বাংলা হান্ট ডেস্ক: জীবনে বড় কিছু হাসিল করার জন্য দেখতে হয় স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্নকে পূরণের লক্ষ্য রেখেই শুরু হয় অদম্য লড়াই। যদিও সকলের ক্ষেত্রে যে এই লড়াই সমান হয় তা নয়, বরং অনেকের কাছেই তা হয় কণ্টকাকীর্ণ। কিন্তু তাও নিজের উপর ভরসা এবং স্বপ্ন পূরণের তাগিদকে সঙ্গে নিয়ে তাঁরা তৈরি করে ফেলেন এক অনন্য উত্তরনের কাহিনি। পাশাপাশি তাঁরা উদ্বুদ্ধ করেন বাকিদেরও। ঠিক যেমন ঘটেছে সুমিত ঠাকুরের সঙ্গে।
সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে রেখেই তিনি আজ পৌঁছে গিয়েছেন তাঁর লক্ষ্যে। জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের স্কুল ভ্যান চালক বিজয় কুমার ঠাকুরের একমাত্র ছেলে সুমিতের UPSC ২০২১-এর ফলাফলে সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক হল ২৬৩। এদিকে, তাঁর এই অভাবনীয় সাফল্যে গর্বিত সুমিতের বাবা, মা এবং দিদি।
মূলত, বিস্টুপুরের রামকৃষ্ণ মিশন থেকে স্কুল পাশ করেন সুমিত। তারপর রাজেন্দ্র বিদ্যালয় থেকে ইন্টারমিডিয়েট ক্লাস করেন। পরবর্তীকালে BIT সিন্দ্রি থেকে ২০১৮ সালে কম্পিউটার সায়েন্সে B.Tech করেছিলেন তিনি। তারপর তাঁর কাছে বিভিন্ন আইটি সেক্টরে মোটা বেতনের চাকরির সুযোগ ছিল। এমনকি, ৩ টি ভালো অফারও পেয়েছিলেন তিনি। যদিও, তাঁর লক্ষ্য ছিল অন্য। সেই কারণেই সেগুলি ফিরিয়ে দেন সুমিত। বরং, তার পরিবর্তে তিনি শুরু করেন দেশের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা UPSC-র প্রস্তুতি।
জানা গিয়েছে, বর্তমানে ব্যাঙ্গালোরে থাকার কারণে তিনি সেখান থেকেই UPSC পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেন। তৃতীয় বারের প্রচেষ্টাতেই সফলতা লাভ করেন সুমিত। এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এবারের UPSC পরীক্ষায় তিনি তৃতীয়বারের জন্য বসেছিলেন। যদিও, গত বছরই তিনি ৪৩৫ র্যাঙ্ক করেছিলেন। কিন্তু, তিনি তাঁতে সন্তুষ্ট হননি। এমনকি, ২০১৯ সালে তাঁর প্রথম চেষ্টায়, তিনি UPSC পরীক্ষায় মাত্র তিন নম্বরের জন্য পাশ করতে পারেননি বলেও জানা যায়।
তবে, এবারে তিনি সফল হতে পেরেছেন। এমতাবস্থায়, পরীক্ষার প্রস্তুতির প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে, দিল্লিতে ভিড়ভাট্টার মধ্যে তিনি থাকতে পছন্দ করেননি। আর তারপরেই পরীক্ষার প্রস্তুতির কারণে সুমিত একা একাই পাড়ি দেন ব্যাঙ্গালোরের উদ্দেশ্যে। পাশাপাশি, জেনারেল স্টাডিজের জন্য কোচিং ক্লাসে যোগ দিয়েছিলেন সুমিত। কিন্তু, সেখানকার পড়ানোর পদ্ধতি তাঁর মনের মত হয়নি। এমতাবস্থায়, তিন মাস পরেই তিনি তা ছেড়ে দেন। তবে, নিজে নিজেই পরীক্ষার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে থাকেন তিনি। পাশাপাশি, একের পর এক মক টেস্টের মাধ্যমে নিজেকে ঝালিয়ে নিতে থাকেন সুমিত। আর এভাবেই মেলে বহুপ্রতিক্ষিত সেই সাফল্য।