বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাবা সেলাইয়ের কাজ করেন। অভাবের সংসারে বহু কষ্ট করে পড়াশোনা করিয়েছিলেন ছেলেকে। এবার সেই ছেলেই দুর্দান্ত সাফল্যের নজির গড়ল। বাবাকে গর্বিত করার পাশাপাশি বাংলারও মুখ উজ্জ্বল করেছে উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার বাসিন্দা সুমন সিকদার। বাংলার যে ৬ জন তরুণ ইসরোতে (ISRO) চাকরির সুযোগ পেয়েছেন সুমন তাদের মধ্যে একজন।
জানা গিয়েছে, মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়ান স্পেস অ্যান্ড রিসার্চ অর্গানাইজেশনের তরফে (Indian Space And Research Organisation) ২০১৯ সালে টেকনিক্যাল বিভাগে কর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল। তখন ফর্ম ফিলাপ করে পরীক্ষায় বসেছিলেন সুমন। তারপর করোনা পরিস্থিতির জেরে ফল প্রকাশ থেকে শুরু করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সবটাই যেন থমকে গিয়েছিল।
তবে এবার সুমনের ঠিকানায় ইসরোর ওরফে নিয়োগপত্র এসে পৌঁছতেই খুশির বন্যা বয়ে যায়। ছেলের এই নজরকাড়া সাফল্যে ভীষণ ভাবেই উচ্ছ্বসিত শিকদার বাড়ির সকলেই। রাজ্যে চাকরির দুর্নীতির ভুরি ভুরি অভিযোগ, সেখানে মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় চাকরি পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে গোবরডাঙার সুমন।
সূত্রের খবর, আগামী ২০ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে সুমনকে কর্মক্ষেত্রে যোগদান করতে হবে। সেই কারণে সুমন আজ শ্রীহরিকোটার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দিয়েছে। একটা সময়, দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে বসে পড়াশোনা করে একাধিক পরীক্ষায় বসলেও সাফল্য যেন অধরাই ছিল সুমনের। তিনি জানিয়েছেন, করোনার সময় খুবই খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে তাঁর জীবন।
সুমন বলেন, “আমি কেন্দ্রীয় সরকারের (Central Government Job) চাকরিতেই বেশি আবেদন করেছি, কারণ আমি প্রযুক্তিগত চাকরির পরীক্ষাগুলিই দিতাম। সেই কারণে রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কোনও ভয় লাগেনি।” তিনি মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকের পর আইটিআই পাশ করেছেন বলেও জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, “ভাবিনি ইসরো কাজ করার সুযোগ পাব। শেষমেশ নির্বাচিত হয়েছি বলে খুব খুশি।”
এদিকে, সুমনের বাবার কথায়, “আনন্দে আমার চোখের জল বেরিয়ে যাচ্ছে। আমি খুব কষ্ট করে ওদের পড়াশুনো শিখিয়েছি। আমি সেলাইয়ের কাজ করি। চাকরি পাওয়ার জন্য ছেলেও খুব কষ্ট করেছে। আমার ছোটো ছেলে উচ্চমাধ্যমিক দেবে। বড় ছেলের সাফল্যে আমরা ভীষণ খুশি হয়েছি।” সুমনের বাবা শ্যামল শিকদার ছেলে সাফল্যে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।