বাংলাহান্ট ডেস্ক : দুটো দিন কাটলেই কালীপুজো (Kalipujo)। দীপান্বিতা কালীপূজা এবং একই সঙ্গে আলোর উৎসব। দুর্গাপুজোর পর এই দিনটার জন্য সারা বছরের অপেক্ষা থাকে মানুষের। শক্তিপীঠগুলিতে উঠতে পড়ে ভিড়। অনেক টেলি তারকার বাড়িতেও পুজো হয়। ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুচিস্মিতা চৌধুরীর বাড়িতে বিগত ২০০ বছর ধরে হয়ে আসছে কালীপুজো (Kalipujo)। বছরের এই বিশেষ দিনে থাকে সাজো সাজো রব, পুজোর তোড়জোড়। কয়েক শতাব্দী পুরনো পুজোর নানান অজানা ঘটনা জানালেন অভিনেত্রী।
শতাব্দী পুরনো কালীপুজো (Kalipujo) সুচিস্মিতার বাড়ির
এই পুজো সুচিস্মিতার শ্বশুরবাড়ির। বর্তমানে বেহালার বাড়িতে পুজো হলেও এই পুজো শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে। সংবাদ প্রতিদিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সুচিস্মিতা জানান, তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা ঢাকা বরিশালের লোক। সেখানেই মায়ের প্রতিষ্ঠা হয়। দেশভাগের পর এপার বাংলায় আসার সময়ে মা কালীকেও (Kalipujo) সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন সুচিস্মিতার শাশুড়ি। পুজোর বয়স ২০০ বছর হলেও অভিনেত্রী জানান, দেবীমূর্তির বয়স প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশি। দক্ষিণেশ্বরের মা কালীর আদলেই তাঁদের বাড়ির মা ভবতারিণীর কষ্টিপাথরের মূর্তি। শুধু আকারে ছোট।
আরো পড়ুন : ‘অনেক উঁচুতে উঠে…’, কালীপুজোর আগেই বড়মায়ের স্বপ্নাদেশ! শ্রুতির অভিজ্ঞতা শুনলে কাঁটা দেবে গায়ে
দীপাবলিতে ধুমধাম করে হয় পুজো
ছোট থেকেই ঈশ্বর বিশ্বাসী সুচিস্মিতা। তাঁর বাপের বাড়িতে হয় দুর্গাপুজো। বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতে এসে দেখেছেন ধুমধাম করে কালীপুজো (Kalipujo)। এমনিতে প্রতিদিনই মায়ের নিত্যপুজো হয়। পাশাপাশি পূজিত হন ইষ্টদেবতা মহাদেব। প্রতি অমাবস্যায় মাকে দেওয়া হয় ভোগ। দীপাবলির পুজো (Kalipujo) অবশ্য খুব ধুমধাম করে হয়। কালীঘাট থেকে লোক এসে মাকে সাজান। পড়ে নতুন রঙ, নতুন বেনারসী, বছরভর মানতের দেওয়া সোনার গয়নায় সেজে ওঠেন মা। সমস্ত উপাচার মেনে খুব নিষ্ঠাভরে হয় পুজো। অভিনেত্রীর ছেলে বউমা লন্ডন থেকে যোগ দেন পুজোয়।
আরো পড়ুন : কার্তিকের মুখে কাঞ্চন-স্তুতি, ভুলভুলাইয়া ৩-তে মল্লিক ম্যাজিক! গর্বে বুক ফুলল শ্রীময়ীর
ভোগে কী কী আয়োজন থাকে
কালীপুজোয় (Kalipujo) হয় ভোগের এলাহি আয়োজন। কী কী না থাকে মেনুতে! খিচুড়ি, পাঁচ রকম ভাজা, লাবড়া, ফুলকপির তরকরি, পোলাও, আলুর দম, পনিরের সঙ্গে শেষ পাতে থাকে চাটনি এবং পায়েস। পঞ্চব্যঞ্জন সাজিয়ে ভোগ দেওয়া হয় মাকে। সুচিস্মিতার কথায়, এই পুজোকে (Kalipujo) চৌধুরী বাড়ির বড় উৎসব বলেন তাঁরা। কম অলৌকিক ঘটনাও জড়িয়ে নেই এই পুজোর সঙ্গে।
এ প্রসঙ্গে করোনার সময়কার একটি ঘটনা ভাগ করে নেন সুচিস্মিতা। সেসময় মৃত্যুকে খুব কাজ থেকে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন তিনি। ওই সময়েই অভিনেত্রী উপলব্ধি করেন শিব এবং শক্তির সহাবস্থান। মহাদেব এবং মা কালীর থেকে অনেক শক্তি পেয়েছিলেন তিনি। তাঁর মনে হয়েছিল, কেউ তাঁর পিঠে হাত রেখে আশ্বাস দিচ্ছে। সে সময় থেকেই মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করতে শুরু করেন সুচিস্মিতা। আরেক দিনের ঘটনার কথা অভিনেত্রী জানান, পুজোর সময়ে তাঁর হাত থেকে শিবলিঙ্গ পড়ে গিয়ে দু টুকরো হয়ে গিয়েছিল। আবার সেই সময়ই হঠাৎ করে বেনারস থেকে তাঁর কাছে নির্দেশ আসে নর্মদেশ্বর মহাদেব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। চিন্তায় পড়েছিলেন সুচিস্মিতা। ঠিক তখনই তাঁর এক পরিচিত তাঁকে উজ্জয়ন মহাকালেশ্বর থেকে নর্মদেশ্বর মহাদেব এনে দেন। এ তাঁর কাছে অলৌকিক ঘটনা বলেই মন্তব্য করেন সুচিস্মিতা।