বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসি ২৬,০০০ চাকরি বাতিল (SSC Recruitment Scam) নিয়ে বর্তমানে সরগরম বাংলা। একধাক্কায় চাকরি হারিয়েছিলেন ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। গত ৩ এপ্রিল ২০১৬ সালের এসএসসির সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করেছিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। যদিও এরপর মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আবেদন মেনে নেয় শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার নির্দেশ এসেছে, যে সকল শিক্ষকরা ‘অযোগ্য’ বা ‘দাগি’ নন, তাঁরা বিদ্যালয়ে যেতে পারবেন। নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এবার জানা যাচ্ছে, শিক্ষক (School Teacher) ও শিক্ষাকর্মীদের মাইনে নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে।
শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের মাইনে নিয়ে ধোঁয়াশা কেন?- (SSC Recruitment Scam)
জানা যাচ্ছে, প্রধান শিক্ষকরা সাধারণত বেতন পোর্টাল জেলা স্কুল পরিদর্শককে জমা করার পর মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে তা কোষাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেই হিসেবে আর মাত্র সপ্তাহখানেক সময় রয়েছে। তার মধ্যে যদি সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয়, তাহলে এই মাসের শেষে বিদ্যালয়ে মাইনে নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হবে বলে অনুমান করছেন প্রধান শিক্ষকদের একাংশ।
এদিকে এখনও অবধি কোন কোন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীকে বেতন দেওয়া হবে এবং কাদের নাম তালিকা থেকে বাদ যাবে সেই বিষয়ে শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে কোনও বিজ্ঞপ্তি বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়নি (SSC Recrutiment Scam)। ফলে এই নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে।
এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণাংশু মিশ্র বলেন, ‘কারা মাইনে পাবেন আর কারা পাবেন না, সেটা বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর স্পষ্ট। কিন্তু শিক্ষা দফতরের পাঠানো তালিকার জন্য অপেক্ষা করছি। আগে থেকে স্যালারি পোর্টালে কোনও কাজ করতে গেলে প্রধান শিক্ষকরা দায়বদ্ধ হয়ে পড়তে পারেন’।
আরও পড়ুনঃ বিয়েতে উপহার পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী! সেই মমতাকে আজ আক্রমণ করলেন দিলীপ ঘোষ
প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছে নারায়ণ দাস বাঙুর মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়ার গলায়। তিনি বলেন, ‘আমরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ জানি। তবে এখনও অবধি শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে কিছু নির্দেশ আসেনি। সেই কারণে বোঝা যাচ্ছে না, কাদের নাম থাকবে ও কাদের নাম বাদ যাবে’।
এই বিষয়ে শিক্ষকদের অনেকেরই মত, সরকারের কাছে ‘যোগ্য’ ও ‘অযোগ্য’দের তালিকা রয়েছে। সেই অনুসারে নাম পাঠিয়ে শিক্ষা দফতরকে (School Education Department) বেতন চালু কিংবা বন্ধের নির্দেশ দিতে হবে। পরিষ্কারভাবে কোনও নির্দেশ না আসলে প্রধান শিক্ষকদের পক্ষে সেই কাজ করা সম্ভব নয়।
এদিকে জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই শিক্ষা দফতরে ‘অযোগ্য’দের তালিকা পাঠিয়েছে এসএসসি (School Service Commission)। সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে তা প্রকাশ করা হতে পারে। এরপর জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে ‘যোগ্য’, ‘অযোগ্য’দের তালিকা পাঠানো হবে। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে এই তালিকা ও বেতন বিষয়ক নির্দেশিকা বিদ্যালয়গুলিতে পৌঁছে যেতে পারে বলে মনে করছেন জেলা স্কুল পরিদর্শকরা।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের এসএসসির (SSC Recruitment Scam) সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে দেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আবেদন জানানো হয়, ‘অযোগ্য’ বা ‘দাগি’ হিসেবে চিহ্নিত নন, এই সকল শিক্ষকদের আপাতত চাকরিতে বহাল রাখা হোক। রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার কথা মাথায় রেখে এই আবেদন জানানো হয়। সেই আর্জি মেনে নিয়েছে শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, যে সকল শিক্ষকরা ‘অযোগ্য’ বা ‘দাগি’ নন, তাঁরা বিদ্যালয়ে যেতে পারবেন। নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য আগের নির্দেশই থাকবে, নতুন নির্দেশ প্রযোজ্য হবে না।