগেই বলেন, ‘‘পাঁচ হাজার জনের বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তার জন্য ২৬ হাজার জনের কেন চাকরি বাতিল হবে?’’ বুধবারই সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন (এসএলপি) দাখিল করেছে এসএসসি। সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে আদালতে গিয়েছে রাজ্য সরকারও।