বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘RBI-এর কাছে ১০ হাজার কোটি টাকার মতো অর্থ ঋণ চেয়ে একটি ফাইল পাঠিয়ে বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি সেই অর্থ না পেলে পরবর্তী মাসে সরকারি কর্মচারীদের বেতন পর্যন্ত দিতে সক্ষম হবে না রাজ্য সরকার’, এহেন মারাত্মক অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) আর এবার রাজ্যকে ধার না দেওয়া প্রসঙ্গে সরাসরি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে (Nirmala Sitaraman) আবেদন করে বসলেন তিনি। এই ঘটনায় বিজেপি নেতার দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল (Trinamool Congress)।
সাম্প্রতিক সময়ে দুর্নীতির পাশাপাশি আর্থিক সঙ্কটে জেরবার তৃণমূল কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে আরবিআই-এর কাছে ১০০০০ কোটি টাকা ঋণ চেয়ে বসেছে রাজ্য। শুভেন্দু অধিকারীর এহেন টুইট ঘিরে শোরগোল ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। পরবর্তীতে বিজেপি নেতা দাবি করেন, “ঋণ নেওয়ার সকল ঊর্ধ্বসীমা পার করে ফেলেছে তৃণমূল সরকার। ছয় লক্ষ কোটি টাকার মতো বোঝা রয়েছে তাদের ঘাড়ে।” এমনকি এই পরিস্থিতিতে রাজ্যকে যাতে আর ধার দেওয়া না হয়, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে আবেদন পর্যন্ত করেছেন শুভেন্দুবাবু।
এদিন রাজ্যের আর্থিক সঙ্কট প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “বর্তমানে রাজ্যের যা পরিস্থিতি, তাতে আগামী দিনে কি হতে চলেছে, কেউ বলতে পারবে না। বর্তমানে আরবিআই-এর কাছে ১০০০০ কোটি টাকা চেয়ে একটি ফাইল পাঠিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যদি সেই ফাইল পাশ না করে, তাহলে আগামী মাসে সরকারি কর্মীদের বেতন আটকে যেতে পারে।”
শুভেন্দু আরো বলেন, “পরিকাঠামোর উন্নয়ন করার জন্য ঋণ চেয়েছে রাজ্য। তবে সেই টাকায় আসলে ওরা সরকারি কর্মচারীদের বেতন এবং লক্ষ্মী ভাণ্ডারের অনুদান দেবে। এক্ষেত্রে অনেকেই অনুদান পাওয়ার উপযুক্ত নয়। ফলে এ কথা বলাই যায় যে, রাজ্যকে যদি ঋণ দেওয়া হয় তাহলে তারা কেন্দ্র থেকে পাওয়া টাকার অপব্যবহার করবে। আমি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, আরবিআই-কে পরামর্শ দিন, যাতে রাজ্যকে ওরা ঋণ না দেয়।”
শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এদিন কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তিনি বলেন, “বাংলা বিদ্বেষী, টাকা নিয়ে ধরা পড়ে যাওয়ার এবং জেল খাটার ভয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিঠে ছুরি মেরে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। এর আগেও অনেক বিজেপি নেতা এমন রয়েছেন, যারা দাবি করে এসেছে বাংলা যাতে টাকা না পায়। উনিও বর্তমানে এহেন আবেদন জানিয়েছেন। কেন্দ্রের কাছে আমাদের প্রাপ্য প্রচুর টাকা পড়ে রয়েছে। বিজেপি নেতারা চায় না, বাংলা তাদের অধিকারের টাকা পাক।”
উল্লেখ্য, একের পর এক দুর্নীতি ইস্যুতে অস্বস্তি বেড়ে চলেছে শাসক দলের। একইসঙ্গে অর্থনৈতিক দিক থেকেও বেসামাল সরকার। একের পর এক প্রকল্পে কেন্দ্র দ্বারা রাজ্য তার প্রাপ্য টাকা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ, আবার অপরদিকে রাজ্যের কোষাগারে পর্যাপ্ত অর্থ নেই বলেও একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর নিকট শুভেন্দুর আবেদন ঘিরে ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বাংলায়।