‘হ্যাঁ অবৈধ নিয়োগ হয়েছে…’, অবশেষে আদালতে নিয়োগ দুর্নীতি স্বীকার করে নিল রাজ্য সরকার

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০২২ থেকে নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) অভিযোগে শোরগোল রাজ্যে। চাকরি কেলেঙ্কারির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বহুজনা। জেলবন্দি শিক্ষা দপ্তরের একাধিক আধিকারিক। এসব নিয়ে উত্তপ্ত আবহেই গতবছর শেষের দিকে পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সামনে আসে। জিটিএ-তে (GTA) নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়।

পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ একাধিক শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি এফআইআর ঠুকেছে খোদ রাজ্য সরকার। উত্তর বিধাননগর থানায় এই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। হাইকোর্টে অভিযোগ দায়ের হলে ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। আর এবার নিয়োগ মামলায় এবার আরও বিপাকে রাজ্য সরকার। কারণ কী?

পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য ও জিটিএ যা বলছে তা একেবারেই পরস্পর বিরোধী। আদালতে অবৈধ নিয়োগের কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছে রাজ্য। এই মামলায় মোট ৩১৩ জনের অবৈধ নিয়োগের কথা মেনে নিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে রাজ্যের দাবি, মন্ত্রিসভার অনুমোদন ছাড়াই হয়েছে ওই ৩১৩ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। এদিকে রাজ্যের দাবি মানতে নারাজ জিটিএ।

এই দুর্নীতি মামলায় পাল্টা জিটিএ-র দাবি, মন্ত্রিসভা সবটাই জানত। মন্ত্রিসভার অজান্তে কোনও নিয়োগ হয়নি। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে জিটিএ-তে শিক্ষক নিয়োগে বেনিয়ম নিয়ে সুমন গুরুং নামে এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেয় শিক্ষা দফতর। পরে ওই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম একটি রিপোর্ট জমা করে। গত বছর শেষের দিকে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের দেওয়া রিপোর্টে উঠে আসে জিটিএ-র স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষকদের স্থায়ীকরণের পক্রিয়া নিয়ম মেনে হয়নি। শিক্ষা দফতরের বেশ কিছু আধিকারিক সহ কিছু নেতাদেরও এই দুর্নীতিতে হাত রয়েছে বলে জানানো হয় রিপোর্টে।

এরই মাঝে গত জানুয়ারি মাসে জিটিএ-তে নিয়োগ কারচুপি নিয়ে অভিযোগ তুলে একটি বেনামি চিঠি সামনে আসে শিক্ষা দফতরে। চলতি বছরেই শিক্ষা দফতর সেই চিঠি ডিআইজি, সিআইডিকে ও ভিজিলেন্স কমিশনকেও পাঠায়। তবে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন এতদিন রাজ্য কোনো পদক্ষেপ করল না সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। জিটিএ-র শিক্ষক নিয়োগ মামলায় গত মঙ্গলবারই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।

আরও পড়ুন: বাগুইআটিতে গোষ্ঠী সংঘর্ষে খুন তৃণমূল কর্মী! ক্ষোভের মুখে মেয়র পারিষদ দেবরাজ চক্রবর্তী

উল্লেখ্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ শিক্ষা দফতরের দায়ের করা অভিযোগে নাম রয়েছে বিনয় তামাং, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ হাবড়ার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা বুবাই বোস, স্কুল পরিদর্শক প্রাণগোবিন্দ সরকার-সহ রাজন্যা হালদারের স্বামী প্রান্তিক চক্রবর্তীরও। জিটিএ-র স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এদের বিরুদ্ধে। এই মামলাতেই হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই।

Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

X