বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ক্রমশ্যই গড়াচ্ছে বিতর্কের জল। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে প্রবীণ চিত্রকর শুভাপ্রসন্ন (Shuvaprasanna) তার ভাষণে বাংলা ভাষায় ‘পানি’ বা ‘দাওয়াত’-এর মতো শব্দের অনুপ্রবেশ নিয়ে নিয়ে উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন। দেশপ্রিয় পার্কের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee)। শুভাপ্রসন্নর সঙ্গে সহমত নয় বলে সঙ্গে সঙ্গেই জানান মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চেই নিজের ভিন্নমত প্রকাশ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেখানেই কথার শেষ হলেও বিতর্ক থেমে থাকেনি।
বুধবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এই প্রসঙ্গে কথা উঠলে নিজের অবস্থানেই অনড় থেকে শুভাপ্রসন্ন বলেন, মমতার বক্তব্য ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’, তার ‘রাজনৈতিক অসুবিধা’ রয়েছে। কিন্তু নিজের বক্তব্যকে সঠিক বলে দাবি করেন শুভাপ্রসন্ন। পাশাপাশি মাতৃভাষা দিবসে তার সঙ্গে একই মঞ্চে থাকা কবি সুবোধ এবং প্রাবন্ধিক নৃসিংহপ্রসাদকে ‘তেলবাজ’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সূত্রের খবর, এই নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও চরম অপমানিত হয়েছেন তৃণমূলপন্থী দুই শিল্পী। ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি তারা মুখ্যমন্ত্রীর কানে পৌঁছেছেন বলেও জানা গিয়েছে।
এরপরই এই বিতর্কে নাম লেখান তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘শুভাপ্রসন্ন যদি সত্যিকারের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভানুধ্যায়ী হন, তাহলে তার উচিত এই অবাঞ্ছিত মন্তব্যগুলি বন্ধ করা। বাংলা ভাষা একটি স্রোত।’ পাশাপাশি কুণাল ঘোষ বলেন, কথায়, শুভাপ্রসন্ন বিষয়টি নিয়ে ‘অত্যন্ত বাড়াবাড়ি’ করছেন। সঙ্গে কটাক্ষ করে বলেন,’আমাদের দলের কারও ওনার সঙ্গে কথা বলা উচিত, ওনার কোনও জমি বা কমিটির পদ লাগবে কি না… তাহলে সব ঝামেলাগুলো মিটে যায়।’
এরপর কুণাল পাল্টা জবাব শুভাপ্রসন্ন বলেন, “যাঁদের নিজেদের নানা রকম চাহিদা বা অভাব, তাঁরাই এমন বলে বেড়ান।” তবে এরপর তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, সেদিনই শুভাপ্রসন্নের সঙ্গে কুণালের দীর্ঘক্ষণ কথা হয়। সেই সময় ক্ষোভের মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে কুণাল ‘অপশব্দ’ প্রয়োগ করেন বলেও জানা যায়।
পরে অবশ্য এই বিষয়ে আফসোস করে কুণাল বলেন, ‘শুভা’দা আমার চেয়ে বয়সে বড়। উত্তেজনার বশে আমি কিছু কথা বলে ফেলেছি। যেটা হয়তো ঠান্ডা মাথায় বলতাম না। আমার হয়তো সেটা বলা উচিত হয়নি।’ পাশাপাশি শুভাপ্রসন্নও বলেন, ‘কুণাল আমার ভাইয়ের মতো। ও কিছু কথা বলেছিল, যেটা শুনতে ভাল লাগেনি। রেগে গিয়ে বলেছিল হয়তো। তবে পরে সব মিটমাট হয়ে গিয়েছে।’