বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কেন্দ্রের সাথে রাজ্যের চাপানউতোর নতুন নয়। প্রায় ২ বছর ধরে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আবাস যোজনা থেকে শুরু করে একশো দিনের কাজ, একাধিক প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। একইভাবে রেশন (Ration) প্রকল্পেও রাজ্যের কাছে বকেয়া রয়ে গেছে কেন্দ্রের। ইতিপূর্বে একাধিকবার কেন্দ্র বনাম রাজ্যের রেষারেষির ছবি ধরা পড়েছে।
রেশনে (Ration) ১২,৭১৪ কোটি টাকা বকেয়া কেন্দ্রের
কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম হলো ‘গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’। এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের প্রায় ৬ কোটি রেশন (Ration) গ্রাহককে যে চাল গম সরবরাহ করা হয়ে থাকে তার খরচ বহন করে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা এফসিআই। কিন্তু চালের জন্য যে খরচ হয় তা প্রাথমিকভাবে রাজ্য সরকারকেই বহন করতে হয়।
এই খরচ কেন্দ্রীয় সরকারেই দেওয়ার কথা। নিয়ম অনুযায়ী, রাইস মিল থেকে রাজ্য সরকারের গুদামে চাল চলে এলেই কেন্দ্রীয় সরকার পর্যায়ক্রমে টাকা দিতে শুরু করে। কিন্তু ২০২৩-’২৪ আর্থিক বছর থেকে কেন্দ্র এই খাতে (Ration) টাকা না দেওয়ায় বিপুল বকেয়া রয়ে গিয়েছে। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার কেন্দ্রের এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।
রাজ্য সরকার চাষিদের থেকে ধান কিনে তা থেকে চাল উৎপাদন করে। এক্ষেত্রে চালু রয়েছে একটি নির্দিষ্ট নিয়ম। এই নিয়ম অনুযায়ী রাইস মিল থেকে রাজ্য সরকারের গুদামে চাল চলে এলেই কেন্দ্রীয় সরকার পর্যায়ক্রমে টাকা দিতে শুরু করে। কিন্তু ২০২৩-’২৪ অর্থ বর্ষে কেন্দ্রীয় সরকার এখনও পর্যন্ত এই খাতে কোন টাকা না দেওয়ায় বিপুল পরিমাণ টাকা বকেয়া রয়ে গিয়েছে।
এই মুহূর্তে এই প্রকল্পের আওতায় রেশনের (Ration) জন্য কেন্দ্রের মোট ১২ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা বাকি রয়ে গিয়েছে। সরকারি প্রকল্পের টাকা নিয়ে কেন্দ্র বনাম রাজ্যের চাপানউতর বহুদিনের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একাধিকবার কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এবার এই বকেয়া টাকা ফেরত চেয়ে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রকে চিঠি লিখেছে রাজ্যের খাদ্য দপ্তর। সেখানে অনুরোধ জানানো হয়েছে যত দ্রুত সম্ভব ওই বকেয়া টাকা তাদের মিটিয়ে দেওয়া হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে রেশন ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য ওই টাকা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: মাত্র ৯ টি? মহারাষ্ট্রের নির্নাচনের আগে মোদীকে খোঁচা কংগ্রেসের
ওই চিঠিতে খাদ্য দপ্তরের আধিকারিক বেশ কিছু বিষয় উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন নভেম্বরের ২ তারিখ থেকে পিএমজেকেএওয়াই এর নাম এবং লোগো ছাপানো স্লিপ ইস্যু করা শুরু হয়েছে। রেশন দোকানের ই-পস মেশিন থেকে ওই স্লিপ বের হচ্ছে। সেই স্লিপের কয়েকটা নমুনাও চিঠির সঙ্গে পাঠিয়ে দিয়েছেন খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা।
ওই স্লিপে গ্রাহকদের পরিবার পিছু কেন্দ্রীয় সরকারের কত টাকা খরচ হচ্ছে তার-ও উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া পিএমজেকেএওয়াই-এর নাম এবং লোগো রয়েছে ওই স্লিপে। অর্থাৎ খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকদের তরফ থেকে চিঠিতে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে বকেয়া টাকা দেওয়ার শর্ত হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকার ওই স্লিপ ইস্যু করার জন্য এতদিন চাপে রেখেছিল রাজ্যকে। তাই এবার ওই স্লিপ ইস্যু করে দেওয়ায় টাকা পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী রাজ্যের খাদ্য দপ্তর। কিন্তু কেন্দ্রের সমস্ত শর্ত মেনে নেওয়ার পরেও আগামী দিনে এই রেশন প্রকল্পের বকেয়া টাকা কেন্দ্র ফেরত দেবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।