‘অভিষেক এসেছিলেন…’, ‘ওকে বলবো দোষ স্বীকার করে চলে আয়, ডাল ভাত খা’, কাকুকে অনুরোধ তার দাদার

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত এক বছর ধরে বাংলায় দাঁড়িয়ে সর্বাধিক চর্চিত নামের মধ্যে একটি হল ‘কালীঘাটের কাকু’ (Kalighater kaku)। ২০২৩ সালে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) ইডির হাতে গ্রেফতার হন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujay Krishna Bhadra)। বর্তমানে নিজের ‘মূল্যবান’ কণ্ঠস্বর নিয়ে তিনি সংবাদ শিরোনামে। ওদিকে সুজয়কৃষ্ণর নিজের দাদার দিন কাটে ডাল ভাত খেয়ে। যেখানে সুজয়কৃষ্ণের নামে একাধিক ফ্ল্যাটের হদিস সামনে আনছেন গোয়েন্দারা, সেখানে তার দাদা অজয় কৃষ্ণ ভদ্রের (Ajay Krishna Bhadra) ঠিকানা পর্ণশ্রী থানা এলাকায় এক চিলতে বাড়ি, দশ বাই দশ কামরার ফ্ল্যাট। ছেলে বউমা নিয়ে তার শান্তির সংসার। অভাব থাকলেও দিব্যি কেটে যাচ্ছে দিন। বৃহস্পতিবার নিজের ভাইকে উদ্দেশ্য করে তিনি বললেন, ” আমি ভাইকে বলি, যা দোষ করেছিস স্বীকার করে চলে আয়। ডাল-ভাত, নুন-ভাত খা, শান্তিতে থাক। সাধারণভাবে বেঁচে থাক।”

গ্রেফতারির পর বহু সময় থেকেই সুজয়কৃষ্ণ ওরফে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছিল ইডি (ED)। দীর্ঘ ৪ মাসেরও বেশি সময় পর বুধবার রাতে নাটকীয় ভাবে সেই কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের কাজ শেষ হয়। বুধবার ইডি বিরাট জয় পেলেও কালীঘাটের কাকুকে দেখে কার্যত বিধ্বস্ত মনে হচ্ছিল। খুব অস্বাভাবিক না হলেও শরীরে অসুস্থতা রয়েছে কাকুর। রোজ খেতে হয় ৮ রকমের ওষুধ।

বুধবার কণ্ঠস্বরের নমুনা দিতে নিয়ে যাওয়ার সময় স্ট্রেচারে কিছুটা ঝুঁকে বসে থাকতে দেখা যায় কালীঘাটের কাকুকে। গায়ে জড়ানো ছিল চাদর। দেখে মনে হচ্ছিল ওজনও বেশ খানিকটা কমেছে আগের তুলনায়। নিজের ভাইকে ওই চেহারায় দেখে কার্যত ভেঙে পড়েছেন দাদা অজয়কৃষ্ণ।

বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের সামনে ভাইকে নিয়ে অনেক কথাই বলেন অজয়কৃষ্ণ। স্পষ্টই বলেন, “ওর সঙ্গে আমার মানসিক দূরত্ব আছে। আমি বাজে কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার লোক নই। ও রাজনীতি করে।” তবে ভাইয়ের শরীর নিয়ে তিনি উদ্বেগে রয়েছেন সেই বিষয় বারংবার তার কথায় উঠে আসে।

অজয়কৃষ্ণ বলেন, “আমার খারাপ লাগে এই রকম কাজে জেলে আছে ভাই। এখন ওর কোম্পানির নাম শুনছি। খুব কষ্ট হয় ভাইয়ের জন্য।” দাদার কথায়, “ভাইয়ের সই করারই ক্ষমতা নেই। কিন্তু এখন শুনছি ওই নাকি সবকিছুর মাথা।” তবে খানিক অভিমানের সুরে অজয়বাবু বলেন, “আমার রোজগার নেই, ভাই কোনদিন সাহায্য করেনি।”

sujay ajay krishna

আরও পড়ুন: শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার বিপুল পরিমাণ টাকা! রেশন মামলায় ED-র হাতে গ্রেফতার তৃণমূলের শঙ্কর আঢ্য

অজয়কৃষ্ণ জানান, পর্ণশ্রীর যে ফ্ল্যাটে তিনি থাকেন সেখানে ভাই সুজয়কৃষ্ণেরও দুটো ফ্ল্যাট ছিল। পরে একটু দূরে বাড়ি করে অন্যত্র চলে যান। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও নাকি সেই ফ্ল্যাটে একবার গিয়েছিলেন। এই বিষয়ে অজয়কৃষ্ণ বলেন, “অভিষেক একবারই এসেছিলেন। ও আমার পরিচয় দিয়েছিল। আমি অভিষেককে নমস্কার করি। ব্যস এটুকুই।” তবে তার একটাই কথা, “আমার ভাই যদি শেষ পর্যন্ত দুর্নীতিতে যুক্ত বলে প্রমাণিত হয়. তাহলে খুব কষ্ট পাব।”

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর