বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে অনেকেই গতানুগতিক ভাবে চাকরির পথে না হেঁটে ব্যবসার (Business) মাধ্যমে নিজেদেরকে স্বনির্ভর করতে চান। তাছাড়াও, দেশে চাকরির অপ্রতুলতা এবং করোনার মত ভয়াবহ মহামারীর পরে বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ায় এই রেশ অনেকাংশেই বেড়েছে। পাশাপাশি, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে তৈরি হয়েছে নানান ব্যবসায়িক উপায়ও। যার মাধ্যমে খুব সহজেই স্বল্প বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করে মাসের শেষে ভালো উপার্জন করা সম্ভব।
সবচেয়ে বড় কথা হল, ব্যবসা এমনই একটি পন্থা যা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যে কোনো সময়ে এবং যে কোনো বয়সেই শুরু করতে পারেন। বর্তমান প্রতিবেদনে ঠিক সেইরকমই এক লাভজনক ব্যবসার প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব আমরা। মূলত, আমাদের দেশে বৈচিত্র্যের অভাব নেই। তাই সেই রেশ বজায় রেখে অঞ্চলভেদে খাদ্যদ্রব্যেও বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়। তবে, আচার এমনই একটি জিনিস যার ব্যবহার সমগ্র দেশজুড়েই লক্ষ করা যায়। পাশাপাশি, খাওয়ারের পাতে আচারের উপস্থিতি পছন্দ করেন সকলে।
তাই, স্বাভাবিকভাবেই বাজারে আচারের বেশ ভালো চাহিদা সবসময়ই পরিলক্ষিত হয়। যে কারণে এই ব্যবসা অত্যন্ত লাভজনক। কেউ যদি আচারের ব্যবসা শুরু করার কথা ভাবেন তাহলে তিনি মাত্র ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেই এটি শুরু করতে পারেন। অর্থাৎ বেশি অঙ্কের বিনিয়োগ এই ব্যবসায় কোনোভাবেই দরকার পড়েনা। তবে, বিনিয়োগ অল্প হলেও আপনি খুব সহজেই এই ব্যবসার মাধ্যমে প্রতিমাসে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
পাবেন সরকারি সাহায্য: এই ব্যবসা শুরু করতে গেলে আপনি পেয়ে যেতে পারেন সরকারি সাহায্যও। এমনিতেই সরকার এখন প্রত্যেককে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন রকমের হাতের কাজ শেখার ট্রেনিং চালু করেছে। এমনকি, এর মাধ্যমে নতুন কোনো উদ্যোগ বা স্টার্টআপের মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে দেওয়া হয় সরকারি সাহায্যও।
প্রয়োজন স্বল্প পুঁজির: মূলত, এটি একটি এমন ব্যবসা যেখানে বড় অঙ্কের বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়না। তাই, আচার ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রাথমিকভাবে প্রয়োজন ১০ হাজার টাকার। এই পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও প্রতি মাসে ৩০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা উপার্জনের সুযোগ রয়েছে। ব্যবসা বাড়াতে হলে রিটেল শপ বা হোম ডেলিভারির মাধ্যমে অথবা রিটেল চেইন বা অনলাইন ব্যবসাও করা যেতে পারে। তবে, এগুলি সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আচারের গুণগত মান ও চাহিদার ওপর।
প্রয়োজনীয় লাইসেন্স: যেহেতু আচার একটি খাদ্যদ্রব্য সেহেতু, এই ব্যবসা শুরুর জন্য একটা ফুড লাইসেন্সের প্রয়োজন। যার জন্য ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথোরিটি থেকে নিতে হবে এই লাইসেন্স। এখন অবশ্য এই লাইসেন্সের জন্য অনলাইনে একটা ফর্ম ফিলআপ করতে হয়।
বরাদ্দ জায়গার পরিমাণ: এই ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজন প্রায় ৯০০ স্কোয়ার ফুট জায়গার। মূলত আচার বানানোর জন্য এবং তা রোদে শুকনোর জন্যই ওই জায়গার প্রয়োজন হয়। তবে, আচার তৈরির সময়ে এটিকে দীর্ঘদিন ভালো রাখার জন্য ক্লিনিং প্রসেস বা পরিষ্কারের ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে। কারণ, আচার বহুদিন ভালো রাখার জন্য এটাই একমাত্র পথ।
মোট লাভের পরিমাণ: আগেই জানিয়েছি যে, এই ব্যবসা শুরু করার জন্য বেশি পুঁজির প্রয়োজন নেই। তবে, সেই স্বল্প পুঁজি দিয়ে শুরু করেও কয়েকগুণ পর্যন্ত লাভ করা সম্ভব। আচারের গুণমাণ ও স্বাদের ভিত্তিতে পরপর চাহিদা বাড়লেই বাড়তে থাকবে লাভের অঙ্কও। ব্যবসা শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই এটি খানিকটা গতি পেলে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করা সম্ভব।