বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আর জি কর কান্ডের পর সরকারি প্রকল্প স্বাস্থ্যসাথীর (Swasthya Sathi) টাকা নিয়ে কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল সরকারি ডাক্তারদের বিরুদ্ধে।তখনই কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল রাজ্য (West Bengal)। প্রসঙ্গত আরজিকরের আন্দোলন চলাকালীন সময়েই কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেসময় অভিযোগ উঠেছিল সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা না দিলেও বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখে স্বাস্থ্যসাথী (Swasthya Sathi) প্রকল্পের টাকা নিয়েছিলেন আন্দলোনরত ডাক্তারদের একাংশ। এই অভিযোগে ৪১ জন সিনিয়র রেসিডেন্ট কে ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল স্বাস্থ্য ভবন।
স্বাস্থ্যসাথীর (Swasthya Sathi) টাকা নিয়ে কড়া সিদ্ধান্ত রাজ্যের
নিয়ম অনুযায়ী সরকারি হাসপাতালে বন্ড পোস্টিংয়ে থাকা সিনিয়র রেসিডেন্টরা সরকারের কাছ থেকে ‘নন প্র্যাক্টিসিং অ্যালাওয়েন্স পান। তাই সরকারের কাছ থেকে এই ভাতা নেওয়ার পরেও বেসরকারি হাসপাতালে তাদের রোগী দেখা আইনত অপরাধ। তাই এক্ষেত্রে তাদের হলফনামা দিতে হয় সরকারি হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোন হাসপাতাল কিম্বা নার্সিংহোমে তারা যুক্ত হবেন না।
তারপরেও একাধিক ক্ষেত্রে নিয়ম অমান্য করার অভিযোগ সামনে এসেছে। এই কারণেই অভয়া-আন্দোলন চলাকালীন বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখে স্বাস্থ্যসাথী (Swasthya Sathi) প্রকল্পের টাকা নেওয়ায় ৪১ সিনিয়র রেসিডেন্টকে ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিল স্বাস্থ্যভবন। আর এবার স্বাস্থ্য ভবনের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে শুধুমাত্র সিনিয়র রেসিডেন্ট নয়, যে সব সরকারি ডাক্তার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করেন তাঁদের প্রত্যেককেই হলফনামা দিয়ে সরকারকে জানাতে হবে। তা নাহলে তদন্তে ধরা পড়লেই কড়া পদক্ষেপ নেবে স্বাস্থ্যদপ্তর।
এবার যেসমস্ত সরকারি ডাক্তার সরকারের থেকে নন প্রাকটিসিং ভাতা নিচ্ছেন তাদের আরও একবার হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে তারা বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে রোগীদের চিকিৎসা করছেন না। জানা যাচ্ছে, রাজ্যের সিনিয়র রেসিডেন্ট যাঁরা বন্ড পোস্টিংয়ে কর্মরত এমন ডাক্তারের সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার। ইতিমধ্যে প্রায় ২ হাজার সিনিয়র রেসিডেন্টকে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। কেন তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে না, তা দ্রুত জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আসলে বন্ড পোস্টিং শুরুর সময় সংশ্লিষ্ট এস আর-কে লিখিতভাবেই জানাতে হয় তিনি সরকারি হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোনো বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা নার্সিংহোম যুক্ত থাকবেন না।
আরও পড়ুন: শীঘ্রই ‘বাংলার বাড়ি’র টাকা পাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ গরিব মানুষ! তাদের সুবিধার কথা জানাল তৃণমূল
দেশের সব সরকারি হাসপাতালেই এই নিয়ম রয়েছে। বেনিয়ম রুখতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আগামী ২ মাসের মধ্যেই হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে। এপ্রসঙ্গে রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী পোর্টালে থাকা সরকারি ডাক্তারদের ‘ডক্টরস মাস্টার্স’ সফটওয়ার ফরম আপলোড করে স্বাক্ষর করতে হবে।
তবে কোনও সরকারি চিকিৎসক যদি এই তালিকা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করতে চান অর্থাৎ অতিরিক্ত ভাতা না নিতে চান, সেটাও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এবং স্বাস্থ্যদপ্তরে বদল করানো যাবে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট ডাক্তার তাঁর স্মার্টফোনের স্বাস্থ্যসাথী অ্যাপ থেকেই নিজের কাজের যাবতীয় তথ্য দেখতে পাবেন। সরকারি ডাক্তারদের পাশাপাশি, বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমকেও এই তথ্য জানানোর কথা বলা হয়েছে।