বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের নির্বাচনী প্রচারে অজস্র প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট প্রচারে বেরিয়ে রাজ্যের ১০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ারও ঘোষণা করেছিলেন তিনি। কিন্তু ভোট মিতে জয় হাসিল করে নিজের প্রতিশ্রুতি থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষমতায় ফেরার একমাসের মধ্যেও সুর বদলে ফেললেন তিনি। বুধবার নবান্নের সভাগরে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিকা কেনা কেন্দ্রের দায়িত্ব। আমাদের কেন টিকা জোগাড় করতে বলছে তাঁরা?”
পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনের প্রচারে বেরিয়ে বারবার কেন্দ্রকে ভ্যাকসিন নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন মমতা। এমনকি রাজ্যে করোনার মধ্যে নির্বাচন চালানো নিয়েও কেন্দ্র এবং কমিশনকে দুষেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। পাশাপাশি শেষ কয়েক দফার নির্বাচন একসঙ্গে করার আবেদনও করেছিলেন তিনি, কিন্তু ওনার আবেদনে সাড়া দেয়নি নির্বাচন কমিশন। প্রচারে বেরিয়ে রাজ্যে টিকাকরণের স্লথগতির জন্য বারবার কেন্দ্রকে দায়ী করে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনী প্রচারে বলেছিলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্যগুলোকে টিকা কেনার জন্য অনুমতি দিতে আবেদন করেছিলাম। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি মেলেনি। আমাদের অনুমতি দিলে আমরা রাজ্যের ১০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে টিকা দেব।”
এরপর ভোটের শেষের দিকে ১৯ এপ্রিল কেন্দ্র নতুন নির্দেশিকা জারি করে রাজ্যগুলোকে টিকা কেনার অনুমতি দেয়। কিন্তু কেন্দ্রের অনুমতির পরেও টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থার তরফ থেকে কোনও সাড়া মেলেনি বলে জানা গিয়েছে। এমনকি টিকার টেন্ডার ডেকেও টিকা মেলেনি। ২ মে তৃতীয়বার ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। এরপর রাজ্য সরকার সেরাম ইন্সটিটিউটের কাছ থেকে কিছু টিকা কিনেছে। আর বাকিটা কেন্দ্রের তরফ থেকে বিনামূল্যেই এসেছে।
রাজ্যের পক্ষ থেকে যে টিকা জোগাড় করা সম্ভব নয়, সেটা কার্যত বুঝে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এরই মধ্যে মঙ্গলবার দেশের সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি লেখেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। তিনি ওই চিঠিতে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যগুলোকে টিকা বিতরণ করার আবেদন জানিয়েছেন। এই বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাকে নবীনবাবু ফোন করেছিলেন, উনি আর কেরলে মুখ্যমন্ত্রী চান বিনামূল্যে কেন্দ্র সরকার বিনামূল্যে টিকা দিন। রাজ্য সরকার টিকা কিনতে পারছে না। কেন্দ্রের উচিৎ বিনামূল্যে রাজ্যগুলোকে টিকা বিতরণ করা।”