বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: টানা দুবার ভারতের মাটিতে ওডিআই সিরিজ জেতার রেকর্ড গড়লো অস্ট্রেলিয়া। এর আগে ২০২০ সালে অ্যারন ফিঞ্চের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়ার বিরাট কোহলির ভারতীয় দলকে (Team India) পরাস্ত করে ওডিআই সিরিজ জিতেছিল। এবার অধিনায়ক হিসেবে একই কাজ করে দেখালেন স্টিভ স্মিথ। তার মগজাস্ত্রে ভর করেই চেন্নাইয়ে কঠিন ব্যাটিং উইকেটে ভারতকে ২২ রানে হারালো অজি বাহিনী।
মাঠে নামার আগেই চেন্নাইয়ের পিচের চরিত্র কেমন হতে পারে সেই ব্যাপারে আন্দাজ করে নিয়েছিলেন স্মিথ। সেই অনুযায়ী দল থেকে দুজন পেস বলার কে ছিঁড়ে ফেলে একজন অতিরিক্ত স্পিনার হিসাবে অ্যাস্টন অ্যাগারকে দলে আনেন তিনি। রান তাড়া করার সময় এক ওভারে পরপর হার্দিক এবং সূর্যকুমারকে ড্রেসিংরুমে ফিরিয়ে তার সেই সিদ্ধান্ত কতটা সঠিক ছিল সেটা প্রমাণ করে দেন অজি অলরাউন্ডার।
আজ টস ভাগ্যও সঙ্গ দিয়েছিল স্মিথকে। টসে যেতে তিনি প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি নিজে বাদে প্রত্যেক অজি ব্যাটার সেট হয়ে গিয়েও নিজের উইকেট সামলে রাখতে পারেননি। মাঝে এক সময় ১৩৫ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে লোয়ার অর্ডারে স্টোইনিস, ক্যারি, অ্যাবট, অ্যাগারদের ব্যাট হাতে লড়াই ৪৯ ওভারে ২৬৯ বুঝি পৌছে দিয়েছিল অজিদের। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মিচেল মার্স তৃতীয় ম্যাচেও অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ স্কোরার হন ৪৭ রান করে।
ভারতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করে তিনটি করে উইকেটে নিয়েছিলেন হার্দিক এবং কুলদীপ যাদব। কিন্তু মুম্বাইয়ে প্রথম ম্যাচের মতো চেন্নাইয়ে অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিংকে দুমড়ে দিতে পারেনি তারা। এরপর রান তারা করতে নেমে শুরুটা অত্যন্ত আগ্রাসী ভাবে করেছিলেন রোহিত শর্মা এবং শুভমান গিল। কিন্তু ১৭ বলে ৩০ রান করে রোহিত শর্মা আউট হওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। এই ম্যাচে মনে হচ্ছিল যে সিরিজে প্রথমবার শুভমান গিল বড় রানের দেখা পাবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ৩৭ রান করে জাম্পার বলে এলবিডব্লিউ হন। এরপর ধৈর্যশীল ব্যাটিং করে নিজের অর্ধশতরান সম্পূর্ণ করেছিলেন বিরাট কোহলি। তিনি এবং লোকেশ রাহুল একসময় যেভাবে ব্যাটিং করছিলেন তা দেখে মনে হচ্ছিল যে তারা এই ম্যাচ বার করে দেবেন ভারতের হয়ে।
কিন্তু রাহুল ৩২ রানের ব্যক্তিগত স্কোরে আউট হওয়ার পর কিছুটা চাপ বাড়ে ভারতের ওপর। নিজের অর্ধশতরান সম্পূর্ণ করার পর বেশি দূর এগোতে পারেন বিরাট কোহলিও। আছে তার ভুলেই অক্ষর প্যাটেলকে রান আউট হতে হয়। ৭২ বলে ৫৪ রান করে বড় শট মারতে গিয়ে নিজের উইকেট হারান বিরাট। হার্দিক পান্ডিয়া আগ্রাসি ব্যাটিং করে ৪০ বলে ৪০ রান করেন। কিন্তু অ্যাগার তাকে এবং সূর্যকুমার যাদবকে নিজের শেষ ওভারে পরপর দুই বলে ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচ এনে দেন অস্ট্রেলিয়ার হাতের মুঠোতে।
ওডিআই ক্রিকেটে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে পরপর তিন ম্যাচে গোল্ডেন ডাকে অর্থাৎ প্রথম বলেই শূন্য রানে আউট হওয়ার লজ্জা জনক এবং বিরল নজর করেন স্কাই। এরপর জাদেজা এবং শামি কিছুটা চেষ্টা করলেও কোন লাভ হয়নি। বাকি থাকতেই ২৪৮ রানের করে অলআউট হয়ে যায় ভারত। অসাধারণ বোলিং করে নিজের দশহারে মাত্র ৪৫ রান দিয়ে চারটি উইকেট নেন লেগস্পিনার জাম্পা। দুটি উইকেট নেন জাম্পা। একটি করে উইকেট নেন অ্যাবট ও স্টোইনিস। তবে গোটা সিরিজ জুড়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা স্টার্ক আজকে বড্ড বেশি শিখেছিলেন। এই ম্যাচ জিতে ভারতকে টপকে ওডিআই ক্রম তালিকায় শীর্ষস্থানে চলে গেল অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপের বছরে এই পারফরম্যান্স রোহিত শর্মাকে ভাবতে বাধ্য করবে।