প্রতিদিন মুখ বদলে যায় দেবী মায়ের! বাড়ির দূর্গাপুজো নিয়ে অবিশ্বাস‍্য ঘটনা শেয়ার করলেন সুদীপা

Published On:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: ঘূর্ণাবর্তের ভ্রুকুটি, আকাশের মুখ ভার। এর মাঝেই একটা সান্ত্বনা, পুজো আসছে, মা আসছেন। টলিপাড়ার যেসব তারকাদের বাড়ির পুজোর জাঁকজমক জনপ্রিয়, তাদের মধ‍্যে সুদীপা চট্টোপাধ‍্যায় (sudipa chatterjee) ও অগ্নিদেব চট্টোপাধ‍্যায় অন‍্যতম। প্রতি বছর দেবী দূর্গার পুজোয় মেতে ওঠেন চট্টোপাধ‍্যায় বাড়ির সকলে। ভিড় জমান ইন্ডাস্ট্রির তারকারাও।

করোনা আবহের মধ‍্যেই গত বছর পুজো হয়েছে সুদীপার বাড়িতে। এবারেও তেমনি ব‍্যবস্থা। তবে করোনার জন‍্য এক নতুন নিয়ম চালু হয়েছে চট্টোপাধ‍্যায় বাড়িতে। নবপত্রিকার গঙ্গাস্নানের পরিবর্তে গঙ্গাজল ঘড়ায় নিয়ে এসে বাড়িতেই স্নান। এ বাড়ির পুজোর জাঁকজমক, রীতিনীতি দেখার মতো। সুদীপাও জানালেন তেমনটাই।


আনন্দবাজার অনলাইনের হয়ে কলম ধরে সঞ্চালিকা জানালেন, বৈষ্ণব, শৈব এবং তন্ত্র এই তিন মতে পুজো হয় তাঁদের। সাবর্ণ রায়চৌধুরীরা ছাড়া এই ত্রিধারা রীতির পালক নাকি একমাত্র এই চট্টোপাধ‍্যায় পরিবারই। সুদীপাদের বাড়িতে মা দূর্গা আসেন ফলহারিণী রূপে। ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত ফলের তৈরি মালা পরে থাকেন মা। পুজোর শেষ দিনে বিদায়ের আগে মালা থেকে ফল খুলে ছুঁড়ে দেওয়া হয় হরির লুটের মতো। যে যতগুলি ফল লুফতে পারবেন তার তত কর্মফল দূর হবে, তাই ফলহারিণী।

নিয়মের কড়াকড়ি থাকলেও মায়ের রূপ দেখে মন জুড়িয়ে যায়। সুদীপা জানান, সপ্তমীতে রজনীগন্ধার মালা দেওয়া হয় দেবীকে। অষ্টমীর সকালে মা পরেন টাটকা লাল গোলাপের মালা। সন্ধিপুজোর সময় জুঁই, বেলপাতা আর অপরাজিতার মালা পরেন মা। আর নবমীতে তিনি সাজেন শিউলি ফুলের মালায়।


তবে দশমীর দিন সমস্ত গয়না খুলে শুধুই ফুলের সাজে সাজানো হয় দেবীকে। মায়ের গয়নাও রকমারি! সুদীপার কথায়, ‘মায়ের নাকে আছে বাংলাদেশের কমল হিরে। এ ছাড়া, বুক জুড়ে থাকে রুপোর অহেন বর্ম। আমাদের মা যুদ্ধের সাজে থাকেন বলে এই বিশেষ অলঙ্কারে সাজেন তিনি। মাথা থেকে পা পর্যন্ত সীতাহার আছে। আছে ভিক্টোরীয় আমলে তৈরি জড়োয়ার ময়ূর কণ্ঠহার। পাশাপাশি, সবাই প্রতি বছর কিছু না কিছু অলঙ্কার মাকে উপহার হিসেবে দেন। দেবীর বাহন সিংহও সোনার মুকুটে সাজে! আর মায়ের হাতে কালসর্প, ঢাল থাকে না। বদলে থাকে রুপোর পদ্ম।’

https://www.instagram.com/p/CMJc8_Kh3qU/?utm_medium=copy_link

এ তো গেল মায়ের সাজসজ্জা, পুজোর রীতিনিয়মের কথা। পুজোর ভোগের গপ্পোও শুনিয়েছেন সুদীপা। ঢাকা থেকে চিনিগুড়া চাল আর গাওয়া ঘি আসে পুজোর জন‍্য। ষষ্ঠী বা সপ্তমীতে গোবিন্দভোগ চাল দিয়ে হয় ভোগ রান্না। অষ্টমীতে মাকে দেওয়া হয় চিনিগুড়া চালের অন্ন।

নবমীতে ভোগ তৈরি হয় তুলাইপাঞ্জি চাল দিয়ে। আর দশমীতে দেবী পান্তা খান দশকাঠি সেদ্ধ চাল দিয়ে। সঙ্গে ইলিশ মাছ ভাজা, কচুর শাক এবং শাপলার টক। নবমীতে থাকে মহাভোগ। সাত আট রকমের মাছ, নিরামিষ মাংস, সুক্তো ও পায়েস থাকে ভোগে। অষ্টমীর ভোগের থালায় থাকে লুচি, মিষ্টি। নবমী ও দশমীতে ইলিশ মাছ খাওয়ানো হয় দেবীকে। সুদীপা জানান, বাড়ির ছেলেমেয়েরাই মুখে কাপড় বেঁধে দূর্গানাম জপতে জপতে সমস্ত রান্নাবান্না করেন।

https://www.instagram.com/p/CGnnAwEh80k/?utm_medium=copy_link

প্রতি পুজোর সঙ্গেই জড়িয়ে থাকে সংষ্কার, বিশ্বাস। এ বিষয়ে দারুন কিছু তথ‍্য জানান সুদীপা। তাঁদের দেবী মায়ের মুখ নাকি প্রতিদিন পরিবর্তন হতে থাকে। এক মুখ পরের দিন আর থাকে না। প্রতিবার মায়ের বিদায়ের সময় হাঁটু মুড়ে বসে পরের বারের জন‍্য মাকে আমন্ত্রণ জানান অগ্নিদেব। কিন্তু একবারে কোনো কারণে ভুলে গিয়েছিলেন। সেবারে নাকি দেবীকে আসন থেকে নড়ানোই যায়নি!

সম্পর্কিত খবর

X