বাংলাহান্ট ডেস্ক : আইনি জটিলতা দিনের পর দিন যেন চেপে ধরছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগকে। এবার হাইকোর্টের নতুন ডিভিশন বেঞ্চও নির্দেশ দিল চাকরি বাতিলের। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বর্তমানে রীতিমত তোলপাড় গোটা রাজ্য। বেআইনিভাবে যে সকল শিক্ষক-শিক্ষিকারা চাকরি পেয়েছেন, যারা বর্তমানে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তাঁদের একের পর এক জনকে এনে দাঁড় করানো হচ্ছে কাঠগড়ায় ।
কিছুদিন আগেই পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এমনকি তাকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েও দেওয়া হয় এরপর থেকে তিনি আর নিজেকে শিক্ষিকা হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না। একই রকম ভাবে এসএসসি বেআইনি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় আরও এক শিক্ষকের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের নবনিযুক্ত ডিভিশন বেঞ্চ।
সোমবার উচ্চআদালতের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের মামলাটি উঠেছিল। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বিচারক নির্দেশ দেন, গণিত শিক্ষক সিদ্দিক গাজির চাকরি বাতিল করতে হবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে। বুধবার ফের হবে এই মামলার শুনানি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নবম দশম শ্রেণীর গণিতের শিক্ষক সিদ্দিকর শিক্ষক পদ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা উচ্চআদালত। তাঁর নিয়োগের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অনিয়ম হয়েছে বলেই দাবি আদালতের। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, এসএসসির মেধাতালিকায় সেই সময় ২০০ নম্বরে যে চাকরি প্রার্থী ছিলেন তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়নি। সেই জায়গায় সিদ্দিক গাজী যিনি ২৭৫ নম্বর স্থানাধিকারী তিনি বর্তমানে গণিতের শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করছেন। এই কারণেই বেআইনি শিক্ষকের শিক্ষক পদ বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফ থেকে।
এসএসসি নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির পর্দাফাঁস হতেই একের পর এক শাসক দলের নেতা মন্ত্রীদের তলব করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল গোটা রাজ্যই। এই রকম পরিস্থিতিতে একজন বেআইনি শিক্ষিকাকে আগেই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আর এবার একইভাবে আরও একজন শিক্ষক তাঁর চাকরি খোয়ালেন। অর্থাৎ এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় বেনিয়মের জাল যে বহুদূর বিস্তৃত তা নির্দিধায় বলা যায়। এই ঘটনার তদন্তভার বর্তমানে সিবিআই আধিকারিকদের হাতে। এবার এই তদন্ত চলাকালীন সময়ে আরও কত বেআইনি শিক্ষক বা শিক্ষিকার খোঁজ পাওয়া যায় তাই এখন দেখার বিষয়। সোমবার নবম ও দশম শ্রেণিতে বেআইনিভাবে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগে মামলাটি শুনানির জন্য উঠেছিল বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত এই সব মামলার শুনানি চলছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে। তবে গত সপ্তাহেই তার বেঞ্চ বদল করে হাই কোর্ট প্রশাসন।