বাংলাহান্ট ডেস্ক : পুরভোটের আগেই একাধিক পুরসভার দখল নিয়েছে তৃণমূল। কার্যতই বিনা যুদ্ধেই জয়লাভ করেছে তারা। এবার এই জয়কে নিয়েই হুঙ্কার ছাড়লেন শুভেন্দু অধিকারী।প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধী দল, ফলে ভোটের আগেই নজিরবিহীন ভাবে একের পর এক পুরসভার দখল নিয়ে চলেছে তৃণমূল। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ অন্যরকম। বুধবার সকাল থেকেই মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত গোটা রাজ্যের পরিস্থিতি।
বিরোধীদের অভিযোগ, কোথাও তালাবন্ধ করে আটকে রাখা হয় প্রার্থীকে, কোথাও আবার ছিঁড়ে ফেলা হয় মনোনয়ন পত্র৷ বাড়িতে পুলিশ নিয়ে গিয়ে প্রার্থীদের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলেই অভিযোগ উঠছে। বিরোধীদের দাবি এভাবে প্রথমে ওয়ার্ড গুলিকে প্রতিদ্বন্দ্বী শূন্য করছে তৃণমূল৷ তারপর সেখানে নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা করে পুরসভার দখল নিচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বজবজ এবং সাঁইথিয়া পুরসভা দখল করেছে রাজ্যের শাসক দল।
এবার বিরোধীহীনতার বিরোধীতায় নামলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন তিনি দাবি করেন এভাবে হওয়া ভোট বাতিল করা হোক। তিনি বলেন, ‘ যেভাবে শুধুমাত্র বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে না দিয়ে পুরসভা দখল করছে তৃণমূল তা পুরোপুরি ভাবে অন্যায়। এই ভোট বাতিল করা হোক। প্রয়োজনে আদালত অবধি যাওয়া যাবে। এর বিচার হওয়া দরকার। এই ঘটনায় আবারও স্পষ্ট তৃণমূলে কোনো গণতন্ত্র নেই।
শুভেন্দুর সঙ্গে এই ইস্যুতে সরব হয়েছেন রাহুল সিনহাও। বিজেপি নেতা বলেন, ‘তৃণমূলের বড় বড় নেতারা এবার বিধানসভা ভোটের আগে থেকে বলতে শুরু করেন, পঞ্চায়েতের সময় আমরা যে উস্কানি দিয়েছিলাম তা ভুল হয়েছিল। আমরা তা সংশোধন করব। সংশোধন যে তৃণমূলে হবে না, এটা যে গুণ্ডা মস্তানের দল তা এবার প্রমাণ হল।’ এভাবে গণতন্ত্রকে হত্যা করলে আগামিদিনে তার ফল ভুগতে হবে তৃণমূলকে, এই হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
এই বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়ার অভিযোগ অবশ্য গতকালই অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তৃণমূল নেতা গৌতম দাশগুপ্তের দাবি বিরোধীদেরর আটকানো হলে তারা একটাও ওয়ার্ডে প্রার্থী দিতে পারত না। কিন্তু সেরকমটা হয়নি। বিজেপিই সব ওয়ার্ডে প্রার্থী দিতে পারেনি বলেই দাবি করেছেন তিনি।
জানা যাচ্ছে, বজবজ পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ৮টি তে প্রার্থী দিয়েছিল বিরোধীরা। ১২টি ওয়ার্ডে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য কেউই নেই। একই অবস্থা প্রায় সাঁইথিয়ায়। সেখানের ১৬ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ডেই একজন বিরোধী প্রার্থীও দাঁড়াননি তৃণমূল বিপরীতে। অন্যদিকে দিনহাটায় ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭টিতে প্রার্থীই দেয়নি কোনো দল। ফলে সেখানে ১,৩,৭,৯,১২,১৫,১৬ এই ওয়ার্ডগুলিতে জয় হয়েছে তৃণমূলের। শাসকদের এহেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় গদি ছিনিয়ে নেওয়া কার্যতই রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়াচ্ছে বিরোধী শিবিরে।