বাংলাহান্ট ডেস্ক : একের পর এক বিস্ফোরক সব দুর্নীতির খবর উঠে আসছে প্রতিমুহূর্তে। কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি, রাইস মিল, বি.এড কলেজ, বেসরকারি কোম্পানির পর এবার নতুন এক দুর্নীতির খবর ফাঁস হল অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের নামে। মঙ্গলবার-ই জানা যায়, ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার এক বছরের মধ্যে, ২০১২ সালেই কোনো এক ‘জাদু কাঠির ছোঁয়ায়’ বোলপুরের বাড়ির কাছের কালিকাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (Kalikapur Primary School) শিক্ষিকা (Teacher) হিসেবে যোগ দেন অনুব্রত-কন্যা (Daughter of Anubrata Mandal) সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mandal)। কিন্তু, কেষ্টর মেয়ে যখন তখন আর কষ্ট করে স্কুলে যাবেন কেন! বাড়িতেই পৌঁছে যেত হাজিরার খাতা। মাস গেলে ব্যাঙ্কে ঢুকে যেত মাইনে।
বীরভূমের ‘বেতাজ বাদশা’ অনুব্রত মণ্ডলের এক মাত্র মেয়ে তিনি। খুব প্রয়োজন ছাড়া সুকন্যা মণ্ডল স্কুলের চৌকাঠও মারাতেন না। একথা জানান এলাকাবাসীরাই। উল্টে নিয়ম করে হাজিরা খাতা পৌঁছে যেত অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতেই! জানা যাচ্ছে, অনুব্রত মেয়ে নাকি বাবার রাইস মিলের ব্যবসার দেখাশোনা করতেন। নিয়োগ দুর্নীতিতে যখন টালমাটাল রাজ্য, তখন বেগতিক দেখে রটিয়ে দেওয়া হয়, সুকন্যা মণ্ডল চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন! যদিও তা অস্বীকার করেন বীরভূম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক।
২০১২ থেকে ২০২২, বিগত দশ বছর ধরে স্কুলে না গিয়েই বেতন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সুকন্যা’র বিরুদ্ধে! বাবা’র গ্রেফতার হওয়ার পর তাই বুদ্ধি করে আরও একবার নিজের চাকরি থেকে ইস্তফার খবর রটিয়ে দেন সুকন্যাই। যদিও ওই খবর যে সত্যি নয় তা জানান প্রলয় নায়েক। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার কাছে তেমন কোনো কাগজ আসেনি। তবে, এক-দেড় মাস আগে ছুটির আবেদন করা হয় বলে জানি!’
এলাকার প্রবীণ এক সিপিআইএম নেতা বলেন, ‘যার ভয়ে বীরভূমে বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খেত, যার বাড়িতে গিয়ে হাজিরা দিতে হতো জেলাশাসক-পুলিশ সুপারকে; তাঁর মেয়ে যে স্কুলে না গিয়েই বেতন পাবেন, তা নিয়ে আমরা অন্তত অবাক নই! যেখানে অন্যায়টাই নিয়ম, সেখানে অনুব্রতর মেয়ের স্কুলে যাওয়ার পরিবর্তে যে হাজিরা খাতা তাঁর বাড়িতেই পৌঁছে যাবে সেটাই তো স্বাভাবিক।’ ওই স্কুলের বর্তমান শিক্ষকরা যদিও সুকন্যার বিষয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলের এক শিক্ষক জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ রয়েছে, এই বিষয়ে কিছুই বলা যাবে না।