বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০১৬ সালের এসএসসির (SSC Recruitment Scam) সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এক রায়ে চাকরি হারিয়েছেন ২৫,৭৫২ জন। যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা সম্ভব হয়নি, সেই কারণে গোটা প্যানেলই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে ওএমআর শিট (OMR Sheet) থাকলে চিত্রটা হয়তো অন্যরকম হতে পারতো।
ওএমআর শিট কেন নষ্ট করা হয়েছিল (SSC Recruitment Scam)?
কারা অবৈধভাবে চাকরি পেয়েছেন আর কারা যোগ্য, সেটা জানাতে পারতো ওএমআর শিট। তবে ওএমআরের হার্ড কপি নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সেই কারণে যোগ্য-অযোগ্য পৃথকীকরণ সম্ভব না হওয়ায় সকলের চাকরি বাতিল হয়েছে। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, ওএমআর শিটের হার্ড কপি কেন নষ্ট করা হল? সেগুলি কেন সংরক্ষিত হল না? এক্ষেত্রে নিয়মই বা কী বলছে?
২০১৬ সালে নিয়োগ (SSC Recruitment Scam) প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য এসএলএসটির বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। তার আগেই বিধানসভায় বিল পাশ করিয়ে একটি আইন আনা হয়। সেখানে বলা হয়, এক বছরের মধ্যে ওএমআর শিটের হার্ড কপি নষ্ট করে দেওয়া হবে। রাজ্য বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই বিল পাশ হয়। তাতে রাজ্যপাল সই করে দেন।
আরও পড়ুনঃ কে যোগ্য, কে অযোগ্য? মমতার সঙ্গে বৈঠকের আগে হাতাহাতিতে জড়ালেন শিক্ষকরা! তোলপাড় কাণ্ড
জানা যাচ্ছে, রিক্রুটমেন্ট ল নানান সময়ে সংশোধন করে শিক্ষা দফতর। এদিকে নয়া এই আইন আসার পর ২০১৬ সালের এসএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এই আইন মেনে এক বছর পর ওএমআর শিটের হার্ড কপি নষ্ট করে দেওয়া হয়।
এদিকে হার্ড কপি নষ্ট করে দেওয়া হলেও, ওএমআর শিটের ডিজিটাল কপি সংরক্ষণ করে রাখা হবে বলে ঠিক ছিল। ২০১৬ সালের এসএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর আরটিআইয়ের ভিত্তিতে চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআরের ডিজিটাল কপি দেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন (School Service Commission)। তখন মনে করা হয়, হার্ড কপি না থাকলেও ডিজিটাল কপি সংরক্ষণ করে রেখেছে এসএসসি। তবে পরে জানা যায় অন্য কথা!
কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হওয়ার পর আবেদনকারীরা জানায়, এসএসসি তাঁদের ওএমআর শিটের ডিজিটাল কপি দিয়েছে (SSC Recruitment Scam)। সেই কপিতে লেখা ছিল, স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে ওই কপি দেওয়া হয়েছে। তবে সুপ্রিম কোর্ট অবধি জল গড়ানোর পর এসএসসি জানায়, তাদের কাছে ওএমআরের ডিজিটাল কপিও নেই।
এরপরেই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে চাকরিপ্রার্থীরা কীভাবে ডিজিটাল কপি পেল? তখন কমিশন জানায়, নায়সাকে ওই পরীক্ষা মূল্যায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারা আবার ডেটা স্ক্যানটেক সলিউশনস নামের একটি সংস্থাকে এই কাজের বরাত দেয়। সংশ্লিষ্ট সংস্থার থেকেই ওএমআরের ডিজিটাল কপি নিয়ে আবেদনকারীদের দেওয়া হয় বলে জানায় স্কুল সার্ভিস কমিশন। এদিকে নায়সার থেকে পাওয়া ফাইল একেবারে সঠিক বলে মানতে চায়নি সুপ্রিম কোর্ট।
২০১৬ সালের এসএসসি (SSC Recruitment Scam) মামলায় রায় দিতে গিয়ে শীর্ষ আদালত জানায়, স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে হার্ড কপি বা ডিজিটাল কপি থাকলে সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল না করার যুক্ত হয়তো মেনে নেওয়া যেত। তবে এসএসসি মেনে নিয়েছে প্যানেল প্রকাশের এক বছরের মধ্যে নিয়ম মেনে ওএমআরের হার্ড কপি নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ও ডিজিটাল কপিও তারা রাখেনি। এসএসসির কাছে হার্ড কপি বা ডিজিটাল কপি থাকলে নায়সার থেকে পাওয়া ফাইল গ্রহণযোগ্য হতো। সেক্ষেত্রে প্যানেল বাতিল হতো না।
এদিকে সুপ্রিম-রায় আসার পর থেকেই যোগ্য-অযোগ্য পৃথকীকরণ না হওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন অনেকে (SSC Recruitment Scam)। যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা যায়নি বলে সম্পূর্ণ প্যানেল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেক্ষেত্রে অযোগ্যদের জন্য যোগ্যদের বলি হতে হয়েছে বলে দাবি অনেকের। তবে এসএসসির কাছে যদি ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওএমআর শিটের হার্ড কপি অথবা ডিজিটাল কপি থাকতো, তাহলে সমগ্র প্যানেল বাতিল হতো না।