বাংলা হান্ট ডেস্ক: “জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর”, স্বামী বিবেকানন্দের এই অমোঘ বাণীর অর্থই হল, জীবেদের রক্ষার মাধ্যমেই সম্ভব ঈশ্বরের সেবা। যদিও বর্তমান সময়ে ক্রমবর্ধমান নগরায়নের জন্য বিরূপ প্রভাব পড়ছে জীববৈচিত্র্যে। এমনকি দ্রুত হারে বিলুপ্তির পথে এগোচ্ছে কিছু প্রাণী। এমতাবস্থায়, তাদের রক্ষা করতে নিজেদের নিয়োজিত করেছেন বেশ কিছু মানুষ। নিঃস্বার্থভাবে তাঁদের এই কাজ ভারসাম্য বজায় রাখছে বাস্তুতন্ত্রের।
বর্তমান প্রতিবেদনে আমরা এমন এক সাহসী যুবতীর প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যিনি মাত্র ২১ বছর বয়সেই বিরল কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছেন। মূলত, তেলেঙ্গানার মেহবুবাদায় বসবাসকারী মহম্মদ সুমা বিভিন্ন প্রাণীদের রক্ষার্থে করে চলেছেন অক্লান্ত পরিশ্রম। গত ১০ বছর ধরে তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার করেছেন একাধিক প্রাণীকে। সম্প্রতি তিনি ৪০ ফুট গভীর কুয়োয় পড়ে যাওয়া একটি শিয়ালকে উদ্ধার করেছিলেন। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত সেটি মারা যায়। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১২০ টিরও বেশি প্রাণীকে তিনি জীবনদান করেছেন।
১১ বছর বয়সেই এই মহতী কাজ শুরু করেন সুমা। এমনকি, অসুস্থ প্রাণীদের সঠিক পরিষেবার উদ্দেশ্যে তিনি বাড়িতেই একটি জায়গা তৈরি করেছেন। গরু, কুকুর, বিড়াল এবং পাখি ছাড়াও তিনি চিতাবাঘ এবং অজগরকেও রক্ষা করেছেন। এই প্রসঙ্গে সুমা জানিয়েছেন, তিনি যখনই খবর পান তখনই অসহায় প্রাণীদের বাঁচাতে ছোটেন। দিন হোক কিংবা রাত, প্রয়োজন অনুযায়ী তিনি তাঁর কাজ করে যান।
পাশাপাশি তিনি বলেন, “আমি যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি, তখন একটি আহত শূকরকে উদ্ধার করি। যখনই আমি মাঝরাতে উদ্ধারের জন্য ফোন পাই আমার বাবাও আমার সাথে ঘটনাস্থলে যান। আমি আমার মা-বাবার কাছ থেকেই এই কাজে অনুপ্রেরণা পেয়েছি।”
মাত্র ১১ বছর বয়স থেকে এই কাজ শুরু করে কয়েক বছর আগে সুমা একটি সুবিশাল পাইথন উদ্ধার করেছিলেন। পরবর্তীকালে যা বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সুমার মতে, তিনি জানেন যে তাঁর এই কাজটি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। পাশাপাশি, যেকোনো মুহূর্তেই বিপদের সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু তাও তিনি অবলা প্রাণীদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। এদিকে, সুমার এহেন সাহসী কাজের খবর সামনে আসতেই তাঁকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন সকলেই।