৪,০০০ টাকা দিয়ে শুরু করেন ব্যবসা! আজ প্রতিমাসে হচ্ছে ২.৫ লক্ষের আয়, সবাইকে চমকে দিলেন মা-ছেলে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রত্যেক সফল মানুষের সফলতার মধ্যে থাকে এক অদম্য লড়াইয়ের কাহিনি (Success Story)। পাশাপাশি, থাকে সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে এগিয়ে যাওয়ার যাওয়ার তাগিদ। এমতাবস্থায়, তাঁদের সেই উত্তরণের কাহিনি উদ্বুদ্ধ করে বাকিদেরকেও। বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা ঠিক সেই রকমই এক লড়াকু মা-ছেলের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব। যাঁরা আজ প্রত্যেকের কাছেই বিরাট নজির তৈরি করেছেন। মধ্যপ্রদেশের অশোক নগরের বাসিন্দা ৪৩ বছর বয়সী সরোজ প্রজাপতি তাঁর ছেলে অমিতের সহায়তায় আচারের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। বর্তমানে তাঁরা প্রতি মাসে আড়াই লক্ষ টাকা আয় করছেন। প্রাথমিকভাবে, তাঁরা বাড়ির রান্নাঘর থেকে মাত্র ৪,০০০ টাকা দিয়ে “মমস ম্যাজিক পিকল ইন্ডিয়া” শুরু করেছিলেন। এখন সরোজের আচারের ব্যবসা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে তিনি স্থানীয় ৩০ জন মহিলাকে কাজের সুযোগ দিয়েছেন।

এইভাবে সফল (Success Story) হলেন মা-ছেলে:

এইভাবে শুরু হয় সফর: দুই সন্তানের মা এবং গৃহিণী হলেও সরোজ সবসময় নিজে বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখতেন। তিনি একটি টিভি শোতে দেখেছিলেন যে দুই গৃহিণী তাঁদের বাড়িতে আচার তৈরি করে ব্যবসা করছেন। তখন তিনি সেখান থেকে এই ব্যবসার ধারণা পান। তাঁর তৈরি আমের আচারের চাহিদা ছিল আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের মধ্যে। এদিকে, সরোজের ১৯ বছর বয়সী ছেলে অমিত প্রজাপতি একটি ব্র্যান্ড বিল্ডিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি চালান। গত বছরের জুনে অমিত তাঁর মায়ের ব্র্যান্ড “মম’স ম্যাজিক পিকল ইন্ডিয়া”-র জন্য সোশ্যাল মিডিয়া পেজ তৈরি করেছিলেন। সেখানেই বিজ্ঞাপনের ভিত্তিতে তাঁরা শীঘ্রই অর্ডার পেতে শুরু (Success Story) করেন।

Success Story Of Saroj Prajapati and Amit Prajapati.

প্রতিমাসে ২.৫ লক্ষ টাকা আয়: সরোজ আচার তৈরি এবং প্যাক করতেন এবং অমিত তাঁকে ব্র্যান্ডিং, লেবেল এবং শিপিংয়ে সহায়তা করতেন। এইভাবেই কয়েক মাসে তাঁর ব্যবসা বৃদ্ধি পায় এবং অন্যান্য মহিলাদের নিয়োগ করা হয়। আজ, ৪৩ বছর বয়সী সরোজ এই ব্যবসা থেকে প্রতি মাসে ২.৫ লক্ষ টাকা আয় (Success Story) করেন।

আরও পড়ুন: বিরাট দাপট, পাকিস্তানের এই হিন্দু রাজার সামনে টু-শব্দ করতে পারেন না মুসলমানরাও, চমকে দেবে পরিচয়

তিনি ১৫ বছর বয়স থেকে আচার তৈরি করছেন: মধ্যপ্রদেশের বারখেদি গ্রামে জন্মগ্রহণকারী সরোজ ছিলেন তাঁর বাবা-মায়ের ৯ জন কন্যার একজন। তাঁর বাবা-মা ছিলেন কৃষক। পড়াশোনার তেমন সুযোগ পাননি তিনি। সরোজ তাঁর মায়ের কাছ থেকে আচার তৈরি শেখেন। ১৫ বছর বয়সে প্রথমবারের মতো কাঁচা আমের আচার তৈরি করেন সরোজ। তখন তিনি আদৌ জানতেন না একদিন এই আচার তৈরির মাধ্যমেই সফল (Succese Story) হবেন তিনি।

আরও পড়ুন: “বাংলাদেশে ফিরলে তাঁকে স্বাগত, তবে….”, হাসিনার প্রত্যাবর্তনের প্রসঙ্গে অন্তর্বতী সরকার রাখল বিশেষ শর্ত

বিভিন্ন ধরণের আচার তৈরি করেন: ২০ বছর বয়সে সরোজ বিয়ে করেন। বিয়ের পর তিনি শাদোরায় চলে আসেন। শীঘ্রই সরোজ সংসারের দায়িত্ব এবং দুই সন্তানের দেখাশোনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে, তাঁর স্বামী তাঁকে সবসময় উৎসাহ দিতেন। তিনি আট বছর গ্রামের সরপঞ্চও ছিলেন। সরপঞ্চের পদ ছাড়ার পর গৃহস্থালির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সরোজ। তারপর তাঁর ২ সন্তান কলেজে পড়তে চলে যায়। সেই সময়ে তিনি কিছু একটা করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। প্রথমে আমের আচার তৈরি করলেও তারপর তিনি কাঁচা লঙ্কা, লেবু, সবজি এবং আরও বিভিন্ন আচার তৈরি করতে শুরু করেন। বাজারে পাওয়া অন্যান্য আচারের তুলনায় তাঁর তৈরি আচারের দাম কম। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সমস্ত আচারই কেমিক্যাল এবং প্রিজারভেটিভ ছাড়াই তৈরি করা হয়।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর