রেস্তোরাঁয় করতেন কাজ, প্রতিদিন মিলত ৭ টাকা! আজ ৩ কোটির ব্যবসা দাঁড় করালেন অমরদীপ, চমকে দেবে কাহিনি

বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রত্যেক সফল (Success Story) মানুষের সফলতার মধ্যে থাকে এক অদম্য লড়াইয়ের কাহিনি। জীবনযুদ্ধের প্রতিটি প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে রেখেই নিজের লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে এগিয়ে চলেন তাঁরা। আর এইভাবেই তাঁরা পৌঁছে যান সফলতার শীর্ষে। এদিকে, তাঁদের ওই সফলতার কাহিনি (Success Story) উদ্বুদ্ধ করে বাকিদেরকেও। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা ঠিক সেইরকমই এক লড়াকু ব্যক্তির প্রসঙ্গ আপনাদের সামনে উপস্থাপিত করব। বিহারের বাসিন্দা অমরদীপ কুমার একটা সময়ে দিনে মাত্র ৭ টাকা উপার্জন করতেন। কিন্তু, কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার ওপর ভর করে তিনি এখন ৩ কোটি টাকার ব্যবসা গড়ে তুলেছেন। অমরদীপ সমস্তিপুরে ধূপকাঠির কারখানা চালান। শৈশব থেকেই অভাবের সাথে লড়াই করে আসা অমরদীপ বর্তমানে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন এবং তৈরি করেছেন নজিরও।

এইভাবে সফল (Success Story) হয়েছেন অমরদীপ:

রেস্তোরাঁয় প্রতিদিন ৭ টাকা পেতেন: অমরদীপের জন্ম বিহারের এক দরিদ্র পরিবারে। ছোটবেলা থেকেই তাঁকে প্রবল আর্থিক সঙ্কটের সম্মুখীন হতে হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত তিনি একটি স্থানীয় রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন। যেখানে তিনি প্রতিদিন মাত্র ৭ টাকা পেতেন। এই সামান্য পরিমাণ অর্থ তাঁর এবং পরিবারের জন্য যথেষ্ট ছিল না। তিনি সবসময়ই বড় কিছু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, আর্থিক সীমাবদ্ধতা তাঁর সেই ভাবনায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল।

   

কাজের পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যান: ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত রেস্তোরাঁয় কাজ করার সময়, অমরদীপ ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পাশাপাশি টিউশনও পড়িয়েছিলেন। পড়াশোনার প্রতি তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষা তাঁকে প্রথমে পাটনা এবং তারপর দিল্লিতে নিয়ে যায়। যেখানে তিনি সিভিল সার্ভিসে যোগদানের লক্ষ্য রেখেছিলেন। যদিও, সেখানে সফল হননি তিনি।

Success Story Of Amardeep Kumar.

সমাজের জন্য কিছু করার ইচ্ছে: জানিয়ে রাখি, জ্ঞানের অন্বেষণ অমরদীপকে দক্ষিণ কোরিয়া এবং থাইল্যান্ডের বেসরকারি সংস্থাগুলির পাশাপাশি বেঙ্গালুরুতে অ্যাকাডেমিক কার্যকলাপ সহ অনেক জায়গায় নিয়ে যায়। বেঙ্গালুরুতে কর্পোরেট জগতে কাজ করার সময় তিনি মানসিক সন্তুষ্টি পাননি। বরং, স্থানীয় সমাজকর্মীদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, তিনি সুবিধা বঞ্চিতদের সাহায্য করার প্রবল ইচ্ছে অনুভব করেছিলেন। এদিকে, কর্মক্ষেত্রে ভালো বেতন পেয়েও নিজেকে অসম্পূর্ণ মনে করতে থাকেন।

আরও পড়ুন: ১-২ দিন নয়, অগাস্টে ১৩ দিন বন্ধ থাকবে ব্যাঙ্ক! দেখে নিন ছুটির তালিকা

শুরু করেন ধূপের কারখানা: অমরদীপের স্ত্রী হলেন ড: হেমলতা সিং। তিনি বায়োকেমিস্ট্রিতে পিএইচডি করেছেন। হেমলতা অমরদীপকে বিহারে ফিরে এসে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করেন। এমতাবস্থায়, অমরদীপ তাঁর নিজের এলাকা রামপুর সামথুতে ফিরে আসেন। সেখানে এসে তিনি একটি NGO-র ভিত্তি স্থাপন করেন। ২০১৯ সালে, অমরদীপ ৬ লক্ষ টাকার একটি ছোট বিনিয়োগে “মোরাং দেশ ভেঞ্চার প্রাইভেট লিমিটেড” প্রতিষ্ঠা করেন।

আরও পড়ুন: তাকিয়ে দেখবে গোটা বিশ্ব! ভারতের আকাশে দাপট দেখাবে দেশ-বিদেশের ফাইটার জেট, দিন ঘোষণা “তরঙ্গ শক্তি”-র

এই প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ধরণের ধূপকাঠি তৈরি করে। তাঁর এই উদ্যোগে এখন ১০০ জনেরও বেশি স্থানীয় শ্রমিক নিযুক্ত রয়েছেন। শুধু তাই নয়, এই সংস্থার বার্ষিক টার্নওভার হল ৩ কোটি টাকা। এদিকে, অমরদীপের কোম্পানি মন্দিরের বর্জ্য ফুল ব্যবহার করে পরিবেশ সুরক্ষার প্রচারও করে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, অমরদীপের এই সফলতার কাহিনি (Success Story) তাঁদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে যাঁরা কঠিন পরিস্থিতির কারণে হাল ছেড়ে দেন। অমরদীপ প্রমাণ করে দেখিয়েছেন যে, দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি ও কঠোর পরিশ্রমে যে কোনও কিছুই করা সম্ভব।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর