বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ছয়দিন বিকাশ দুবেকে (Vikas Dubey) হন্যে হয়ে খুঁজছিল পুলিশ। শেষে মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়ন থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সেখান থেকে উত্তরপ্রদেশে নিয়ে আসার সময় রাস্তায় গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটলে বিকাশ দুবে পালানোর চেষ্টা করে। এরপরেই হয় এনকাউন্টার। বিকাশের এনকাউন্টারের পর গোটা কানপুর জুড়ে খুশির হাওয়া। বিকাশ দুবের গ্রামে মিষ্টিও বিলি করেছে গ্রামবাসী এমনকি পুলিশদের ফুলের মালা দিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে। বিকাশের তল্লাশি থেকে শুরু করে এনকাউন্টার পর্যন্ত সমস্ত অভিযান IPS অফিসার অমিতাভ যশের (amitabh yash) নেতৃত্বে হয়েছিল। অমিতাভ সেই পুলিশ অফিসার, যাকে গোটা উত্তর প্রদেশ এনকাউন্টার স্পেশ্যালিস্ট হিসেবে জানে।
অমিতাভ যশ (amitabh yash ips) ১৯৯৬ ব্যাচের IPS অফিসার। বিহারের অমিতাভ ১৯৯৬ এর সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশে যোগ দেন। এরপর থেকেই উনি নিজের দক্ষতামূলক কাজের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছে। বিহারের ভোজপুর জেলার বাসিন্দা অমিতাভ পাটনা থেকে পড়াশোনা করেন আর এরপরেও পড়াশোনার জন্য তিনি দিল্লী চলে যান। দিল্লীতে ক্যামেস্ট্রিতে বিএসসি অনার্স করেন তিনি। পড়াশোনায় প্রতিভাশালী অমিতাভ আইআইটি কানপুরে কেমিস্ট্রিতে মাস্টার্সের জন্য সুযোগ পেয়ে যান। এর সাথে সাথে তিনি পুলিশের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেই আর ১৯৯৬ সালে তিনি পুলিশে ভর্তি হন।
যখন জানা গেছিল যে, বিকাশ দুবে চম্বলে লুকিয়ে আছে। তখন অমিতাভকে তাঁকে ধরার দায়িত্ব দেওয়া হয়। আপনাদের জানিয়ে দিই, এই অফিসার চম্বলের দুর্গম জায়গায় অনেক কাজ করেছিলেন আগেই। আর চম্বল থেকে ডাকাত রাজ খতম করার জন্য ইনি সন্মানিতও হয়েছেন। এর আগে উনি এক দদুয়া নামের দুষ্কৃতীর এনকাউন্টার করেছিলেন। দদুয়া ওরফে শিব কুমার চম্বলে আতঙ্কের সাম্রাজ্য তৈরি করেছিল। ওই এলাকায় ভোটের সময় যেকোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীকেই ভোটে দাঁড়াতে দদুয়াকে অনেক টাকা দিতে হত। আর যদি টাকা না দেওয়া হত, তাহলে সে আর নির্বাচনে দাঁড়াতে পারত না।
দদুয়ার মাথার দাম উত্তর প্রদেশ পুলিশ পাঁচ লক্ষ আর মধ্যপ্রদেশ পুলিশ এক লক্ষ টাকা রেখেছিল। শোনা যায় যে, দদুয়া ২০০ এর বেশি মানুষকে হত্যা করেছিল। ২০০৭ এ দদুয়াকে মারার দায়িত্ব অমিতাভের কাঁধে দেওয়া হয়েছিল। আর দদুয়াকে মারার জন্য অমিতাভ চারিদিকে নিজের জাল বিছিয়ে নিয়েছিল। আর অনেক গোপন ভাবেই অপারেশন দদুয়া চালানো হয়েছিল। ২০০৭ এর জুলাই মাসে অবশেষে দদুয়াকে এনকাউন্টার করে নিকেশ করে ইউপি পুলিশ।
এরপরেই অমিতাভ যশের নাম শুনলে ভয়ে কাঁপত দুষ্কৃতীরা। অবস্থা এমন হয়ে গিয়েছিল যে, অমিতাভকে যেখানেই পোস্টিং করা হত সেখানকার সমস্ত দুষ্কৃতী এলাকা ছেড়ে পালাত। অমিতাভের বাবা রাম যশ সিংও একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন। আর অমিতাভও নিজের বাবার মতো একজন বড়সড় পুলিশ অফিসার হওয়ার ইচ্ছে রেখেছিল।