বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রত্নাকর দস্যুর কাহিনী প্রায় সকলেরই জানা। বাল্মিকী হয়ে ওঠার পূর্ব মুহূর্তে একদা যার ভয়ে কাঁপত সকল মানুষ, পরবর্তীতে বিপদের সময় তার পাশে দাঁড়ায়নি স্বয়ং পরিবারের সদস্যরাই! একবিংশ শতকে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় বর্তমানে সেই একই কাহিনী উঠে এলো! পরপর তিনবার মাকে ফোন করলেন নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee)। অথচ একবারের জন্যও ফোন ধরলেন না তাঁর মা। তবে এক্ষেত্রে জেলের নম্বর অচেনা হওয়ার কারণে ফোন ধরেননি, নাকি ইচ্ছা করেই মেয়ের ফোন ধরতে চাইলেন না মা, সে নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, স্কুল সার্ভিস কমিশন সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় সম্প্রতি ইডির হাতে গ্রেফতার হন প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। এ ক্ষেত্রে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি নগদ অর্থ এবং একাধিক সোনা গয়না, মোবাইল ফোন মেলার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র।
বর্তমানে মাসের পর মাস হেফাজতেই ঠাঁই মিলেছে অর্পিতার। সূত্রের খবর, জেল থেকে মায়ের খবর নেওয়ার জন্য একাধিকবার ফোন করলেও একবারের জন্যও সেই ফোন ধরেননি তিনি। ফলে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, গ্রেফতার হওয়ার জন্যই কি মেয়ের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন অর্পিতার মা?
উল্লেখ্য, গতকাল ইডির বিশেষ আদালতে ভার্চুয়াল শুনানিতে উপস্থিত হন পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে অর্পিতার জামিনের জন্য কোনরকম আবেদন করা না হলেও এদিন বিচারকের সামনে অঝোরে কেঁদে চলেন পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ অভিনেত্রী। তিনি বলেন, “গত ১৫ দিন ধরে মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু পারছি না।”
অর্পিতার আইনজীবীর তরফ থেকে আবেদন করা হয়, “জেল হেফাজতের ভেতরে এমন ব্যবস্থা অন্তত করা হোক, যাতে মায়ের সঙ্গে না হলেও দিদির সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে তাঁর খোঁজ নিতে পারেন অর্পিতা।” অবশেষে এই আবেদনের ভিত্তিতে আলিপুর জেল কর্তৃপক্ষকে বিচারকের নির্দেশ, “মা কিংবা দিদির সাথে ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে।”