বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের নির্বাচনে অন্য দলবদলু নেতারা তেমন ভালো প্রদর্শন না করতে পারলেও বিজেপির জন্য ব্যতিক্রম হয়ে উঠেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূলের বিপুল জয়ের মধ্যেই নিজের বিধানসভা নন্দীগ্রামে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জিকে পরাজিত করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে হারানোর পর দল ভালো ফল না করলেও দলে কাঁধ অনেকটাই চওড়া হয়েছে শুভেন্দুর। যার জেরে রাজ্যে বিরোধী দলনেতা হিসেবেও উঠে এসেছেন তিনি। এমনকি প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকেও উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে তাকে। এহেন শুভেন্দু অধিকারীকে সোমবার রাতে হঠাৎই তলব করেছিলেন দিল্লি। অনুমান ছিল হয়ত বা বাংলার রাজনৈতিক হিংসার উপর ভিত্তি করে হতে পারে আলোচনা।
কিন্তু দুটি বিষয় জল্পনার মাত্রা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিল বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের। প্রথমত সকালে গুজরাটের মোদি ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতা মনসুভ মন্ডাভিয়ার সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই সাক্ষাৎ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এটি কোন সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়। তারপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে প্রায় মিনিট পনেরো ধরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন শুভেন্দু এবং অমিত শাহ। এই বৈঠকও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
অনেকের মতে, শুধুমাত্র বাংলায় নির্বাচন-পরবর্তী হিংসার বিষয় নয় বৈঠকের উঠে এসেছে আরো অন্য বিষয়ও। রাজ্যে বিরোধী দলনেতা হিসেবে ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠলেও অতীতে বেশকিছু দাগ থেকে গিয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর কেরিয়ারে। যার জেরে বিজেপির একাংশেও তাকে নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে যথেষ্ট। নারদা কান্ড তো বটেই, এছাড়াও শুভেন্দুর নামে ত্রানের ত্রিপল চুরি করারও অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই তার নামে রয়েছে দুটি ফৌজদারি মামলা। যার জেরে একদিকে যেমন আশঙ্কিত শুভেন্দু নিজে, তেমনি আশঙ্কিত বিজেপির অন্দরমহলও।
এর ওপর আবার গ্রেফতার হয়েছেন শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাখাল বেরা ও চঞ্চল নন্দী। পুলিশের দাবি, তাদের নামে রয়েছে চাকরির নামে টাকা প্রতারণা করার অভিযোগ। তাদের মাধ্যমেই একটা বড় অঙ্কের টাকা নাকি পৌঁছেছে তৎকালীন তৃণমূলের অনেক রাঘববোয়ালের কাছেও। যার জেরে আশঙ্কা বাড়ছে জড়িয়ে যেতে পারে শুভেন্দুর নামও। এমতাবস্থায়, এই বৈঠক তাই ভীষন ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তরফেও বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে কিছু প্রকাশ্যে আনা হয়নি। যদিও তার টুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে দেখা যায় খোশমেজাজে গল্প করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে কি আলোচনা হল এই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে তা নিয়ে জল্পনা ক্রমশই বাড়ছে। কারণ শুভেন্দু অধিকারীকে দিল্লিতে ডাকার কারণ স্পষ্ট নয় রাজ্য বিজেপির কাছেও। একথা আগেই জানিয়েছিলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আর তাই বৈঠক কতটা তাৎপর্যপূর্ণ হল তা বুঝতে নজর রাখতে হবে আগামী দিনের দিকেই।