বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক সময়ে স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে শুরু করে প্রাথমিক টেটের মতো শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় সরগরম হয়ে রয়েছে রাজনীতি আর এবার নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো সারদা মামলা। গত শুক্রবারের পাশাপাশি এদিন পুনরায় সুদীপ্ত সেন দাবি করলেন যে, আর্থিক প্রতারণার মামলায় শুভেন্দু অধিকারী তাঁর থেকে বহু টাকা নিয়েছেন। এমনকি ব্ল্যাক মেইল করার পাশাপাশি এদিন টাকার অঙ্ক প্রসঙ্গে খোলসা করে বলেন সুদীপ্ত সেন। শুধু তাই নয়, এদিন শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকজন বড় বড় নেতার নাম উল্লেখ করেন তিনি, যা নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার আদালতে যাওয়ার পথে সারদা কর্ণধার সুদীপ্ত সেন বলেন “আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে অনেক টাকা নিয়েছে শুভেন্দু অধিকারী। বহু টাকা নিয়েছে ও।” টাকার পরিমাণ জিজ্ঞাসা করা হলে সুদীপ্তর সাফ জবাব, “যা বলার আমি আদালতকে বলেছি।”
তবে এদিন টাকার অঙ্ক সম্পর্কে প্রকাশ্যে জানালেন সুদীপ্ত সেন। ব্ল্যাকমেইলের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “কাঁথিতে একটি বহুতল নির্মাণ করার কথা ছিল আর সেই কারণে সেখানকার পুরসভায় আমি 50 লক্ষ টাকা জমা দিয়েছিলাম। শুধু তাই নয়, এরপরে আরো 90 লক্ষ টাকা ডিপোজিট করি। তবে কন্টাই সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে এই বিশাল পরিমাণ অর্থ জমা করা হলেও পরবর্তীকালে প্ল্যানটি বাতিল করে দেওয়া হয়।” অর্থাৎ সুদীপ্ত সেনের দাবি অনুযায়ী, তাঁর থেকে এক কোটির বেশি পরিমাণ অর্থ নেন শুভেন্দু অধিকারী।
তবে এদিন সারদা কর্ণধারের অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে কেবলমাত্র বিজেপি নেতাই ছিলেন না, এছাড়াও এদিন তিনি বেশ কয়েকজন নেতার নাম নেন। তিনি বলেন, “সিবিআইকে আমি প্রথমে যে চিঠিটি দিয়েছিলাম, সেখানে অনেক জনের নাম লেখা ছিল। সেখানে শুধুমাত্র শুভেন্দু অধিকারী নন বরং মুকুল রায় এবং অধীর চৌধুরীর নামও আমি জানাই।”
ফলে সুদীপ্ত সেনের এই মন্তব্যের পর বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “এটা পুরোপুরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনা। আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই বলে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। সুদীপ্ত সেনের মন্তব্যকে আমি গুরুত্ব দিতে চাই না।” সম্প্রতি সুদীপ্ত সেনের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন করে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এক্ষেত্রে রাজ্যপালের কাছে যাওয়ার পাশাপাশি একাধিক স্থানে প্রতিবাদ করতেও দেখা যায় তৃণমূল নেতাদের। এর মাঝে বর্তমানে তৃণমূল দলের সদস্য মুকুল রায়ের নামও উঠে এসেছে সুদীপ্ত সেনের গলায়। এ প্রসঙ্গে অবশ্য শাসকদলের কোন মতামত মেলেনি।