‘WBCS’ শব্দটাই ছিল অজানা! পড়েছিলেন বি.ফার্ম নিয়ে, কোচিং ছাড়াই আজ BDO’র চেয়ারে গার্গী দাস

বাংলাহান্ট ডেস্ক : গার্গী দাস, এখন তিনি ব্যারাকপুর ১-এর বিডিও (Block Development Officer)। কিন্তু এই মানুষটাই একদিন জানতেন না ‘WBCS’ (West Bengal Civil Service) শব্দটা। কিন্তু তারপরেও তিনি আজ ডব্লিউবিসিএস অফিসার। শিয়ালদার টাকি গভর্মেন্ট গার্লস হাই স্কুলের থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় বি ফার্ম নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। এরপর মাস্টার্স।  স্নাতকোত্তরের শেষ বর্ষে বাবাকে হারান তিনি। তাই হাতছাড়া হয় ক্যাম্পাসিংয়ে পাওয়া চাকরি।

এরপর টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেসে চাকরি পান গার্গী। সাড়ে তিন বছর চাকরি করার পর সরকারি চাকরির জন্য পড়াশোনা করতেন তিনি। জানলে অবাক হবেন, বিডিও হওয়ার আগে দুটি সরকারি চাকরি পান গার্গী। কেন্দ্রের কোস্টাল ডিপার্টমেন্টে চাকরি পান। ডায়মন্ড হারবার হেড কোয়ার্টারে ছিল পোস্টিং। কিন্তু তাঁর আশা ছিল, এমন চাকরি যেটা চাকরি ছাড়াও আরোও বেশি কিছু হবে।  শুরু হয় WBCS এর প্রস্তুতি। সরকারি চাকরি পেলেও সেটাই ছিল তাঁর লক্ষ্য।

   

আরোও পড়ুন : এবার ব্লুটুথ স্পিকার কাজ করবে পাওয়ার ব্যাঙ্কেরও! অবাক হলেন? নতুন এই ডিভাইসটি আনল Apple

এরপর ২০১৪ সালে WBCS গ্রুপ C-তে তৎকালীন সাব-অর্ডিনেট ল্যান্ড রেভিনিউ সার্ভিসে রেভিনিউ অফিসার হিসেবে চাকরি করেন গার্গী। ২০১৭ সালে চাকরিতে যোগ দেন তিনি। ২০১৮ সালে পর্যন্ত এই চাকরি করেন।  ২০২০ সালে প্রথম পোস্টিং পান হাওড়ার ডোমজুড়ে। ব্যারাকপুর ১- ব্লকে দ্বিতীয় বার পোস্টিং হয় তাঁর। এক সময় চাকরি সম্বল পড়াশোনা করতে হিমশিম খেতেন তিনি। কোচিং ছাড়া পড়াশোনা করেছেন। কিন্তু লক্ষ্য পূরণের জন্য ইচ্ছা থাকলে সবই সম্ভব। তার জন্য প্রয়োজন ইচ্ছাশক্তি আর ধৈর্য।

আরোও পড়ুন : রেশন নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগ! মহিলাকে জুতোর মালা পরিয়ে উচিত শিক্ষা দিলেন গ্রামবাসীরা

চাকরি করতে করতে পড়াশোনা করা ভীষণ কঠিন।  সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন গার্গী। দীর্ঘ আট বছর ধরে অনেক ইচ্ছে বিসর্জন দিয়েছেন তিনি। নিজের স্ট্রাগল প্রসঙ্গে গার্গীর বলেন, “যে কোনও বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতে করতে সময় বের করা বেশ কঠিন একটা বিষয়। খুব কম ক্ষেত্রেই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে অন্য কর্মক্ষেত্র বেছে নিতে পারে। সাড়ে তিন বছর একটা চাকরি করতে করতে আরেকটা চাকরি জন্য লেগে থাকা কঠিন।”

Untitled design 20240626 201159 0000

গার্গীর বলেছেন, “সবমিলিয়ে ৬ বার WBCS-এ বসেছি। প্রথম ২০১৩ সালে WBCS পরীক্ষা দিই। কিন্তু তাতে প্রিলিমিনারিতেও উত্তীর্ণ হতে পারিনি। ২০১৪ সালে প্রথমবার ক্লিয়ার করি। ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭ সালে ফের পরীক্ষায় বসি। কিন্তু কোথাও গিয়ে সেই সিরিয়াসনেসটা চলে গিয়েছিল। ২০১৮ সালটা ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর। ওই বছরই WBCS (Executive) -এ পাই।” তাঁর বাড়িতে এই ক্ষেত্রে কোনওদিন কেউ চাকরি করেনি। কিন্তু গার্গী তাঁর পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছেন নিজের অদম্য চেষ্টায়।

Avatar
Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর