বাংলা হান্ট ডেস্ক : ভোজন রসিক বাঙালি খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে বরাবরই সবার থেকে কয়েক ধাপ এগিয়েই থাকে। তাছাড়া এখন শুধু বছরের বিশেষ দিনগুলিতেই প্রায় সারা বছরই চিকেন (Chicken) খেয়ে থাকেন বাঙালিরাও। মাসের শেষ হোক বা শুরু বরাবরই মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যেই থাকে দামও। তাই সব মিলিয়ে চিকেনের (Chicken) চাহিদা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে।
চিকেনের (Chicken) চাহিদা মেটাতে তৈরী হচ্ছে অত্যাধুনিক কারখানা
বিশেষ করে ইদানিং রাজ্যে হরিণঘাটার মুরগির (Chicken) মাংসের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কিন্তু সেই চাহিদা অনুযায়ী যোগান দিয়ে উঠতে পারছে না রাজ্য।স্বাভাবিক ভাবেই চাহিদা বাড়লে, বাড়াতে হবে উৎপাদন-ও। তাই এবার মুরগির (Chicken) মাংসের যোগান বাড়াতে রাজ্যে তৈরি করা হচ্ছে এক অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন উন্নত মানের কারখানা।আর এই কারখানা কিন্তু যে সে কারখানা নয়। জানা যাচ্ছে বাংলার এই চিকেন প্রসেসিং প্ল্যান্ট তৈরি করতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে বিশেষভাবে সহযোগিতা করছে নেদারল্যান্ড।
রাজ্যের প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন দপ্তর এই কারখানা বানাতে খরচ করছে মোটা টাকা। জানা যাচ্ছে কল্যাণীতে এই চিকেন মিট প্রসেসিং কারখানা তৈরি করতে রাজ্যের খরচ হচ্ছে মোট ৭২ কোটি টাকা। নবান্ন সূত্রে খবর সব ঠিক থাকলে আগামী বছরেই অর্থাৎ ২০২৫ সালের জুন মাসের মধ্যে এই কারখানা চালু হয়ে যাবে। এই মুহূর্তে এই কারখানা তৈরির কাজ চলছে জোর কদমে। জানা যাচ্ছে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হরিণঘাটা মিট টল থেকেই এই প্রসেসড চিকেন বিক্রি করা হবে। বর্তমানে রাজ্য সরকারের হাতে মোট দুটি চিকেন মীট প্রসেসিং প্ল্যান্ট রয়েছে।
সেই প্ল্যান্ট গুলিতে রোজ গড়ে ১৫ হাজার মুরগি কাটা হয়। অথচ জানলে অবাক হবেন যে নতুন চিকেন মিট প্রসেসিং প্ল্যান্ট তৈরির কথা বলা হচ্ছে সেখানে প্রতি ঘন্টায় ৪ হাজার অর্থাৎ প্রায় ৩০ হাজার মুরগি কাটা যাবে। এর ফলে রাজ্যের চিকেনের উৎপাদনের সাথে সাথে বাড়বে যোগানও। শুধু তাই নয় রাজ্য প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের তরফে জানানো হচ্ছে আগামী দিনে রাজ্যের বাইরেও এই প্রসেসড চিকেন পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
তবে শুধু এই চিকেন বিট প্রসেসিং প্লান্ট নয় পাশাপাশি মুরগির উৎপাদন বাড়াতে ব্রয়লার ইন্টিগ্রেশন প্রোগ্রামও চালু করেছেওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভস্টক ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে চাষিদের সাহায্য নিয়ে ব্রয়লার মুরগি চাষের উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে চাষীদের মুরগির বাচ্চা, টীকা, সহ সমস্ত ওষুধপত্রের যোগান দিচ্ছে রাজ্য সরকার।আর সেই মুরগিই বড় হয়ে চলে যাচ্ছে সরকারি প্ল্যান্টে। এইভাবে রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পের মাধ্যমে নিজস্ব ফার্মে মুরগি চাষ করে সরকারের কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ পারিশ্রমিক পাবেন চাষিরা।
এর ফলে একদিকে যেমন প্রান্তিক চাষিরা মুরগি পালন করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন তেমনি সামান্য অর্থ বিনিয়োগ করে ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন বাড়াচ্ছে রাজ্য সরকার। এখনও পর্যন্ত রাজ্যের মোট ১৪ টি জেলায় এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে একজন এই প্রকল্পে একজন চাষী যদি এক হাজার ব্রয়লার মুরগি চাষ করেন তাহলে প্রতিটি ব্যাচে গড়ে ২০ থেকে ২৫ টাকা পান তিনি। এইভাবে ছটি ব্যাচ করলেই বছরে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা থেকে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারেন ওই চাষী।
সিনিয়র নেতাদের তুমুল ঝগড়া! মাথা ব্যথাই নেই মমতা-অভিষেকের, নেপথ্যের কারণ জানেন?