ফিরল সবার চাকরি? সুপ্রিম কোর্টে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দীর্ঘ প্রতীক্ষা। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টে শুরু হল ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি (SSC Recruitment Scam)। এর আগে সময়ের অভাবে বারেবারে শুনানির দিন পরিবর্তন হয়েছে। এর আগের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, বৃহস্পতিবার মামলাটির শুনানি হবে। মামলাটি ১ নম্বর সিরিয়ালে রাখা হয়েছিল। সেই মতোই সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চে শুরু হয়েছে শুনানি।

গত শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এই মামলা নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, ”এক্ষেত্রে আমার দু’টো বিষয় বিবেচনা করব। অহেতুক বিষয়টি নিয়ে জটিলতা বৃদ্ধি করবেন না।” তিনি বলেন, প্রথমত, পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হবে নাকি শুধুমাত্র বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের বাছাই করে বাতিল করা হবে, মূলত এই দু’টি বিষয় আদালত বিবেচনা করে দেখবে।

এদিন শুনানিতে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, “নম্বর কারচুপি হয়েছে। লিখিত পরীক্ষায় প্রার্থীদের নম্বর বৃদ্ধি করা হয়েছে।” রাজ্যের আইনজীবীর কাছে বিচারপতির প্রশ্ন, যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের বাছাই করতে রাজ্যের সম্মতি রয়েছে কি? রাজ্যের আইনজীবী সমর্থন জানিয়ে বলেন, তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এই বিষয়ে আলাদা আলাদা তথ্য দিয়েছে।

এদিকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী আদালতে বলেন, নিয়োগ তালিকায় থাকা যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের বাছাই করা সম্ভব কি? কমিশনকে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, “হাই কোর্ট কেন বলল (যোগ্য-অযোগ্য) আলাদা করা সম্ভব নয়? আমাকে বোঝান।” গত দুবছর ধরে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। শিক্ষা দুর্নীতির মামলার তদন্তে নেমে বেশ কিছু ওএমআর শিট উদ্ধার করেছিল সিবিআই। তবে সেসবের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চাকরিচ্যুতদের আইনজীবী।

এই প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, “৬৫বি নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। এখানে আসল ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে। ৬৫বি করলে বোঝা সম্ভব হার্ড ডিস্ক থেকে কী ডাউনলোড করা হয়েছে। আর কী আপলোড করা হয়েছিল।’ এর সঙ্গে প্রমাণের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। ৬৫বি করে সার্ভারে তথ্য কারচুপি হয়েছে তা বোঝা সম্ভব নয় বলে জানান চিফ জাস্টিস।

উল্লেখ্য, চলতি বছর ১৮ এপ্রিল নিয়োগ দুর্নীতির জেরে এসএসসি ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের এই রায় নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায় গোটা রাজ্যে। উচ্চ আদালতের রায়ে এক ধাক্কায় চাকরি যায় প্রায় ২৬০০০ জনের।

SSC

আরও পড়ুন: হাইস্কুলের মতোই পুজোয় লম্বা ছুটি প্রাইমারিতে! বছর শেষের আগেই বড় ঘোষণা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের 

হাইকোর্টের রায়ের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার, এসএসসি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলা উঠলে আপাতত সকলেরই চাকরি বহাল রাখা হয়েছে। সকলকে রক্ষাকবচ দিয়েছে আদালত। তবে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, দুর্নীতি প্রমাণ হলে শিক্ষকদের (ssc recruitment scam) চাকরি তো যাবেই পাশাপাশি ফেরত দিতে হবে বেতনও। শেষপর্যন্ত কি হয় সেটাই দেখার।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর