পঞ্চায়েতের চোর না ধরলে টাকা নয়! নবান্নকে চিঠি দিয়ে পরিস্কার জানিয়ে দিল কেন্দ্র

বাংলাহান্ট ডেস্ক : পঞ্চায়েতে (Panchayat) দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে গত কয়েক মাসে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকার। কিন্তু কেন্দ্র সরকার নবান্নকে (Nabanna) পরিস্কার জানিয়ে দিল যে পুরনো ‘চুরি’ তথা অনিয়মের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বকেয়া টাকা দেওয়া হবে না। বকেয়া টাকার অঙ্ক শুধুমাত্র ‘একশ দিনের কাজ’ প্রকল্পে ৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

রাজ্যে একশ দিনের কাজ প্রকল্পে মারাত্মক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিজেপি। এ ব্যাপারে দিল্লির কাছে মাঝেমধ্যেই চিঠি লেখেন রাজ্যের বিজেপি নেতারা। তাঁদের এই চিঠির পরই বাংলায় কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল পাঠায় দিল্লি। রাজ্যের ১৫ টি জেলায় পঞ্চায়েতে চুরি এবল অনিয়মের খোঁজ পায় সেই দল। রিপোর্টে পরিস্কার জানায় ভুয়ো খরচ ও অনিয়মের টাকা আগে উদ্ধার করতে হবে। শুধু তাই নয়, পঞ্চায়েত স্তরে যে সমস্ত কর্মী, আধিকারিক এই সব দুর্নীতি করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তারপর সেই অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট তথা এটিআর পাঠাতে হবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে।

দিল্লির ওই চিঠি পেয়ে রাজ্য তাই করেছিল। জেলাওয়াড়ি চিঠি পাঠিয়ে বলেছিল, ভুয়ো খরচ বের করতে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে। সেই প্রতিবেদন সবার আগে দ্য ওয়ালে প্রকাশিত হয়েছিল। ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জেলাগুলোকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল।

এরপরই ২ কোটি টাকার মতো ভুয়ো খরচ উদ্ধার করেছে নবান্ন। তারপর সেই হিসাব দেখিয়ে দিল্লিকে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট পাঠানও হয়।

কিন্তু নবান্নের সেই রিপোর্টে সন্তুষ্ট নয় দিল্লি। বৃহস্পতিবার ৩ নভেম্বর রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন সচিবকে চিঠি দিয়ে একশ দিনের কাজ প্রকল্পের ডিরেক্টর ধরমবীর ঝা বলেন, এ ভাবে রিপোর্ট দিলে হবে না। আরও বিশদে রিপোর্ট চাই।

কেন্দ্র সরকার জানায়, যে সব কাজে যথাযথ প্রক্রিয়া মানা হয়নি, সেই সব কাজে খরচ করা সমস্ত টাকা উদ্ধার করতে হবে। একশ দিনের কাজের আওতায় জমি-উন্নয়নে যে ঢালাও অনুমতি দেওয়া হয়েছে তা বন্ধ করতে হবে। জেলা প্রোজেক্ট অফিসার যে সব কাজে অনুমতি দেবে সেগুলিই শুধু চলবে। প্রসঙ্গত, এ ব্যাপারে অভিযোগ হল, মাটি ফেলার নামে একশ দিনের প্রকল্পের টাকা চুরি হয়েছে।

দিল্লি আরও জানায়, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল বাংলায় এসে যে সব মাটি ফেলার কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, সেই সব কাজে খরচ হওয়া সমস্ত টাকা উদ্ধার করতে হবে। মাটি ফেলার কাজ করে যে সব সরকারি কর্মচারি বা পঞ্চায়েত কর্মী জনগণের টাকা আত্মসাৎ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নিতে হবে বা শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য পদক্ষেপ করতে হবে। কেন্দ্রের বক্তব্য, বর্তমান রাস্তার উপর মাটি ফেলার নাম করে তহবিল তছরুপ করা হয়েছে। এই সমস্ত নিয়ম মানতে গিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই চরম বিপাকে পড়ল রাজ্য সরকার।

Avatar
Sudipto

সম্পর্কিত খবর