বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলায় দীর্ঘদিন ধরে স্কুল সার্ভিস কমিশনে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে চলেছে। বছরের পর বছর ওঠা অভিযোগে ক্রমশ দেওয়ালে পিঠ ঠেকতে শুরু করেছে রাজ্য সরকারের। অতীতে এই দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্ট দ্বারা একটি কমিটি গঠন করা হয়, যাদের প্রধান দায়িত্ব ছিল দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ্যে আনা।
এই দিন সেই বাগ কমিটি আদালতের কাছে একটি রিপোর্ট পেশ করেছে, যেখানে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নামের তালিকা রয়েছে বলে খবর। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেই রিপোর্টে স্থান পেয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। এছাড়াও, তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কয়েকজন আধিকারিকের নাম উঠে এসেছে। একইসঙ্গে ফৌজদারি মামলার সুপারিশ করা হয়েছে কয়েকজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।
ফৌজদারি মাললার তালিকায় থাকা সেই সকল ব্যক্তিদের নাম
১.শান্তি প্রসাদ সিনহা (স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন কর্তা)
২.সমরজিৎ আচার্য (স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রোগ্রামিং অফিসার)
৩. কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় (মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি)
৪.সৌমিত্র সরকার (স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান)
৫.অশোককুমার সাহা (স্কুল সার্ভিস কমিশনের সচিব)
৬.সুবীরেশ ভট্টাচার্য (স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান)
৭.রাজেশ লায়েক (বোর্ডের টেকনিক্যাল অফিসার)
স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন কর্তা শান্তি প্রসাদ সিনহা এবং প্রোগ্রামিং অফিসার সমরজিৎ আচার্যের বিরুদ্ধে 465, 417 এবং 34 ধারা লাগু করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও প্রতারণার মামলায় শাস্তি হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। এই তালিকায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের নামও রয়েছে। অভিযোগ, এসএসসির প্রাক্তন কর্তা এবং কল্যাণময় মিলেই সকল ভুয়ো সুপারিশ পত্রে বেআইনি স্বাক্ষর করতেন। সেই পত্র বানানোর দায়িত্বে ছিলেন রাজেশ লায়েক।
এছাড়াও বাগ কমিটির রিপোর্টে শর্মিলা মিত্র, সিরাজ উদ্দিন এবং সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে। এসএসসির আঞ্চলিক চেয়ারম্যান পদে এই সকল অভিযুক্তরা কর্মরত ছিলেন। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে এই রিপোর্টে উঠে এসেছে প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম! যদিও রিপোর্টে নাম থাকলেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনরকম মামলার কথা উল্লেখ করেনি বাগ কমিটি।
এদিন বাগ কমিটির আইনজীবী অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “স্কুল সার্ভিস কমিশনের রেজাল্টে বেনিয়ম করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্যানেলে নাম না থাকা সত্ত্বেও 381 জনকে সুপারিশ করে কমিশন।” তিনি আরও জানান যে, এই 381 জন এর মধ্যে 221 জন পরীক্ষাই দেয়নি আর বাকিরা পরীক্ষা দিলেও তারা উত্তীর্ণ হতে পারেনি। এক্ষেত্রে অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, পরীক্ষার খাতায় গণ্ডগোলের মাধ্যমে তাদের পাশ করানো হয় এবং এর পিছনে মূল মাথা ছিলেন কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়।