বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রায় ১২ বছর ধরে হকি বেঙ্গলের সভাপতি পদে আসীন ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। ময়দানে তিনি বাবুন নামেই অধিক পরিচিত। এবার সেই বাবুনকেই হকি বেঙ্গলের (Hockey Bengal) সভাপতি পদ থেকে সরানো হল। শনিবার রাজ্য হকি সংস্থার নয়া সভাপতি হিসেবে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
বাবুনকে সরানো নিয়ে নয়া ‘জটিলতা’ (Hockey Bengal)!
২০১২ সালে বেঙ্গল হকি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পদে বসানো হয় বাবুনকে (Babun Banerjee)। এরপর দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে প্রায় ১২ বছর। পরিবর্তিত হয়েছে সংস্থার নাম। বেঙ্গল হকি অ্যাসোসিয়েশন এখন হকি বেঙ্গল। মমতা সহোদরের ঘনিষ্ঠ মহল জানাচ্ছে, এই সময়কালে নিজের উদ্যোগে দু’টি অ্যাস্ট্রো টার্ফ তৈরি করেছিলেন বাবুন। সল্টলেকে একটি অ্যাস্ট্রো টার্ফ স্টেডিয়াম তৈরির কাজ শেষের পথে। আরেকটি আবার তৈরি হচ্ছে ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের পাশে।
প্রথমটি তৈরির ক্ষেত্রে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে কথা বলে কাজ শুরু করেছিলেন বাবুন। দ্বিতীয়টি তৈরি হচ্ছে হিডকোর জমিতে। সেক্ষেত্রে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং হিডকোর তৎকালীন চেয়ারম্যান দেবাশিস সেনের সঙ্গে কথা বলে কাজ শুরু করেন। সভাপতি পদে থাকাকালীন হকির বিকাশে এত কাজ করা একজন সভাপতিকে সরানো নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে চর্চা। কেন তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়? দেখা দিয়েছে সেই প্রশ্ন।
আরও পড়ুনঃ জয়নগরে নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন! ময়নাতদন্ত নিয়ে জোর টানাপড়েন! জল গড়াল হাইকোর্টে
এই প্রসঙ্গে হকি বেঙ্গলের (Hockey Bengal) একটি সূত্র জানাচ্ছে, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সভাপতি পদে আসীন ছিলেন বাবুন। তাই এবার তাঁকে ‘কুলিং অফ পিরিয়ডে’ যেতে হতো। সেই নিয়ম অনুযায়ী এবার তাঁকে কমিটিতেও রাখা হয়নি। যদিও বাবুন ঘনিষ্ঠদের গলায় শোনা যাচ্ছে ‘অন্য সুর’! তাঁদের দাবি, ভারতের হকি ফেডারেশনে এই রকম কোনও নিয়মের উল্লেখ নেই।
বাবুন ঘনিষ্ঠ একজন বলেন, ‘যাদের হাত ধরে এনে হকি বেঙ্গলে বড় পদে বসিয়েছিলেন বাবুনদা, তাঁরাই দাদার পিঠে ছুরি বসিয়েছেন। দাদা যাদের অন্ধের মতো বিশ্বাস করতেন, তাঁরাই এই কুলিং অফ পিরিয়ডে যাওয়ার কথা দাদাকে বুঝিয়েছিলেন। সেকথা যাচাই না করেই গত মাসের মাঝামাঝি হকি বেঙ্গল থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। এখানে আমাদের ভুল হয়েছে। তবে নতুন কমিটি তৈরির পর যখন দেখা যায় বাবুনদা সহ জেলার নানান প্রান্তে থাকা তাঁর অনুগামীদের বেছে বেছে বাদ দেওয়া হয়েছে, তখন সবটা আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়’।
বাবুন ঘনিষ্ঠদের কথায়, যারা তাঁকে ‘ভুল’ বুঝিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি করে হকি বেঙ্গলের (Hockey Bengal) কমিটিতে রয়েছেন। যা আদতে নিয়ম বহির্ভূত। ‘এবার তাঁদের মুখোশ খোলার সময় এসে গিয়েছে’, বলেন বাবুন ঘনিষ্ঠরা। এদিকে যাকে সরানো নিয়ে এত বিতর্ক, তিনি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইছেন না।
জানা যাচ্ছে, যেভাবে তাঁকে এবং তাঁর অনুগামীদের হকি বেঙ্গলের (Hockey Bengal) কমিটি থেকে সরানো হয়েছে তাতে বাবুন ‘মর্মাহত’। সুজিত (Sujit Bose) নতুন সভাপতি হবেন এটাও নাকি তিনি জানতেন না। গত মাসের শেষের দিকে সুজিত নিজে ফোন করে তাঁকে একথা জানান। বর্তমানে যাবতীয় বিতর্ক থেকে দূরে থাকতে চান মুখ্যমন্ত্রীর ছোট ভাই। তাঁর অবস্থানের কারণে দল কিংবা সরকার কেউ অস্বস্তিতে পড়ুক, সেটা একেবারেই চান না তিনি।