বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের ঘোর আপত্তি। জিটিএ নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার বিচার যেন-তেন প্রকারে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাস থেকে সরাতে মরিয়া রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee) বলেন, ‘এই মামলা এই এজলাস আর শুনতে পারে না।’ তবে প্রধান বিচারপতি নিজে মামলা এই এজলাসে ফেরত পাঠিয়েছেন বলে মনে করায় হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।
হাইকোর্টে নজিরবিহীন ঘটনা- Calcutta High Court
সম্প্রতি রাজ্য আপত্তি জানানোয় সম্প্রতি গোর্খা টেরিটোরিয়াল প্রশাসন (জিটিএ) শিক্ষক নিয়োগ দু্র্নীতি মামলা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু (Justice Biswajeet Bose)। তবে ফের জাস্টিস বসুর এজলাসেই মামলাটি ফেরত পাঠিয়েছেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। এবার সেই সংক্রান্ত মামলা ফের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাস থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেছে রাজ্য রাজ্য।
এদিন রাজ্যের আইনজীবীর দাবি, বিচারপতি বসুর এই মামলা শোনার এক্তিয়ার নেই। বিচারপতি নিজেও জানান, এই মামলা শোনার জন্য ব্যক্তিগত কোনও উৎসাহ নেই। যেহেতু প্রধান বিচারপতি তার এজলাসে মামলা ফেরত পাঠিয়েছেন তাই তিনি শুনানিতে বসেছেন। এই সময় রাজ্যের আইনজীবী বলেন ‘প্রধান বিচারপতি এটা করতে পারেন না।’
নিজের দাবির সমর্থনে কিছু ধারার উল্লেখ করে আইনজীবী বলেন, প্রধান বিচারপতি প্রশাসনিক নিয়মভঙ্গ করেছেন। এই ভাবে প্রধান বিচারপতির এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলা কার্যত নজিরবিহীন ঘটনা হাইকোর্টে। প্রসঙ্গত, এই মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিনয় তামাং, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ হাবড়ার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা বুবাই বোস, স্কুল পরিদর্শক প্রাণগোবিন্দ সরকার-সহ রাজন্যা হালদারের স্বামী প্রান্তিক চক্রবর্তীরও নাম ছিল। তাদের নামে এফআইআর দায়ের হয়। কেন এদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না? এর আগের শুনানিতে এই প্রশ্ন তুলেছিলেন জাস্টিস বসু।
উল্লেখ্য, প্রথম থেকেই এই মামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বিচারপতি বসু। স্কুল শিক্ষা দফতরের অভিযোগের ভিত্তিতে বিধাননগর উত্তর থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। গত বছর জানুয়ারি মাসে জিটিএ-তে নিয়োগ কারচুপি নিয়ে অভিযোগ তুলে একটি বেনামি চিঠি সামনে আসে শিক্ষা দফতরে। শিক্ষা দফতর সেই চিঠি ডিআইজি, সিআইডিকে ও ভিজিলেন্স কমিশনকেও পাঠায়।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআইকে অনুসন্ধান করার নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্টের বিচারপতি বসুর সিঙ্গেল বেঞ্চ। আদালতে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল CBI- কে। আদালতের রায়ের পাল্টা সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর বেঞ্চে যায় রাজ্য। যদিও সেখানে ধাক্কা খায় রাজ্য সরকার। সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: পাঁচ মিনিটের মধ্যে ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে FIR করুন! বিরাট নির্দেশ হাইকোর্টের, তোলপাড়
যদিও ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, রাজ্য পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে। পাল্টা সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য। সেখানে সিবিআই তদন্তের নির্দেশের উপর স্থগিতদেশ দেওয়া হয়। শেষবারের শুনানিতে বিচারপতি বসু এই মামলার তদন্ত কত দূর এগিয়েছে, তা জানার জন্য রিপোর্ট তলব করেন। উল্লেখ্য, আগে রাজ্যের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করে এই মামলা থেকে সরেছিলেন জাস্টিস বসু। তবে ফের তার এজলাসেই ফিরেছে মামলা।