বাংলাহান্ট ডেস্ক: জি বাংলার ‘সুবর্ণলতা’ (subarnalata) ধারাবাহিকে ‘খোকা’ চরিত্রটিকে মনে আছে নিশ্চয়ই। অত্যন্ত জনপ্রিয় ধারাবাহিকটি লকডাউনের সময় আবারো ফেরানো হয়েছিল টিভিতে। ছোটবউয়ের ছেলে খোকার চরিত্রে অভিনয় করে টলি ইন্ডাস্ট্রি ও দর্শকদের নজর কেড়েছিলেন অরিন্দম প্রামাণিক (arindam pramanik)। বর্ধমানের অচেনা ছেলে টলিপাড়ায় এসে হয়ে উঠেছিলেন পরিচিত মুখ। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে তিনিই এখন মাছ বিক্রেতা।
করোনা বাস্তবিকই বদলে দিয়েছে বহু মানুষের জীবন। একটা বছর অরিন্দমের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে তাঁর নেশাকে, অভিনয়। সেই গত বছর লকডাউন শুরু হওয়াতে কলকাতা ছেড়ে মেমারির সোমেশ্বরতলার বাড়িতে ফিরে এসেছিলেন অরিন্দম। সেই শেষ, আর মাড়ানো হয়নি টলিপাড়ার চত্বর।
অরিন্দমের বাবা ছিলেন সবজি বিক্রেতা। কিন্তু ছেলে সেই পেশা বাছতে চাননি। তাঁর স্বপ্ন ছিল অভিনয় করার। সফলও হয়েছিলেন, কিন্তু করোনার জেরে ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে সেই স্বপ্ন। বাবা মা ও স্ত্রীকে নিয়ে টানাটানির সংসার অরিন্দমের। বাধ্য হয়েই এখন মেমারির স্টেশন বাজারে মাছের দোকান নিয়ে বসেন তিনি। বাবার সবজির দোকানটিই বদলে করেছেন মাছের দোকান।
গত বছর লকডাউনের সময় থেকেই এই ব্যবসা শুরু করেন অরিন্দম। প্রতিদিন সকালে ইলিশ, কাতলা, রুই, চিংড়ি মাছ নিয়ে দোকানে বসেন তিনি। মাঝে মাঝে ক্রেতাদের সিরিয়াল, ছবির সংলাপও বলে শোনান। এটাই এখন অরিন্দমের পরিবারের একমাত্র রোজগারের উৎস।
সেই ক্লাস ইলেভেনে পড়ার সময় নাট্যকার তথা নির্দেশক চন্দন সেনের নাটকের দলে যোগ দিয়েছিলেন অরিন্দম। ২০১১ তে সুবর্ণলতা ধারাবাহিকে খোকা চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। তাঁর সাবলীল অভিনয় নজর কেড়েছিল অনেকেরই। একে একে রাশি, অগ্নিপরীক্ষার মতো সিরিয়াল ছাড়াও তোর নাম, হারকিউলিস ছবিতেও অভিনয় করেন অরিন্দম।
লকডাউন ওঠার পর ৫০ শতাংশ শিল্পী কলাকুশলী নিয়ে যখন আবার শুটিং শুরু হল তখন ডাক এসেছিল অরিন্দমের। কিন্তু স্বপ্নের কাছে ফিরে যাওয়ার সাহস পাননি তিনি। অরিন্দমের কথায়, “গত এক বছর ধরে মাছের ব্যবসাটা অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছি। তাই এটা ছেড়ে স্বপ্নের পেশায় যাওয়ার ঝুঁকিটা আর নিতে পারিনি।”