বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দুর্নীতির কারণে ২০১৬ সালের এসএসসির (SSC Recruitment Scam) সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। যার জেরে একধাক্কায় চাকরি হারান ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক (School Teacher) ও শিক্ষাকর্মী। এরপর টানাপড়েন শেষে ‘অযোগ্য’ কিংবা ‘দাগি’ হিসেবে চিহ্নিত নন, এমন শিক্ষকদের ৩১ ডিসেম্বর অবধি স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেয় আদালত। সেই সঙ্গেই জানানো হয় তাঁরা বেতন পাবেন। এবার উত্তরপত্রে কারচুপির অভিযোগ ওঠা চাকরিহারাদের নিয়ে বড় নির্দেশ দিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
কী বলল শীর্ষ আদালত? (SSC Recruitment Scam)
গত এপ্রিল মাসে ২০১৬ সালের এসএসসির প্যানেল বাতিলের রায় দেওয়ার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, স্কুল সার্ভিস কমিশনকে ফের নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। ‘অযোগ্য’ বা ‘দাগি’ হিসেবে চিহ্নিতদের বেতন ফেরত করতে হবে বলেও জানায় আদালত। সেই সঙ্গেই বলা হয়, তাঁরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না।
এরপর নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ নয়া নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। তবে শুক্রবার তাঁদের আবেদন খারিজ করে দিল বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথন ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ। আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, গত ৩ এপ্রিল শীর্ষ আদালতের দেওয়া রায়ে কোনও হস্তক্ষেপ করা হবে না। যে সকল চাকরিহারাদের উত্তরপত্রে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা কমিশনের (School Service Commission) নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে পারবে না বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, তাঁরা বেতনও পাবেন না।
আরও পড়ুনঃ ‘যেখানে গুন্ডা বলার, সেখানে বলতে হবে’! চাকরিহারাদের ‘হুলিগান’ বলা নিয়ে সপাট জবাব কল্যাণের
শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হওয়া নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির চাকরিহারা শিক্ষকদের দাবি ছিল, তাঁরা ‘দাগি’দের লিস্টে পড়েন না। কারণ তাঁরা প্যানেল বহির্ভূতভাবে অথবা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পাননি। তাঁদের ওএমআর শিট তথা উত্তরপত্রে কিছু কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল। সেই কারণে ফের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার আবেদন জানান তাঁরা। সেই সঙ্গেই তাঁদের আর্জি ছিল, নয়া নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া অবধি তাঁদের যেন বেতন দেওয়া হয়।
এদিন সেই আর্জি খারিজ করে দেয় বিচারপতি বিশ্বনাথন ও বিচারপতি কুমারের বেঞ্চ। মামলাকারীদের উদ্দেশে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করে, ‘রায় ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর এখন যোগ্য কিংবা অযোগ্যর কথা কীভাবে বলছেন?’
মামলাকারীদের আইনজীবীরা এদিন দাবি করেন, শীর্ষ আদালত ‘দাগি’ হিসেবে যাদের চিহ্নিত করেছিল, তাঁদের মধ্যে মূলত তিন ধরণের চাকরি প্রাপক ছিলেন। প্রথমত, যারা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। দ্বিতীয়ত, যারা প্যানেল বহির্ভূতভাবে চাকরি পেয়েছেন এবং তৃতীয়ত, যারা মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু তাঁদের মক্কেলরা এই ধরণের চাকরিপ্রাপকদের তালিকায় পড়েন না। সেই জন্য তাঁদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাওয়া উচিত।
মামলাকারীদের আইনজীবীদের এই দাবি অবশ্য সুপ্রিম কোর্ট মানেনি। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, যে সকল চাকরি প্রাপকদের উত্তরপত্রে কারচুপির (SSC Recruitment Scam) অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা এসএসসির নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। সেই সঙ্গেই জানানো হয়েছে, এই চাকরিহারারা বেতনও পাবেন না।