বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘দলে বড় সাংগঠনিক রদবদল হচ্ছে। আনুগত্য আর নয়, পারফরম্যান্সই শেষ কথা’। সম্প্রতি একথা শোনা গিয়েছিল তৃণমূল সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) মুখে। রাজ্যের যে সকল পুরসভা এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) ফলাফল খারাপ হয়েছে, সেখানে বদল আনা হবে এখন জল্পনা তুঙ্গে। তবে এরই মধ্যে আরেক জায়গায় বড়সড় রদবদলের জল্পনা বেশ জোড়ালো হয়ে উঠেছে এই মুহূর্তে। তা হল ছাত্র পরিষদের ক্ষেত্রে। দিন কয়েক থেকে ‘তৃণাঙ্কুর’ অর্থাৎ TMCP সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য (Trinankur Bhattacharya) এই নামটা উঠে এসেছে শিরোনামে। নেপথ্যে একাধিক কারণ। তাহলে কি এবার বড় বদল আসতে চলেছে ছাত্র পরিষদের ক্ষেত্রে? একেবারেই ফেলে দেওয়ার মতো প্রশ্ন কিন্তু নয়।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুরকে নিয়ে বর্তমানে চর্চার শেষ নেই। সম্প্রতি “কার আশীর্বাদ এর মাথায় আছে যে এখনও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি থাকে”, ঠিক এই বাক্যেই তৃণাঙ্কুরকে বিঁধেছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজি করের সাসপেন্ডেড চিকিৎসক পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াননি এই অভিযোগ তুলে তাকে তোপ দাগেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক। তৃণমূলের অন্দর থেকেই যখন প্রশ্নটা উঠেছে সেক্ষেত্রে রদবদলের সম্ভাবনাটা এড়িয়ে যাওয়া যায় কি?
যদিও পাল্টা উত্তরে তৃণাঙ্কুর বলেন, ‘সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা আছেন। আমি যদি কিছু করি, সেটা আমি বলতে চাই না। দলের নেতৃত্ব যেভাবে আমাকে বলবে, আমি সেভাবেই চলব। যে দায়িত্ব দেবে সেটা পালন করব।” তবে যে যাই বলুক না কেন, তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের মতো ছাত্র পরিষদেও তিন ভাগ দেখছে রাজনৈতিক মহল। একদিকে তৃণাঙ্কুর, একদিকে সুদীপ রাহা (Sudip Raha) অন্যদিকে কোহিনুর মজুমদার (Kohinoor Mazumdar)।
রাজনৈতিক মহলের মতে যদি সত্যিই বদল আসে তাহলে তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের সভাপতি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি তথা দলের মুখপাত্র সুদীপ রাহা। তার ক্ষেত্রে একদিকে যেমন রয়েছে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তেমন রয়েছে সংগঠনে ‘শক্ত’ হাত। তৃণমূলের অন্দরেই শোনা যায়, তরুণ মুখ সুদীপ রাহা খোদ তৃণমূল যুবরাজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনেক বেশি কাছের মানুষ। এদিকে দ্বিতীয়ত যে নাম চর্চায় রয়েছে তা হল তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি তথা আরেক মুখপাত্র কোহিনুর মজুমদার। তৃণাঙ্কুরের মতো তৃণমূলের যুবদের মধ্যে এই দুই তরুণ নেতারও জনপ্রিয়তা কম নয়।
আরও পড়ুন: আরজি কর মামলায় চাঞ্চল্যকর মোড়! এবার এই পুলিশ আধিকারিককে তলব করল CBI! তোলপাড়
অন্যদিকে বিগত কিছু সময় থেকে দেখা গিয়েছে একাধিক ইস্যুর কারণে কিছুটা ‘ব্যাকফুটে’ তৃণাঙ্কুর। সে আর জি কর নিয়ে হোক, কিংবা ছাত্র পরিষদের নেত্রী রাজন্যা হালদারদের ছবি নিয়ে। আর জি কর ‘আন্দোলনের’ সময় ছাত্র সংগঠনের ‘খামতি-নিষ্ক্রিয়তার’ বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন দলের নেতা কুণাল ঘোষও। তাহলে কি এসবের জেরে এবার পদ যেতে চলেছে ‘হেভিওয়েট’ ছাত্রনেতা তৃণাঙ্কুরের? তার বদলে সভাপতি পদে পরবর্তী মুখ হিসেবে উঠে আসছে সুদীপ রাহা? জোড়ালো সম্ভাবনা কিন্তু তেমনটাই।