বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: গতকাল রাতে ভারতীয় ফুটবলকে (Indian Football) কেন্দ্র করে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তার রেশ এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীরা। কাল রাতে প্লে-অফের লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছিল দক্ষিণ ভারতের দুই জনপ্রিয় ফুটবল দল কেরালা ব্লাস্টার্স (Kerala Blasters) এবং বেঙ্গালুরু এফসি (Bengaluru FC)। বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে দুই দলের মধ্যে লড়াই চলছিল সেমিফাইনালের টিকিট দখলের। এই ম্যাচেই ভারত এবং ক্লাব ফুটবলে বেঙ্গালুরু এফসির অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri) হয়ে ওঠেন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু।
কাল ম্যাচ নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্যভাবে শেষ হয়। ফলে বিজয়ী কে হবে তার ফয়সালা করতে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে অবধি। সেই অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময়ের মধ্যে ৭ মিনিট নাগাদ দূরে একটি ফ্রি-কিক পায় বেঙ্গালুরু এফসি। কেরালা ব্লাস্টার্স দল মানব প্রাচীর তোলার আগেই রেফারির অনুমতি নিয়ে সেই চুপ করে গোল করে দেন সুনীল।
এরপর মাঠে প্রবল বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়। কেরালা ব্লাস্টার্স রেফারিকে অভিযোগ জানাতে থাকে যে গোলটি অবৈধভাবে হয়েছে। কিন্তু নিয়ম বলছে যে একটি ফ্রি কিক পাওয়ার পর যদি যে প্লেয়ার কিকটি নিতে যাচ্ছেন তার মানব প্রাচীর বা রেফারির বলের দরকার না পড়ে সরাসরি শটের জন্য তাহলে তিনি রেফারির সংকেত মেনে নির্দ্বিধায় খেলা চালু করতে পারেন এবং সুনীল ঠিক সেটাই করেছেন।
যদিও কেরালা ব্লাস্টার্স ভক্তরা এই তত্ত্ব মানতে রাজি নন। অনেকেই বলছেন যে ফ্রি কিক পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে দল দ্রুত খেলা চালু করতে পারে ঠিকই কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম হওয়ার পর তখন আর শট বা পাস নিয়ে দ্রুত খেলা শুরু করা যায় না। সুনীল ছেত্রীদের ক্ষেত্রে যখন সুনীল কিকটি নেন তখন ২৫ সেকেন্ডের বেশি হয়ে গিয়েছিল রেফারি কিকটির জায়গা নির্ধারণের পর। তাই কুইক স্টার্ট রুল কাজ করার কথা নয়।
Kerala fans are worst but Sunil Chetri’s tricky goal that abides by all rule books was awesome LET’s FOOTBALL ⚽️ pic.twitter.com/DbrHBWGVYd
— Omlette (@RockySIays) March 4, 2023
ফিফার নিয়ম বলছে, যখন একটি ফ্রি কিক নেওয়া হয়, একটি প্রতিপক্ষর কোনও ফুটবলার প্রয়োজনীয় দূরত্বের চেয়ে বলের কাছাকাছি থাকে, তাহলে কিকটি পুনরায় নেওয়া হয় যদি না সুবিধাটি প্রয়োগ করা যায়। কিন্তু যদি কোনো খেলোয়াড় দ্রুত ফ্রি কিক নেয় এবং বল থেকে ১০ গজের কম দূরে থাকা কোনও প্রতিপক্ষ সেটিকে বাধা দেয়, তাহলে রেফারি খেলা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন। প্রতিপক্ষর যে ফুটবলার ইচ্ছাকৃতভাবে একটি ফ্রি কিক দ্রুত নেওয়া থেকে বাধা দেয় তাকে খেলা পুনরায় শুরু করতে বিলম্ব করার জন্য সতর্ক করা উচিত। এক্ষেত্রে এই কাজটা সুনীলের সাথে করেছিলেন কেরালার আদ্রিয়ান লুনা।
সুনীল জানিয়েছেন তিনি রেফারিকে একবার নয় দু বার জানিয়েছিলেন যে তার ১০ গজের দূরত্বে মানব প্রাচীর বা রেফারির বাঁশির প্রয়োজন নেই। তিনি দ্রুতই নেবেন কিকটি। এক্ষেত্রে দোষ হতে পারে রেফারির যিনি ব্যাপারটি ঠিকমতো সামলাতে পারেননি। সুনীল ছেত্রী এরপর কেরালার মাঠ ছেড়ে চলে যাওয়া নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য না করলেও তিনি বলেছেন যে নিজের ২২ বছরের ফুটবল জীবনে তিনি এমনটা কোনদিনও দেখেননি। তবে কেরালা ভক্তদের চোখে খলনায়ক হয়ে গিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক। ইতিমধ্যেই টুইটার থেকে শুরু করে অন্যান্য সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম জুড়ে সুনীলেন নামে চলছে বিশ্রী সমস্ত মন্তব্য।