বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর থেকে আবাস যোজনা (Awas Yojana) প্রকল্পের টাকা দেওয়া শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। সরকারি এই প্রকল্পের টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে আগেই টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই এবার আবাসের টাকা নিয়ে দুর্নীতি ঠেকাতে, শুরু থেকেই কড়া নজরদারি চালাচ্ছে নবান্ন। এরইমধ্যে উঠে এল একাধিক গুরুতর অভিযোগ।
আবাসের (Awas Yojana) চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ প্রায় আড়াই হাজার নাম
জানা যাচ্ছে,সমস্ত নিরাপত্তার ঘেরাটোপ পেরিয়ে আবাস প্রকল্পের (Awas Yojana) চূড়ান্ত তালিকায় নাম উঠেছিল কয়েক হাজার অযোগ্য প্রভাবশালী উপভোক্তাদের। সম্প্রতি আবাস যোজনার চূড়ান্ত তালিকা থেকে এমনই প্রায় আড়াই হাজার মানুষের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। বিডিওদের নেতৃত্বে থাকা সরকারি টিমের রিপোর্টের ওপরে ভিত্তি করেই এই নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
আবাস প্রকল্পে (Awas Yojana) টাকা দেওয়ার আগে থেকেই স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন এই প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগ ধরা পড়লেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তাই টাকা দেওয়ার আগে থেকে দেওয়ার পরে পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপের ওপরে চালানো হয়েছে কড়া নজরদারি। কিন্তু তারপরেও এই সমস্ত অযোগ্য প্রভাবশালী উপভোক্তাদের নাম আবাসের চূড়ান্ত তালিকায় উঠল কি করে? তা নিয়েই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।
সরকারি প্রকল্পে এই অনিয়ম সামনে আসতেই বেজায় অস্বস্তি পড়েছে প্রশাসন। এপ্রসঙ্গে কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক সৌমেন দত্ত জানিয়েছেন বেশ কিছু অভিযোগের উপর নির্ভর করে একটি নতুন সার্ভে করা হয়েছিল। সেখানে ২ হাজারের বেশি উপভোক্তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পর গত বছরের ২৫ নভেম্বর কোচবিহার জেলায় আবাস প্রকল্পের সার্ভে শুরু হয়েছিল।
আরও পড়ুন: স্যালাইনকাণ্ডে তোলপাড় রাজ্য! সাসপেনশন বাতিলের আর্জি নিয়ে এবার হাইকোর্টে চিকিৎসক
চূড়ান্ত তালিকা তৈরী হওয়ার পর, সেখান থেকেই এবার একসাথে বাদ দেওয়া হয়েছে প্রায় দু’হাজারের বেশি নাম। জানা যাচ্ছে, সরকারি কর্মীদের নিয়ে প্রায় ১২০০ টিম নেমেছিল ওই সার্ভের কাজে। গত ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সার্ভের কাজ চলেছে। কোচবিহার জেলায় আবাস প্রকল্পের (Awas Yojana) চূড়ান্ত তালিকায় নাম ছিল সবমিলিয়ে ৩ লক্ষ ৯১ হাজার ৪৭৫ জনের। সার্ভের শেষে ওই তালিকা থেকে বেশ কিছু উপভোক্তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে কোচবিহার জেলায় ১ লক্ষ ১২ হাজার উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা দেওয়া শুরু হলে জেলা প্রশাসন ও বিডিওদের কাছে একাধিক অভিযোগ জমা পড়তে শুরু করে।
অভিযোগ করা হয়, আবাস প্রকল্পের চূড়ান্ত তালিকায় বহু প্রভাবশালী মানুষজনের নাম রয়েছে। কেউ ফোন করে, আবার কেউ লিখিতভাবে,এমনকি ইমেইল করেও অভিযোগ জানিয়েছেন। এরপরেই কার্যত নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বিডিওদের নেতৃত্বে এই জেলার ১২ টি ব্লকে নতুন করে টিম তৈরি করা হয়। প্রশাসনের কাছে ওই টিমের দেওয়া একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে। সেখানে এমন প্রায় আড়াই হাজার উপভোক্তার খোঁজ মিলেছে যাদের আসলে ঘর পাওয়ারই কথা নয়। তবে প্রশ্ন উঠছে কোচবিহার জেলায় মাত্র এক মাস ধরে এক হাজারের বেশি সরকারি টিম নামিয়ে যে সার্ভে করা হয়েছিল তাতে এত ভুল ছিল কেন?