সেই রাতের ভিডিও ছিল এই নার্সের মোবাইলে! কেন করেছিলেন ডিলিট? মুখ খুললেন এতদিন পর…

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সোমবার আরজি কর (RG Kar) কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে কলকাতা হাইকোর্টকে এই মামলা শোনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তারপর থেকেই একের পর এক তৎপরতা দেখাতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। আজই এই মামলায় আরজি কর হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের ৪ জন নার্সকে তলব করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। ওই ৪ নার্সের মধ্যে একজন হলেন শম্পা দাস। তাঁর মোবাইলের একটি ভিডিও নিয়েই তৈরি হয়েছিল ব্যাপক জল্পনা।

মুখ খুললেন RG Kar মামলায় আড়ালে থাকা এই নার্স

তিলোত্তমার বাবা-মা শুরু থেকেই দাবি করে এসেছিলেন সিবিআই-এর তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তের ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করে তাঁরা জানিয়েছিলেন সিবিআই তদন্ত শুরু করলেও, ওই ঘটনার রাতে আরজি করে (RG Kar) কর্তব্যরত নার্স এবং চিকিৎসকদের সঠিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের আওত্তায় আনেনি সিবিআই। পরিবারের দাবি ছিল ওই রাতে ঠিক কি ঘটেছিল তার অনেকটাই জানেন তারা। তাই তাদের বয়ান তদন্তের আয়তায় আনা অত্যন্ত জরুরি বলেই দাবি করেছিলেন তিলোত্তমার বাবা মা।

জানা যাচ্ছে,আরজি কর (RG Kar) আন্দোলনের সময় যারা প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন বা সমর্থন জানিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যেও অনেকে এই নার্স শম্পা দাসের নাম করেছিলেন। সূত্রের খবর, এই শম্পা দাস নিজের ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন তার কাছে নাকি ওই রাতের একটি ভিডিও ছিল। যদিও তিনি নাকি বাধ্য হয়েছিলেন ভিডিওটি ডিলিট করতে। বিষয়টি নিয়ে সেই সময় ব্যাপক জল্পনা তৈরি হয়েছিল। আন্দোলন পর্বে অনেকেই এই নার্সের  কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলেন। কেউ কেউ তার বাড়ি পর্যন্ত গিয়েছিলেন বলে খবর। কিন্তু তিনি বারবার নিজেকে আড়াল করে রেখেছিলেন। তবে আজ সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দিতে হয়েছে তাকে। সে সময়েই তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন টিভি নাইন বাংলার।

দীর্ঘদিন আড়ালে থাকা ওই নার্সের কাছে এদিন প্রথমেই জানতে চাওয়া হয় তার কাছে কোনো ভিডিও ছিল কিনা? এবং তিনি তার মোবাইলে কোনও ছবি তুলে রেখেছিলেন কিনা? উত্তরে প্রথমে কিছু না বললেও পরে তাকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি নিজেকে এভাবে সরিয়ে রেখেছিলেন কেন? তখন তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আড়াল করার কী আছে?’

আরজি করের (RG Kar) ওই নার্সকে তারপর আরও প্রশ্ন করা হয় তার কাছে সেই রাতের কোনও ভিডিয়ো ফুটেজ ছিল কিনা? জানতে চাওয়া হয় সেটা উনি ডিলিট করে দিয়েছেন কিনা? জবাবে তিনি স্পষ্ট জানান ‘নাহ!’ এরপর তাকে প্রশ্ন করা হয় তিনি ইন্টার্নের অ্যাপ্রোনে রক্তের দাগ দেখেছিলেন কিনা? যদিও এই প্রশ্নের কোনো উত্তর মেলেনি। তবে তিনি জানান,’আমি ওখানে যা বলার বলেছি। আমাকে তদন্তের জন্য ওনারা ডেকেছেন, আমি অ্যাটেইন করেছি।’

আরও পড়ুন: ‘অতৃপ্ত আত্মা’! কার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠলেন কুণাল ঘোষ?

তিলোত্তমার বাবা-মায়ের প্রসঙ্গ টেনে ওই নার্সের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘তিলোত্তমার বাবা-মাও বলছিলেন, আপনার বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আপনার কাছে ভিডিয়ো ফুটেজ পর্যন্ত রয়েছে সেই রাতের…’ জবাবে তিনি জানান, ‘কী জানি! আমি কিছু জানি না…’ এরপর পাল্টা প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘কীসের ফুটেজ? কী ফুটেজ?’ আরজি করের (RG Kar) ওই নার্সকে এরপর প্রশ্ন করা হয় ‘তাহলে কি সবটা ভুল বলছেন তিলোত্তমার বাবা-মা? আপনি কি সবটাই হ্যান্ড ওভার করে দিয়েছেন?’ সব প্রশ্ন কার্যত উড়িয়ে দিয়ে জবাব আসে ‘কোথা থেকে কী খোঁজ পান, আপনারাই জানেন…’

RG Kar

উল্লেখ্য, ঘটনার দিন কর্তব্যরত ৭ জন নার্সকে তলব করেছিল সিবিআই। আজ তাদের মধ্যে চার জন আজ হাজিরা দিয়েছেন। জানা যাচ্ছে, এই ৪ নার্সদের মধ্যে তিন জন চেস্ট মেডিসিন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। আর সায়নী চক্রবর্তী নামে একজন ছিলেন অর্থোপেডিক বিভাগে কর্মরত।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর