বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন বাংলায় কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে BJP। অর্ধেকের বেশি আসনে পদ্ম ফোটানোর ডাক শোনা গেলেও রেজাল্ট বেরনোর পর দেখা যায় মাত্র ১২টি আসনেই জিতেছে গেরুয়া শিবির। এরপর এই ‘ব্যর্থতা’র কারণ হিসেবে উঠে আসে একাধিক কারণ। এবার এই নিয়ে বড় মন্তব্য করলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)।
BJP সূত্রে জানা যাচ্ছে, সোমবার সল্টলেকের দলীয় কার্যালয়ে ‘রুদ্ধদ্বার’ বৈঠক হয়েছে। সেখানে রাজ্য এবং জেলার নেতাদের উদ্দেশে সুকান্ত বলেন, ‘ED, CBI-এর ওপর ভরসা করে চলবে না। সব জিনিসে দিল্লির মুখাপেক্ষা থাকবেন না। আত্মনির্ভর হতে হবে। বুথকে শক্তিশালী করার প্রয়োজন আছে। তাহলেই তৃণমূল কংগ্রেসের মোকাবিলা করা সম্ভব’।
এদিকে বিরোধীদের তরফ থেকে বহু আগেই রাজনৈতিকভাবে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহারের অভিযোগ তোলা হয়েছে। এবার দলের ‘রুদ্ধদ্বার’ বৈঠকেও ED, CBI-এর ওপর নির্ভরতার বিষয়টি স্বীকার করে নেন BJP-র রাজ্য সভাপতি।
আরও পড়ুনঃ ‘দায় স্বীকার করুন’! NEET মামলায় কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের, বিরাট পদক্ষেপ আদালতের!
গেরুয়া শিবিরের আদি একাংশের মতে, সুকান্ত একেবারে সঠিক কথা বলেছেন। কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে TMC-র কে গ্রেফতার হবে এই দিয়ে দলের সংগঠন বৃদ্ধি পাবে না। এছাড়া কথায় কথায় যেভাবে বিরোধী দলনেতা ED, CBI-কে হাতিয়ার করছেন, সেই বিষয়টিকেও অনেকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না বলে ময়। এর ফলেও দলের আদতে ক্ষতি হচ্ছে বলে মত BJP-র পুরনো নেতাদের একাংশের।
গতকাল সল্টলেকে যে দলীয় বৈঠক হয়েছে, সেখানে ছিলেন না রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। তবে হাজির ছিলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী, সতীশ ধন্দ, জোন এবং জেলা ইনচার্জ, রাজ্য পদাধিকারী ও বিভিন্ন মোর্চার সভাপতিরা।
জানা যাচ্ছে, বাংলায় গেরুয়া শিবিরের ধরাশায়ী হয়ে যাওয়ার কারণ পর্যালোচনা করতে গিয়ে উঠে আসে বুথের খারাপ দশার বিষয়টি। একাধিক নেতা জানান, অনেক বুথে সংগঠনের কোনও অস্তিত্ব ছিল না। এমনকি সাংসদ জগন্নাথ সরকার দাবি করেন, রানাঘাটে নাকি দলের সংগঠনই তাঁর বিরুদ্ধে কাজ করেছে। BJP-র মহিলা নেত্রীর আবার অভিযোগ, সংসদে মহিলাদের জন্য ৩৩% আসন সংরক্ষণের কথা বলা হলেও বঙ্গ BJP মহিলাদের ভোটে দাঁড় করানোর বিষয়ে নাকি বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় না। এমনই নানান বিষয় উঠে আসেন বলে খবর।
তবে গতকালের বৈঠকে এবারের লোকসভা নির্বাচনের ইতিবাচক দিকও ব্যাখ্যা করেন সুকান্ত। তিনি বলেন, ২০৫টি বিধানসভায় ৪০% ভোট এসেছে BJP-র ঝুলিতে। ৯০টি বিধানসভায় জয়ী হয়েছে। ভোট ১% বেড়েছে। তবে এসবের পরেও দলের একটি অংশের প্রশ্ন, আসন সংখ্যা হ্রাস পাওয়া, কারোর পছন্দের প্রার্থী করা, এসব নিয়ে রাজ্য নেতৃত্ব কেন কিছু বলছে না?